———-
সুজলা সুফলা, শস্য শ্যামলায় পরিপূর্ণ আমাদের এই বাংলাদেশ। সকল দেশের রানীও বলতে শোনা যায় দেশ প্রেমিক মানুষের মুখে। ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটারের এই দেশে ১৯০১ সালে লোক সংখ্যা ছিলো ৩ কোটি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী বর্তমান লোক সংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি। আপাতত দৃষ্টিতে এটা সমস্যা মনে হলেও, কারিগরি এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জনসংখ্যাকে শিক্ষিত করে তুলতে পারলে সেটা জনসম্পদে পরিণত করা সম্ভব।
আমরা জনবহুল দেশ। প্রাকৃতিক আবহাওয়া বা সচেতনতার অভাব যেভাবেই হোক, আমাদের জনসংখ্যা বেশি। জনসংখ্যা বেশি হওয়াটা আমরা আমাদের উন্নয়েনর পথে বাধা হিসেবে দেখি। অথচ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা জনসংখ্যা সমস্যাকে জনসম্পদে রুপান্তর করতে পারি। আমাদের মোট জনসংখ্যার ২৪ বছরের নিচে ৪৯ শতাংশ মানুষ। ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী লোকজনই আমরা প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে জনসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করে আমরা নিজেদেরকে ছাড়িয়ে যেতে পারি।
আমাদের বিভিন্ন খনিজ সম্পদ দক্ষ কারিগরের অভাবে উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। উত্তোলন করতে হলে বহির্বিশ্বের দেশগুলোর প্রকল্পের সাহায্য নিতে হয়। এমনকি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের জন্যও বিদেশী প্রকল্পগুলো আমাদের দূর্বলতার ফলস্বরূপ কোটি কোটি টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে।
জনসংখ্যার শীর্ষে জনম ধরে চীনকেই দেখি আমরা। আবার আমদানি রফতানিতেও তারাই থাকে শীর্ষস্হানে। শুধু তাদের আর আমাদের মধ্যে অভাব জনসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার না করা।
তারা তাদের জনসংখ্যাকে সমস্যা মনে না করে জনসম্পদে পরিণত করেন। ফলস্বরূপ তারাই থাকেন বিশ্বের অধিকাংশ দেশের চালিকাশক্তি হিসেবে। অর্থনৈতিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার নেপথ্য তাদের দক্ষ জনসম্পদ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জাপানের বর্তমান অবস্থায় আসতে হয়েছে কিন্তু জনসংখ্যার সঠিক ব্যাবহার করে। তারা তাদের জনসংখ্যাকে কারিগরি প্রশিক্ষণ ও বৃত্তিমূলক কাজের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলেছেন। জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে পরিণত করতে হলে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়ার বিকল্প নেই।
আমাদের দেশের সম্পদ সসীম আর অভাব অসীম। সসীম সম্পদ দিয়ে অসীম অভাব মিটানো সম্ভব না। এক্ষেত্রে আমরা আমাদের জনসংখ্যাকে কাজে লাগাতে পারি। তাদের মেধা মনন ও কর্মদক্ষতা চমকে দিতে পারে সারাবিশ্ব। তাদের সৃজনশীলতা সৃষ্টি করতে পারে এক নতুন মহাবিস্ময়।
মোঃ আঃ মুয়ামি হুজায়ফা
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়