ঢাকাশনিবার , ১৬ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ
  2. বিশেষ সংবাদ
  3. সারা বাংলা

ফুলবাড়ীতে খড়ের তীব্র সংকট, সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৫ অক্টোবর ২০২০, ৫:৫৬ অপরাহ্ণ

Link Copied!

আজিজুল হক নাজমুল,(ফুলবাড়ি) কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

সেই স্কীমের কাটামারির সময় থাকি ঝড়ি আরাম্ভ হইছে।তখন থাকি আজ পর্যন্ত ঝড়ি হইতে আছে। হামরা স্কীমের ধান শুকাইতেই উতলা পোয়াল (খড়) শুকাই কোন বেলা? কায় জানে তা এমন হইবে। গরু গুলাক নিয়া তো মহা বিপদে পড়ি গেইলোং। পোয়াল এলা কেজির হিসেবে বেচি হয়! কি দিন আসিল বাহে – কথা গুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ঘোগারকুটি গ্রামের কৃষক আলী হোসেন।

দফায় দফায় টানা বর্ষণ আর দীর্ঘমেয়াদি বন্যার পর কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এতে তার মতই গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারিসহ প্রান্তিক চাষিরা। গবাদিপশুর অন্যতম প্রধান খাদ্য খড় জোগাতে হিমসিম খাচ্ছেন উপজেলার অধিকাংশ খামারি। অনেকেই খড় জোগাতে না পেরে কঁচি কলা গাছ, কচুরি পানা, বাঁশ পাতাসহ বিভিন্ন গাছের ডাল পাতা গরুকে খাওয়াচ্ছেন। কেউ কেউ গরুর খাদ্য সংকটের কারণে একেবারেই সস্তাদামে গরু বেচে দিয়েছেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের তহিদুল ইসলাম জানান, তিনি পেশায় একজন চা দোকানদার। এনজিও থেকে লোন নিয়ে লাভের আশায় তিনটি বাছুর গরু কিনেছেন। বর্তমানে খড়ের অভাবে গরু তিনটি দিনেদিনে শুকিয়ে হাড্ডিসার হয়ে গেছে। খড় কিনতে ইতিমধ্যেই অনেক টাকা দেনা হয়ে গেছে। এখন গরুর যা দাম তাতে গরু বেচে দিয়েও লোন শোধ হবে না বলেও জানান তিনি। একই গ্রামের কৃষক আমজাদ মিয়া বলেন মোর তিনটা গরু আছে খড়ের যে দাম আবার পাওয়া যায় না হামার পেটে ক্ষিদা যেমন তোমন তো গরুরও সে জন্যে কোন উপায় না পায়া কাচা ধান কাটি আনি গরুক খোবাইছি।

পূর্বধনীরাম গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী মজির আলী বলেন, মোর কোন আবাদি জমি নাই। সম্বল দুইটা বলদ গরু। তাকে দিয়া অন্যের জমি চাষ মই দিয়া যা আয় রোজগার হয় তাতে মোর সংসার চলে।সেই গরু দুইটাক সময় মত খাবার দিবার পাবার নাইগছোং না। খেড়ের যে দাম, অত টাকা মুই কোনটে পাং। নিরুপায় হয়া গরুক কলার পাতা,বাঁশের পাতা, জঙ্গল-ঝাড়, কলার গছ কাটি খোবাইছোং। বিনা খাবারে গরু দুইটার মোর মরার দশা। একই অবস্থা চন্দ্রখানা গ্রামের আমানন্দ রায়ের তিনিও অন্যের জমিতে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।গো- খাদ্যের চড়া দামে তারও কপাল জুরে চিন্তার ভাঁজ। শিমুলবাড়ী গ্রামের খুদ্র খামারি আরিফ বলেন, খড়ের অভাব পুরণ করতেই তিনি সুদুর রাজশাহী জেলার চাঁপাই থেকে খড় কিনে আনেন।বর্তমানে তার কাছ থেকে এলাকার অনেকেই খড় কিনে গরুকে খাওয়াচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারি ও প্রান্তিক কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিটি খড়ের আঁটি ১৬ থেকে ১৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে খড় বিক্রি হচ্ছে। দাম যাই হোক খড় পাওয়াটাই এখন বড় কথা। খড় সংকটের এমন পরিস্থিতি উপজেলাবাসীর কাছে নতুন এক অভিজ্ঞতা। পাশাপাশি কিছুদিন আগে চার থেকে পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ধানের কুঁড়া এখন প্রতি কেজি ১৫-১৬ টাকা বিক্রয় হচ্ছে। বাজারে অন্য যে সব গো-খাদ্য মেলে তাও চড়া মূল্যের কারণে কিনতে পারছেন না অধিকাংশ কৃষক।

বড়ভিটা গ্রামের বন্ধু খামারের স্বত্বাধিকারী বেলাল হোসেন জানান, তাঁর খামারে ৩০ টি গরু ছিল। প্রতিদিন কমপক্ষে দুইশতাধিক আঁটির প্রয়োজন হয়। চাহিদামতো গো-খাদ্যের জোগান দিতে না পেরে নাম মাত্র মূল্যে একে একে ২০টি গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি গরুগুলোকেও ঠিক মত খাবার দিতে পারছেন না।

বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও খামাড়ী খয়বর আলী মিয়া বলেন, তার খামারে ৬ টি গাভি ও ৬ টি বলদ সহ মোট ১২ গরু ছিল।খাদ্য সংকটের কারণে গাভি ৬ টি কয়েকদিন আগে বিক্রি করে দিয়েছেন। বলদগুলিও বিক্রির জন্য হাটে তুলেছেন তবে যা দাম তাতে কয়েক লক্ষাধিক টাকার লোকসান গুণতে হবে বলেন তিনি।

একই কথা জানালেন খামারি মোজাম্মেল হক, আশরাফুল আলম, বড়ভিটা ইউপি সদস্য মজিবর রহমান প্রামানিক। এ সময় গো-খাদ্য সংকটের কারণে সৃষ্ট দুরাবস্থা কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনা চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিও জানান তারা।

গো-খাদ্য সংকটের সবশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে যান সৃষ্টি টিভি ও দৈনিক তৃতীয় মাত্রা পত্রিকার ফুলবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি। এসময় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষ্ণ মোহন হালদার ঐ সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশ করতে বারবার নিষেধ করেন। এসময় তিনি কোন খামারি সংকটে পড়েছেন তা জানতে চাইলে সাংবাদিকদ্বয় খামারি ও বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান খয়বর আলীর প্রদত্ত বক্তব্য তুলে ধরেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের ঐ ব্যক্তিকে তার কার্যালয়ে হাজির করতে বলেন এবং সাংবাদিকদের নিয়ে অশালীন কথা বার্তা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি ওই দুই সাংবাদিককে তার কক্ষে আটকে রেখে উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা গৌতমকে মুটোফোনে ডেকে আনেন। দু’জনে মিলে সাংবাদিকদের সাথে অসাধাচারণ করেন এবং সংবাদ প্রকাশিত হলে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করেন এবং সাক্ষাতে কথা বলতে চেয়ে ফোন কেটে দেন।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক জাকারিয়া মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি জানান বিষয়টি দুঃখ জনক, আমি আশা করি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

71 Views

আরও পড়ুন

দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে জাতীয় ঐক্যমত্যের বিকল্প নেই–মিয়া গোলাম পরওয়ার

রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে সাঁতার প্রতিযোগিতা সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে

কাপাসিয়ায় সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

সরিষাবাড়ীতে ছাত্র ইউনিয়নের কাউন্সিলে হামলা, ডেইলি স্টারের সাংবাদিক আহত

লোহাগাড়ায় সেনা অভিযানে ২ জনের কাছে মিললো চোলাইমদ,গাঁজা, ও দেশীয় অস্ত্র

নাগরপুরে বিডি ক্লিন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পুকুর পরিষ্কার অভিযান

লোহাগাড়ায় ছাত্রদল নেতা ফজলুর নেতৃত্বে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

কক্সবাজার জেলা জামায়াতের নতুন মজলিসে শূরা ও কর্মপরিষদ গঠিত

শেরপুরের নকলা ও নালিতাবাড়ীতে পৃথক ঘটনায় দুইজন খুনঃ আটক ৪

জামায়াত বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায় ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়-মাওলানা আবদুল হালিম

“মন করিডোরে আলোর মিছিল ” মানুষের হৃদয়ের কথা বলে – মো. ইলিয়াস

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত কেমন হবে?