মহেশখালী প্রতিনিধি :-
বাড়ি জুড়ে চলছে কান্নাকটি। আত্মীয় স্বজনেরাও যে আসছেন সকলেই কাঁদছেন। পুরো গ্রামে চলছে শোকের মাতম। স্বজন ও গ্রামবাসীর আহাজারিতে বাতাস হয়ে উঠেছে ভারি। প্রিয় মানুষকে হারিয়ে সবাই শোকে কাতর।
তবে দেড় বছরের আফ রাহিম জানে না তার বাবা আর পৃথিবীতে নেই।বাবা আর কোনো দিনও ফিরবে না। কখনও হাসছে আবার কখনও কারও দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকছে শিশুটি। দেখা গেছে এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্যের।
সোমবার নিহতের পরিবারে গিয়ে দেখা যায়—উপজেলার ইউনুসখালী জনতা বাজার প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে ঝুঁপড়ি ঘর তৈরী করে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছে মুহাম্মদ মকসুদ (৩৮)। পেশায় দিনমজুর । দৈনিক কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে চার মেয়ে ও স্ত্রীর ভরণপোষন করতেন। তিন কক্ষের ছোট ঝুঁপড়ি ঘরে দেখা হয় নিহতের কন্যা ও স্ত্রীর সাথে। শোকে কাতর পরিবারের কারোরই কথা বলার শক্তি নাই।
জানা যায়–গত (৮ই ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ৯ টায় সন্ত্রাসীদের চুরির আঘাতে আহত হওয়ার মকসুদ (৩৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় (১৭ই ডিসেম্বর) সন্ধা ৫.৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। নিহত মকসুদ কালারমারছড়া ইউনিয়নের ইউনুসখালী এলাকার মৃত আফলাতুন আলীর পুত্র ।
নিহতের ভাই মোস্তাক জানান— এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি আহাসান উল্লাহ পুত্র তারেক,ফারুক, আলী আজগরসহ আরও ৮/১০ জন সন্ত্রাসী মিলে বহিরাগত লোকজন এনে আমাদের বাড়ির উঠানে মাদক সেবক করে অশ্লীল গালমন্দ ও নারীদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করলে প্রতিবাদ করায় আমার ভাই মুকসুদ’কে চুরি মেরে আঘাত করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। আহত ভাই কে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু করেন।
ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী জাইতুন নাহার জানান—গত (৮ ই ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টার দিকে আমি আমার বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাহিরে আওয়াজ শুনে দ্রুত বাহির হলে দেখি নিহত মকসুদ:কে আমার পার্শ্ববর্তী মমতাজ,মহুয়া, তারেক (মা,মেয়ে, পোয়া) মিলে দস্তা-দস্তি করছে। হঠাৎ এমুহূর্তে তারেক লম্বা চুরি বাহির করে মকসুদ’র পেটে ডুকিয়ে দিলে পেটের আড়ি-গুড়ি বাহির হয়ে নিহত মকসুদ পড়ে যায়। চিৎকার দিয়ে আমি দৌড়ে গিয়ে কাপড় দিয়ে চেপে ধরার চেষ্টা করি।
নিহতের বড় মেয়ে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী মাহি জানান–তারাঁ আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আমি খুনীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানাচ্ছি।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন—অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের একাধিক পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।তাদের আটকে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।