এস. এম. রুবেল, মহেশখালীঃ
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সুবিধা পাচ্ছেনা স্থানীয় জনগণ৷ বিশেষ করে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনে কোন ধরণের ভূমিকা নেই ইউনিয়ন পরিষদের। তাই মাতারবাড়ি পুলিশ বিট ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের দারস্থ হচ্ছেন সেবা প্রার্থীরা। এতে করে সহজ ভাবে হওয়া বিচার প্রক্রিয়া জটিলতায় পতিত হচ্ছে বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ নির্বাচিত হওয়ার পর গ্রাম আদালতের কাজ কি তা ভুলতে বসেছে মাতারবাড়ির মানুষ। অনেকেই জানেন না ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত নামে একটি বিচার করার শাখা আছে। যেখানে সহজ ভাবে বিচার দিয়ে তার সমাধান পাওয়া যায়। অথচ গ্রাম আদালতে বিচার না করায় দীর্ঘ সময় ধরে স্থানীয়রা বিচার নিয়ে বিভিন্ন হয়রাণীতে ভুগছেন।
স্থানীয়রা জানান, মাতারবাড়িতে সরকারের মেগা প্রকল্পের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখায় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ ইউপি কার্যালয়ে সময় দিতে পারেন না। বেশির ভাগ সময় মাতারবাড়ি প্রকল্প এলাকায় থাকেন তিনি। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সাথে তিনি জড়িত। তাই চেয়ারম্যান পদকে ব্যবহার করে তিনি ব্যবসা করে যাচ্ছেন। আর এর কুফল ভোগ করছে সাধারণ মানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সেবা গ্রহীতা জানান, মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে জাতীয়তা সনদ, ওয়ারিশ সনদ সহ একাধিক সনদ আগে থেকে দস্তখত করে রাখেন। পরে নিয়োগকৃত ব্যক্তি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরযুক্ত সনদ পূরণ করে সেবাগ্রহীতাদের প্রদান করেন। এই কৌশল অবলম্বন করে চেয়ারম্যান পরিষদে সময় না দিয়ে কয়লা বিদ্যুৎ নিয়ে পড়ে থাকেন বেশির ভাগ সময়।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ রশিদ বলেন- গ্রাম আদালত ঠিকমত বসেনা। তবে মাঝেমধ্যে বৃহষ্পতিবার গ্রাম আদালত বসে। গ্রাম আদালতে মাসিক কয়টি মামলা দায়ের বা নিষ্পত্তি হয় সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো জানান- মাসে মাঝেমধ্যে ২/৩ টি মামলা দায়ের হয়। কখনো কখনো পুরো মাস জুড়ে গ্রাম আদালত বসেনা। আর চেয়ারম্যানও ব্যস্ত থাকেন।
গ্রাম আদালতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অ্যাডভোকেট আতাউল্লাহ বলেন- সহজলভ্য বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের মামলা নিষ্পত্তি করতে গ্রাম আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইউনিয়ন সমূহে গ্রাম আদালত নিয়মিত সচল থাকলে গ্রামের মানুষ হয়রানী থেকে মুক্তি পাবে।
এই বিষয়ে মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, ফোন না ধরায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।