ঢাকাসোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের অবস্থান !!

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২:২৯ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

———————

করোনা এমন একটি ভাইরাস যা দুইশরও বেশি দেশে এক আতংকের সৃষ্টি করেছে। চীনের উহান শহরে প্রথম এই করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব। যা বর্তমানে পৃথিবীতে এক ভয়ংকর মারণস্ত্রে পরিণত হয়েছে। চীন,ইতালি, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ইরান, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, দক্ষিন কোরিয়া ও স্পেনসহ অন্যান্য যে দেশগুলি অত্যাধিক শক্তিধর ও অর্থের দিক থেকে অনেক উন্নত, প্রভাবশালী ঐ দেশ গুলোকেও নড়ে চড়ে উঠতে বাধ্য করেছে। হয়তো বা তারা খাদ্য, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও অন্যান্য দিক থেকে কোন রকম সমস্যার সম্মুখীন হলেও তাদের কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হওয়া সম্ভব হতে পারে। যদিও এক-দুই বছর পর্যন্ত সব ধরনের কার্যালয় ও ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকে।

আমাদের দেশ বাংলাদেশেও করোনার থাবা পড়েছে। যেখানে প্রতিনিয়ত সমস্যার ছড়াছড়ি। যেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। যেখানে আমাদের কমপক্ষে ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার সিট বরাদ্দ থাকার কথা, সেখানে দেখা গেছে ১ হাজারেরও অধিক কম সিট রয়েছে।

করোনার কারনে এখন প্রায় অধিকাংশ কার্যালয় বন্ধ। তবে কিছু সংখ্যক যেমন, ফার্মেসী, সরকারী হসপিটাল, প্রাইভেট ক্লিনিক ও অল্প সংখ্যক মুদির দোকান ছাড়া। এ বিপদের কারণেই নেমে এসেছে অর্থনৈতিক ধ্বস বৃদ্ধি পেয়েছে প্রতিবন্ধকতা,ক্ষুধা, দ্রারিদ্র ও নানামুখী অভাবসহ বহু সমস্যা।

ছোট্ট একটি অনুজীব হলো এই করোনা ভাইরাস। যা একটি অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে , সারা বিশ্ব দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মানুষকে লকডাউন ও আইসোলোশনের মতো ব্যবস্থা নিতেও বাধ্য করেছে এই ক্ষুদ্র অনুজীবটি। মানুষের মধ্যে ব্যাপক ভয়-ভীতির সঞ্চার ঘটিয়েছে।নূন্যতম সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার এই ব্যাপার গুলো পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। যার ফলে মানুষ বাহিরে বের হতেও ভয় পায়।

কিন্তুু যাদের বের না হলেই নয়, রিক্সসা চালক -সে যদি একদিন রিক্সসা নিয়ে রাস্তায় বের না হয়, হয়তো রাতে চুলায় জ্বলবেনা কোন আগুন।অসুস্থ মেয়েটার জন্য যাবেনা বাড়িতে কোন ঔষধ। ঠিক তাদেরই আজকে রিক্সসা নিয়ে খালি রাস্তায়, জন প্রানিহীন লোকালয়ে একটা পেসেঞ্জার আসার অধিক অপেক্ষা।
তাদের পাশে দাড়ানোটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যে পড়ে।

প্রতিটি দেশের সরকারই বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা ও কার্যকরী উদ্যোগের মাধ্যমে এই সমস্যা গুলো সমাধানে কর্মসূচি বাস্তাবায়ন করে যাচ্ছে।বাংলাদেশ জনসংখ্যা বহুল দেশ হওয়ায় হাঁপিয়ে উঠেছে।
প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং বাজরে, বাজারে,লোকালয় পূর্ণ স্থানে যে রোজ রোজ ফুসকা,ঝালমুড়ি ও চটপটি বিক্রি করত। আজ এই লকডাউনের কারনে সে তা আর পারছেনা। ঘরে তার বিবাহ যোগ্য মেয়ে। তার বিয়েতে খরচ করার জন্য প্রতিদিন একটা বাবার সংসারের খরচ বাঁচিয়ে জমানো টাকা টাও আর জমাতে পারছেনা। উলটো সেই জমানো টাকা গুলি এই লকডাউনে পুরা সংসার চালাতে হচ্ছে। এই মহামারিতে সর্বএ যেন বুকফাঁটা হাহাকার বিরাজমান।

এই করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের অবস্থা আরও দিন দিন খারাপই হচ্ছে। তারা কোন ধরনের উপার্জন করতে পারছেনা। দিনমজুর যারা দিন আনে দিন খাঁয়।অন্যের বাড়ি টুকি-টাকি কাজ কিংবা রাস্তার কর্মসূচির কাজে অংশ গ্রহণ করে, তারা এই লকডাউনে তা পারছেনা।

ঘরে বৃদ্ধ অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা চলে এক দিনমজুরের পয়সায়। সর্ব প্রকারের কাজ কর্ম বন্ধ থাকায়, অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাতে পারেনি দিনমজুর ছেলেটি। মা আজ মৃত্যুর পথযাএী। আমরা সেই দিনমজুরের ঘরের খবর চাইলেই রাখতে পারি,যারা ধনবান ব্যক্তি বর্গ আছি। অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে পারি।এ ক্ষেএে খুব একটা ক্ষতি হবেনা,টাকা- ওয়ালা লোকদের।

এই লকডাউনের কারনে হাজারো শ্রমজীবী মানুষ ঘরে বন্ধী। যাদের টাকায় চলে পুরো সংসার। তাদের অবস্থান আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছ আমরা তা কল্পনাও করতে পারিনা।রাস্তায়, রাস্তায় প্রতিটা গাড়িতে, গাড়িতে, ফুটপাতে, লঞ্চে, ইস্টিমারে ও বিভিন্ন কর্মশালায় যারা ঘুরে ঘুরে চা পান বিক্রি করত,লকডাউন থাকায় এখন তারা তা আর পারছেনা। এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে তাদের পরিবারের অনেক মানুষই আজ ব্যর্থ।

এই মৃত্যুর অভিযানে চিকিৎসাবিহীন অসহায় পরিবারের অনেক মানুষ হারিয়ে গেছে।যারা আর কোন দিন ফিরবেনা এই ভুবনে। আমাদের শহরের এই মানুষ গুলা বড়ই পাষাণ। তাদের কাছে কষ্টের অহেতুক গল্প বলে কোন লাভ নেই।আরও হাসির পাত্র হতে হবে যেন তাদের কাছে।

২০২০ সাল টা যেন এক কালোময়ী থাবা। যার হাত থেকে কম সংখ্যকই বাঁচতে পারবে। এ এক নির্মম সাল। তার পরও আমাদের ভিতরে কিঞ্চিত পরিমাণ ভয়ও নেই। নেই কোন মানবতা বোধ। ভিতরে থাকা মানুষটাকে বলি দিয়ে হিংস্র হয়ে উঠতেও একটু খানি পিছপা হইনা আমরা।আমরা ভুলে যাই আমাদের জাতি সত্তাকে।আমরা ক্ষমতার গরম দেখিয়ে, স্বার্থের জন্য একে অপরের ক্ষতি করি,লড়াই করি।নিজেকে সম্রাজের অধিকারী ভাবি। অথচ শক্তি চালিত একটা অনুজীবের সাথেই পারিনা।অথচ ক্ষমতাবান আমরা।এই করোনা হয়তো আমাদের জন্য এক অভিশাপ। এক অভিশপ্ত অনুজীব। যে কিনা কোন রকম অস্র সস্র ছাড়াই আক্রমন করেছে সারা বিশ্বে সারা বিশ্বে।

টিউশনির টাকায় নিজের পড়াশুনার খরচ, পাশাপাশি ছোট ভাইয়ের পড়াশুনা ও খানিক আবদার মিটাতে হয় হাজারো তরুনের। বাসায় বাসায় গিয়ে টিউশনি করলে দুইটা টাকা বেশি পাওয়া যায়। তাই লাজ লজ্জা সব গুটিয়ে যায় মানুষের বাসায় পড়াতে। যাতে একটু ভাল থাকতে পারে। কিন্তুুু এই লকডাউনের কারনে ছাত্রের বা ছাত্রীর মা না করে দিয়েছে পড়াবে না। অপরিচিত লোক বাসায় আসা নিষেধ। হাতে যে কয়টা টিউশনি ছিল তা এখন আর নেই,সব বন্ধ। নতুন করে পাওয়াটাও দু্ঃসাধ্য ব্যাপার।

একবার চিন্তা করে দেখিনা তাদের জীবনটা এই করোনা পরিস্থিতিতে কেমন যাচ্ছে। তারা আদৌ ভাল আছে কিনা।এই করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের অবস্থান আজ কোথায়? আমরা কি তা একটা বার ভাবি? এলাকায় গিয়ে খোঁজ নেই? আমরা আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য ভুলে বসেছি বললেই চলে। আমরা এড়িয়ে চলি,দেখেও না দেখার অভিনয় করি নাট্যের মতন।

অসহায়, নিম্ন মধ্যভিত্ত লোকের এখন করার মত কোন কাজ নেই বললেই চলে।কিছু সংখ্যক হয়তো এান ও ধনীব্যক্তিদের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।কিন্তুু নিম্ন মধ্যভিও রা লজ্জায় যায়না।অথচ তাদের কোন রোজগার নেই এই মুহূর্তে।তারপরও পুরো সংসারটাই চালাতে হচ্ছে। পরিবারের প্রত্যেকটা মানুষের ইচ্ছা কম করে হলেও পূরণ করতে হচ্ছে একটা বাবার,একটা ভাইয়ের,একটা ছেলের কিংবা একটা স্বামীর।তারা এখন এই করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পড়েছে। দম ফাঁটা অবস্থা তাদের সবার।

এই সংকটময় অবস্থায়, করুণ মূহর্তে তাদের পাশে দাড়ানোর মত কেউ নেই।দাড়াতে হবে সমাজের কিছু উঁচু সংখ্যক লোকের। সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে সহযোগিতা করছে।কিন্তুু সুবিধা গুলো অসহায়, দিনমজুর, গরীবরা পাওয়ার থেকে নাকি দেশের বড় বড় নেতা কর্মী এবং অন্যান্য কালো টাকার পাহাড়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে? যা পএিকায় দেখা গেছে,চাল, তৈল ও অন্যান্য সমগ্র চুরি করা হয়েছে। আমরা এই সুষ্ঠ সমাজের মানুষ। অথচ আমাদের আচরণ হয়ে গেছে অসুস্থ রোগীর ন্যায়। না হলে কি আর ক্ষুধার্থের খাবার লোফে নেই?কোথায় কি হচ্ছে, গ্রামের অসহায় মানুষ গুলা কেমন আছে,তা ভাবার দায়িত্ব কিন্তুু সমাজের বড়দের। আমরা যেমন দাবি করি সমাজ সেবক। তেমনি করে আজ যেন অসহায়দের পাশে দাড়াই। যাতে করে সঠিক মানুষরাই সঠিক সেবা পায়। হয়তে বা গরীব অসহায়দের এতটা হয়রানি ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হত না।যদি না এই করোনা ভাইরাসের জন্য এলাকা ভিত্তিক লকডাউন না দেওয়া হত।মানুষকে ভাইরাস মুক্ত রাখার জন্যই সরকারের এই সু-ব্যবস্থা।
তার জন্যই আমরা যারা উঁচু শ্রেণীর আছি তাদের কে খেয়াল রাখতে হবে,খুঁজ নিতে হবে। গরীব,দুঃখী যারা অসহায় তার কোন অবস্থাতে আছেন। বিশেষ করে এই সংকটময় মূহর্তে।তাদের উদ্দেেশ্য একটাই কথা,বেশি না হোক একটু সহযোগীতার হাত বাড়ালেই অসহায়,দারিদ্র্য, ক্ষুধার্ত লোক কমে যাবে।

তাদের প্রতি সহনশীলাতার হাত বাড়িয়ে পাশে থাকুন।এই করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের খোঁজ রাখুন তারা কেমন আছে একটু খানি জানার চেষ্টা করুন। সমাজ ও দেশের মানুষকে আলোর দিকে নিয়ে যান।করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ান। নিজে সুস্থ থাকুন। অন্যকে সুস্থ রাখুন।
এইটাই হবে দেশের জন্য কল্যাণকর।।

——————
নাম: সুমাইয়া বিথী
প্রানিবিদ্যা বিভাগ (২য় বর্ষ)
সরকারী সা’দত কলেজ,
করটিয়া, টাংগাইল।

456 Views

আরও পড়ুন

পাঠকের অনূভুতিতে ❝কলিজার আধখান❞

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে বিএনপি সন্দেহ করছে–ড. হুমায়ুন কবির

বিশ্বরূপ চন্দ্র বিশ্বাসের কবিতা:- হাসি

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণসংবর্ধনা ও কাউন্সিল শুক্রবার

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণ সমাবেশ সফল করার লক্ষে সংবাদ সম্মেলন

আইডিইবির ৫৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আধুনগর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের র‌্যালি ও আলোচনা সভা

দোয়ারাবাজারে এফআইভিডিবি’র স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ

বোয়ালখালীর নব যোগদানকৃত শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশীদকে বরণ

জামালপুরে মৃত আইনজীবী হলেন অতিরিক্ত জিপি

তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসা, সাইনবোর্ড শাখার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

সাইফুল ইসলামের কবিতা : শীতের আমেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ইসলামি বক্তা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ