ঢাকাশনিবার , ২ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

“স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের প্রস্তুত করছে স্কাউট”

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৭:৩৬ অপরাহ্ণ

Link Copied!

——–
বাংলাদেশ স্কাউট একটি স্বেচ্ছাসেবীমূলক একটি সংগঠন। এই সংগঠনের প্রধান বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি।বাংলাদেশ স্কাউটের সদস্যদের মধ্যে প্রতিবছর ‘প্রেসিডেন্টিশিয়াল পদক’ দেয়া হয় যা খুবই গৌরব ও সম্মানের।সংশ্লিষ্টরা মনে করেন,তরুণদের বড় একটি অংশ যেখানে অনলাইন কেন্দ্রিক আসক্তিসহ নানা সামাজিক অপরাধে আসক্ত হয়ে পড়ছেন সেখানে স্কাউট আন্দোলন তাদের জন্য আর্শীবাদ হতে পারে।
এমন প্রেক্ষাপটে কথা বলেছেন বাংলাদেশ স্কাউটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্কাউটের রোভার স্কাউটের প্রধান এবং দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশ স্কাউটের ডেপুটি কমিশনার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মাহমুদুর রহমান।

তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক মোঃ জামিন মিয়া। সঙ্গে ছিলেন জুনায়েদ তনয়।

নিউজ ভিশন: বিশ্ব স্কাউট আন্দোলন শতবর্ষ পার করলো।এ পর্যন্ত স্কাউটের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে কোন গুলোকে চিহ্নিত করবেন?

মাহমুদুর রহমান:স্কাউট একটি আন্তর্জাতিক আন্দোলন হওয়ায় সারা বিশ্বেই এটি ছড়িয়ে আছে।বাংলাদেশসহ প্রায় দু শতাধিক রাষ্ট্রে এটি চালু রয়েছে।গোটা বিশ্বে স্কাউটের লক্ষ্য হচ্ছে তরুণদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। জাতিসংঘের মতো স্কাউট আন্দোলনেরও একটি শাখা আছে যার নাম হচ্ছে ওজম।মূলত ওজমকে কেন্দ্র করে বিশ্বে স্কাউট আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।এসব আন্দোলনে বিশ্বের খ্যাতনামা ব্যক্তিরাও যুক্ত হচ্ছেন।যেমন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও স্কাউটের সাথে যুক্ত ছিলেন।বর্তমানে স্কাউটিং সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।দেখুন,আজকের যারা শিশু,কিশোর, যুবক-তারাই আগামী দিনের নাগরিক হয়ে উঠবে।তাদের হাতে থাকবে দেশ। সুতরাং তাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি, সুনাগরিক হওয়ার গুণাবলি কিভাবে গড়ে উঠবে সেটিই স্কাউট আন্দোলন শিখিয়ে থাকে।তাই বলা যায়,সঠিকভাবে স্কাউটিং করা মানেই একটি টেকসই রাষ্ট্র গড়ে তোলা।আমি মনে করি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের প্রস্তুত করছে স্কাউট।বলে রাখা ভালো ইবনে খালদুনের তত্ত্ব ছিলো যেকোন রাজবংশ বা সংস্থা ১০০ বছর হয়ে গেলে তা দূর্বল হয়ে যায়।কিন্তু স্কাউটই বিশ্বের একমাত্র আন্দোলন যেটির কর্মী বেড়েই চলেছে।

নিউজ ভিশন:বাংলাদেশ স্কাউট আন্দোলনের তিনটি শাখা আছে।তরুণ তথা শিক্ষার্থীদের কেন এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়া উচিত বলে মনে করেন?

মাহমুদুর রহমান: স্কাউট যে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আছে তা নয়,এটি দেশের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত আছে।প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কাভি স্কাউট,মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বয়েজ স্কাউট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য রোভার স্কাউট।দেশকে এগিয়ে নিতে সকল স্তরের শিক্ষার্থীদের স্কাউটে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন।

নিউজ ভিশন: আপনি জানেন চলতি বছর জানুয়ারি মাসে গাজীপুরের মৌচাকে ১১তম স্কাউট জাম্বুরি বাংলাদেশ -২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্কাউট জাম্বুরির কার্যক্রম কিভাবে করা হয়?

মাহমুদুর রহমান: জাম্বুরি দু ধরনের হতে পারে।একটি এপিয়ার জাম্বুরি অন্যটি বিশ্ব জাম্বুরি।গাজীপুরে যা অনুষ্ঠিত হলো তা এপিয়ার জাম্বুরি।সম্প্রতি ২০২৩ সালে বিশ্ব জাম্বুরি হয়ে গেলো দক্ষিণ কোরিয়াতে।এপিয়ার জাম্বুরি এশিয়া স্পেসিফিক অঞ্চলের দেশগুলো নিয়ে হয়।এটি ৩২ তম ছিলো।এবার এর আয়োজক দেশ ছিলো বাংলাদেশ।মূলত লটারির মাধ্যমে দেশ বাছাই করা হয়।অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় যে রেওয়াজ সেটি স্কাউটেও চর্চা করা হয়।

নিউজ ভিশন: জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গাজীপুরের মৌচাকে অবস্থিত। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গুলো কিভাবে পরিচালিত হয়?

মাহমুদুর রহমান: আমাদের এখানে বিভিন্ন ধাপে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলে।তরুণ বা লিডারদের প্রশিক্ষণ আলাদা।লিডারদের প্রশিক্ষণ এখানে বিভিন্ন ধাপের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আছে,যারা ইয়োথ স্কাউট তাদের জন্য একধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আছে,যারা এডাল্ট লিডার তাদের জন্য এক আমাদের ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আছে। যারা ইয়োথদের প্রশিক্ষণ দেবে অর্থাৎ ট্রেইনার, তাদের প্রশিক্ষণটা কি রকম হবে? তাদের প্রশিক্ষণটা হবে তারা প্রথমে একদিনের একটা অরিয়েন্টেশন কোর্স করবে।তারপরে তারা পাঁচ দিনের একটা বেসিক কোর্স করবে। অর্থাৎ এটিকে আমরা বলি পাঁচস্তর বিশিষ্ট ট্রেনিং। তাহলে অরিয়েন্টেশন হচ্ছে, বেসিক হচ্ছে, এডভান্স হচ্ছে অর্থাৎ এইভাবে সে আস্তে আস্তে এএলটি হবে এবং শেষে তারা হবে কোর্স ফর এসিট্যান্ট লিডার ট্রেইনার। এইভাবে পাঁচটি স্তরে তারা প্রশিক্ষণটি নেবে।

নিউজ ভিশন: আশা করা হচ্ছে,২০৪১ সালের মধ্যে আমরা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ যুগে প্রবেশ করবো।বাংলাদেশ স্কাউটের এক্ষেত্রে কি কি অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে?

মাহমুদুর রহমান: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য শুরুতেই দরকার হবে স্মার্ট নাগরিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আপনি জানেন স্মার্ট বাংলাদেশের ৪টি স্তম্ভ। বলা যায় যায় স্মার্ট বাংলাদেশের পূর্বশর্তই হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। আর বাংলাদেশে স্কাউটের পরিকল্পনা,ট্রেনিং, তাদের আদর্শ এবং তারা যেভাবে নিজেদেরকে প্রস্তুত রাখে -আমার বিশ্বাস একটা স্মার্ট নাগরিকের জন্য সেটাই যথেষ্ট। এইভাবে যদি প্রত্যেকটি নাগরিক যদি স্মার্ট হয়ে যায়, সে যদি সময়ানুবর্তী হয়, তার মধ্যে যদি লিডারশিপ থাকে, তার মধ্যে যদি বাস্তব জ্ঞান থাকে, তার যদি সেক্রিফাইসের মানসিকতা থাকে এবং গোটা বিশ্বকে সে যদি নিজের কর্মক্ষেত্র মনে করে তাহলে এইরকম একটি শ্রেণি যদি আমরা তৈরি করতে পারি সেটাই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ফলপ্রদ হবে। আমাদের স্কাউটরা সেটিই করছে, সেকারণেই আমরা বলি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্কাউট মুভমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।

নিউজ ভিশন:দেশের বাইরে স্কাউটের বিভিন্ন জাম্বুরি হয় যেগুলোতে বাংলাদেশ স্কাউটের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়ে থাকেন।এটি কিভাবে করা হয়?

মাহমুদুর রহমান:বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর যে প্রোগ্রামগুলি হয় তারমধ্যে একটি ওয়ার্ল্ড জাম্বুরি হয়। সেখানে বাংলাদেশ থেকে একটি কন্টিনজেন্ট চেয়ে পাঠানো হয় যে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে।যেমন বাংলাদেশ থেকে পাঁচ থেকে ছয়শ’র একটি দল অংশগ্রহণ করেছিলো দক্ষিণ কোরিয়াতে।তার আগের বছর আরো বড় একটি দল অংশগ্রহণ করেছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে।অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রতিবছরই এই ধরনের ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামগুলোতে অংশগ্রহণ করে থাকে।যদি জাম্বুরি হয় তো সেখানে কাবরা অংশগ্রহণ করে না সেখানে শুধু স্কাউটরা অংশগ্রহণ করে।বাংলাদেশের স্কুলগুলো থেকে বাছাই করে সবচেয়ে ট্যালেন্টেড স্কাউটদের বাংলাদেশ স্কাউট নমিনেশন দিয়ে থাকে। তাদের শিক্ষক যারা তারা সেখানে একজন ভলেন্টিয়ার হিসেবে যান।অন্যদিকে যারা রোভার স্কাউট আছে অর্থাৎ স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার যারা তারা সেখানে অংশগ্রহণ করছে স্কাউট হিসেবে নয় তারা সেখানে ভলেন্টিয়ার হিসেবে অংশগ্রহণ করছে। অর্থাৎ এই যে লক্ষ লক্ষ স্কাউট সেখানে অংশ নিবে তাদের সেবা দেয়ার জন্য তাদের সকল ধরনের কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য এডাল্টদের দরকার হবে। বাংলাদেশে প্রায় ২০ লক্ষ স্কাউট আছে, সেখান থেকে যাচাই বাছাই করে যাবে মাত্র চার থেকে পাঁচশ। অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই,মূলত যারা ভিসা পায় তারাই অংশগ্রহণ করতে পারে।

নিউজ ভিশন: বাংলাদেশ স্কাউটের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই ইউনিটের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম সম্পর্কে বলবেন কি?

মাহমুদুর রহমান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা যদি বলি তাহলে,পৃথিবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেটি একটি জাতিরাষ্ট্র তৈরি করেছে।সুতরাং সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইউনিট হিসেবে রোভার স্কাউটও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। আমরা যেমন বলি যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নেতৃত্ব দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঠিক তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট যেরকম কর্মসূচি গ্রহণ করে তেমনি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেটি অনুসরণ করে কর্মসূচি গ্রহণ করে। আমরা এই ইউনিটকে মডেল ইউনিট বলি। দেশের প্রান্তীয় ইউনিটগুলোও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটকে মডেল ইউনিট হিসেবে বিবেচনা করে

নিউজ ভিশন:আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মাহমুদুর রহমান:আপনাদেরও ধন্যবাদ।

375 Views

আরও পড়ুন

গ্রীন ভয়েস রাবি’র আনন্দমুখর দিন

কক্সবাজার শহরের ৬নং ওয়ার্ড কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন

৩ শত রোগী পেলো কলাউজান ব্লাড গ্রুপের ফ্রি চিকিৎসা সেবা

জাতীয় যুব দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে শান্তিগঞ্জে র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

শান্তিগঞ্জে মৎস্য চাষে আগাম সতর্কবার্তা বিষয়ক সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত

কমলগঞ্জে মণিপুরী যুব কল্যাণ সমিতির শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

কবিতা: সুগন্ধ নয় গন্ধ

আত্মগোপনে থাকা গাজীপুরের যুবলীগ নেতা কক্সবাজারে ছাত্র প্রতিনিধিদের হাতে আটক

ইসলামপুরে জেসমিন প্রকল্পের কমিউনিটি ফ্যাসিলিটেটরদের বেসিক ওরিয়েন্টেশন 

রাজশাহীতে ডা. কাজেম হত্যায় রাষ্ট্র্রযন্ত্র জড়িত থাকার অভিযোগ

জবিতে আয়োজিত হবে সিনেমাটোগ্রাফি মাষ্টারক্লাস

শান্তিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত