——-
আমি একজন কৃষি ডিপ্লোমাবিদ হিসেবে কৃষিকে অর্থাৎ কৃষির গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা পুনরায় সবার মাঝে উপস্থাপন করতে চাই, তবে সেটা আমার মতো করে..
বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ।বাংলাদেশের জলবায়ু বর্তমানে চরমভাবাপন্ন।এখানে কৃষির সব ফসলই ভালো উৎপাদনের আবহাওয়া বিরাজমান।
বাংলাদেশের কৃষি ফসল উৎপাদন মৌসুম মূলত তিনটি -আউশ,আমন এবং বোরো।
এখন যে মৌসুম চলছে তা হলো আমন মৌসুম। স্হানীয় জাত থেকে সংকরায়ন করে এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বল্প সময়ে অনেক উচ্চফলনশীল জাতের উদ্ভাবন করে সেগুলো এখন কৃষকের মাঝে বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এবারো কৃষক মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের আবাদ করে বাম্পার ফলনের আশা করেছে এবং তাই হয়েছে।
তবে এসবের অবদান শুধু কৃষকের একার নয়, কৃষকদের কে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাল দিক-নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিসের আওতাভুক্ত হাজার হাজার উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের কৃষি।
এখন আমন ধানের মৌসুম চলছে।ধানের জালা বসানো থেকে শুরু করে ধান রোপন ও ধান কর্তন পর্যন্ত উপসহকারীবৃন্দ ভালো দিক নির্দেশনা দিয়ে যায়। যেমন-ধান রোপনের আগে কতটুকু জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সার কি পরিমাণ দিতে হয় এবং রোপনের পরে ধানের থোঁড় আসার আগ পর্যন্ত কয় কিস্তিতে কি পরিমাণ দিতে হয় তা তারাই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ধান রোপনের পরবর্তী পরিচর্যা গুলো হলো-ফসলের ক্ষেতে বিভিন্ন রোগ-বালাই, ক্ষতিকর পোকা-মাকড়ের উপদ্রব এড়াতে প্রয়োজনীয় কীটনাশক প্রয়োগ করতে উপসহকারীরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কৃষক উপসহকারীদের পরামর্শ মোতাবেক ফসল উৎপাদনে মনোনিবেশ করে যাচ্ছেন বলেই তারা নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকেও বেশি ফসল ঘরে তুলতে পারছেন।
এখন আমন ধান রোপনের সময়ানুযায়ী ধানে থোঁড় আসা,ধানে দুধ আসা এবং পরিপক্কতা শুরু হয়ে গেছে।
এরই মধ্যে কৃষক মাঠের নতুন ধান ঘরে তোলা শুরু করে দিয়েছে যাকে বলে নবান্ন। গ্রাম -বাংলার এক ঐতিহ্যবাহী মৌসুম এটি।শীতের শুরুতে গ্রামে চলে বিভিন্ন পিঠা উৎসব এবং ফিরনি আয়োজন। আর, এ সময়ে একে অপরের বাড়িতে আমন্ত্রণিত থাকে, কথায় বলে–
*নবান্নতে রইলো বন্ধু তোমার নিমন্ত্রণ *
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যিযে, এখন আর আগের মতো সেই আতিথিয়তা দেখা যায় না বা করা হয় না সবার কর্মব্যস্ততার কারণে। সবাই এখন শহরমুখী ব্যস্ততায় দারুণ সময় কাটাচ্ছে..
সমাপ্তি