{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":[],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"square_fit":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}
রফিকুল ইসলাম জসিম : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগানে দরিদ্র চা শ্রমিকদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে কুরমা চা বাগান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এখানে স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা বিনা পারিশ্রমিতে শিশুদের পড়াচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবিদুর রহমান (এম.এস.এস)। সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে আছেন লিপি আক্তার (বি.এ) ও সেলি পানিকা (এম.এস.এস)। সহকারী শিক্ষকরা হলেন আশীষ চৌহান (এইচ.এস.সি), মনোজ যাদব (বি.এ) ও প্রেম কুমার দেশওয়ারা (এইচ.এস.সি)।
বিদ্যালয়টি ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মূল লক্ষ্য হলো চা শ্রমিক ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা।
বর্তমানে এখানে ১৫৬ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের। এখানে পড়ছে চাকমা, দেববর্মা, সাঁওতাল, তেলি, হিন্দু, মুসলিম ও খ্রিস্টান পরিবারের ছেলে-মেয়ে। তারা আসে কুরমা, কুরনজি, বাঘাছড়া, কলাবন, তৈলুংছড়া, সুষমা নগরসহ আশেপাশের চা বাগান থেকে।
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে শিক্ষার্থীদের ৫–১০ কিলোমিটার দূরে ইসলামপুর পদ্মা মেমোরিয়াল বিদ্যালয়ে যেতে হতো। দরিদ্র চা শ্রমিক পরিবারগুলোর পক্ষে প্রতিদিন ৩০–৪০ টাকা ভাড়া দেওয়া সম্ভব ছিল না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা ছেড়ে দিত। কিন্তু এখন বিদ্যালয় বাড়ির কাছেই হওয়ায় শিশুরা সহজেই হেঁটে এসে পড়াশোনা করতে পারছে।
প্রধান শিক্ষক আবিদুর রহমান বলেন, আমরা চাই এই এলাকার চা শ্রমিকদের সন্তানরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হোক। তাই বিনা পারিশ্রমিতে শিশুরা যাতে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারে, তা নিশ্চিত করছি।
বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা লিপি আক্তার বলেন, আমাদের লক্ষ্য, শিশুরা যেন বিদ্যালয়ে আসতে আনন্দ পায়। আমরা শুধু পাঠ দিচ্ছি না, তাদের মানসিক সঙ্গও দিচ্ছি।
এক শিক্ষার্থীর মা জানান, স্কুলটা কাছে হওয়ায় আমরা অনেক সুবিধা পেয়েছি। আগে মেয়েকে দূরে পাঠাতে ভাড়া, টিফিন—অনেক খরচ হতো। এখন বাড়ির কাছেই স্কুল, মেয়েটা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছে। আমার ইচ্ছে আছে মেয়েকে এসএসসি পর্যন্ত পড়ানোর।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্যাররা খুব ভালোভাবে পড়ান। কখনো শাসন করেন, আবার অনেক সময় মায়া-আদরও করেন। স্কুলে এলে মনে হয় আমরা যেন নিজের বাড়িতেই আছি।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মনির উদ্দিন জানান,
বিদ্যালয়টি বর্তমানে নানা সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে। অনুমোদন না থাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন, পাঠাগার, কম্পিউটার ল্যাব গড়ে ওঠেনি। তবু শ্রমিকদের অবদান ও তরুণ স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকরা তাদের নিঃস্বার্থ অবদানের মাধ্যমে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা আশা করছেন, দানশীল ব্যক্তি ও সরকারের সহযোগিতায় শিগগিরই বিদ্যালয়টি পূর্ণাঙ্গ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রূপ নেবে। কুরমা চা বাগান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এটি একটি আন্দোলনের নাম।