———
প্রবাদ আছে কাঁদামাটি কে যে আকৃতি দিতে চাইবে তেমনই হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঠিক তেমনি কাঁদামাটির মত। তাদেরকে যেমন আকৃতি দিতে চাইবেন,তেমনি হবে আশা করা যায়।বর্তমান প্রেক্ষাপটটা আইসিটি নিভরশীল বলা চলে।আইসিটিকে বাদ দিয়ে কোন কিছু করা সম্ভব নয়। ১০/১৫ বছর আগে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান পদ্ধতি ছিল শিক্ষক কেন্দ্রিক। শিক্ষক যা বলবে, ছাত্র-ছাত্রীরা তা শ্রবন করবে এবং খাতায় লিপিবদ্ধ করবে আর বাসায় গিয়ে তা মুখস্ত করবে। কিন্তু বর্তমান তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভরশীল শিক্ষা ব্যবস্থা তা ভিন্নরুপ ধারন করেছে। আমাদের শিক্ষার নানা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের শিক্ষাকে টেকসই ও মানসম্মত পর্যায়ে পৌছে দিতে সহায়তা করছে। শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার ডিজিটাল কন্টেট এর মাধ্যমে পাঠ উপস্থাপন আমাদের প্রাথমিক শিক্ষাকে যুপোপযোগী ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে।
শ্রেণিকক্ষে শিখন শেখানোর পদ্ধতি তথ্য প্রযুক্তির সংযোগ ঘটানো হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শিশুরা খুশিমনে আনন্দে শিক্ষা গ্রহন করে। প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকার ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর সরবরাহ করেছে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক বিদ্যালয় ১/২ জন করে শিক্ষককে আইসিটির উপর ১২ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ২০১৮ সালের প্রাথমিক শিক্ষার অধিদপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী অনুমানিক জানা যায় প্রায় ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ে ৫৩ হাজার ৬৮৯টি ল্যাপটপ এবং ২২ হাজারের বেশি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে আরও ৩৬ হাজার ৭৫৬ টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং ৫১ হাজার সাউন্ড সিস্টেম বিতরণ করা হইয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেকটি পিটিআইতে অত্যাধুনিক আইসিটি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টার অ্যাক্টটিভ হোয়াইট বোর্ড বা স্মার্ট বোর্ড, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও স্পিকার প্রদান করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে প্রদান করা হয়েছে গ্রামীন ফোনের রাউটার, ইন্টারনেট সংযোগসহ নানা সুবিধা। বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে অন-লাইনে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে হোয়াইট অ্যাপের মাধ্যমে যে কোন সময় যেকোন শিক্ষককে কল দিয়ে বিদ্যালয়ের তথ্য গ্রহন করার সিস্টেম চালু হচ্ছে। কোভিট-১৯ ঢ়ধহফবসরপ এর আক্রমনে সারা বিশ্বে যখন জীবন ব্যবস্থা অচল,সেই সময় প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রনালয় প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ব্যাপক কাজ করেছে। মাঠ পর্যায়ে এক ধরনের শিক্ষকদের নিয়ে অনলাইনে ক্লাস ব্যবস্থা,টিভি/ এফএম রেডিও, মোবাইল ফোনে, ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেওয়া, পড়া দেওয়া, নেওয়া, গুগল মিটে ক্লাস নেওয়া,ঘরে বসে শিখি, স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে ক্লাস প্রচার। শিক্ষকদের জুম মিটিং এর মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনা পৌছানোর মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সচল রাখা হয়েছিল। করোনার পরবর্তীকালে ও পূর্বের নিয়ম অনুসরণ করে আইসিটি ব্যবহার নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের শিখন শিখানোর ঘাটতি দুর রকার সম্ভব হয়ে পড়েছে।
লেখক: মোঃ মহিদুল ইসলাম,সহকারী শিক্ষক,বাংলাহিলি ১ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,হাকিমপুর,দিনাজপুর