ঢাকাসোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ
  2. বিশেষ সংবাদ

করোনার ভয়াবহতা রুখতে স্বাস্থ্যসচেতনার বিকল্প নেই

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
২৪ এপ্রিল ২০২১, ৮:২৬ অপরাহ্ণ

Link Copied!

২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসে অজ্ঞাত এক রোগ নিয়ে চীনের উহান প্রদেশের এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন।সেই থেকে শুরু। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক লিও এন্ড লিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান চিকিৎসারত অন্যান্য রোগীদের মধ্যে ব্যাপক হারে নিউমোনিয়ায় প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীনের স্বাস্থ্য কমিটি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে দেখা যায়, উহানের কোনো সামুদ্রিক খাবার ও বন্য প্রাণীর বাজার এর সাথে যুক্ত। জানুয়ারির ১ তারিখ বন্ধ ঘোষণা করা হয় বাজার টি।চীনা কতৃপক্ষ জানায় নতুন এক করোনা ভাইরাস থেকে এর সংক্রমন হচ্ছে। একে দুইে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। অন্যদিকে উহানের বাইরে ব্যাপক হারে ভাইরাস টির বিস্তার ঘটতে থাকে।বুঝতে বাকি রইলো না মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হচ্ছে ভাইরাস টি। চীন সরকার সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হলো না।ততোদিনে ভাইরাস অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে আসতে থাকে স্বাস্থ্যবিধির নিয়মকানুন। শুরু হয় গণহারে মাস্ক পরিধান। চলতে থাকে নানামুখী গবেষণা। বন্ধ করে দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। ততোদিনে উন্নত দেশ গুলো পরিনত হতে থাকে মৃত্যুপুরিতে।

২০২০ সালের ৮ ই মার্চ, বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়।সাধারণ সর্দি, কাশি ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন রোগীরা।অনেকেই থাকেন হোম কোয়ারান্টাইন এ।শুরু থেকেই আক্রান্তের হার ছিলো উর্ধ্বমুখী।সরকার মহামারীর এই তান্ডব থেকে রক্ষা পেতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ ঠা এপ্রিল পর্যন্ত ১ দফায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শুরু হয় অনলাইন ক্লাস, অনলাইন হোম অফিস। এলাকাভিত্তিক কঠোর লকডাউন ও দেওয়া হয়।ভীতী আর উৎকন্ঠা নিয়ে মানুষ ভ্যাকসিনের অপেক্ষা করতে লাগলো।কিন্তু প্রতিনিয়তই করোনা আক্রমণের হার পুরোনো রেকর্ড ভেঙে নতুন করে গড়ে।দফায় দফায় বাড়তে থাকে ছুটি।দীর্ঘদিনের লকডাউন দেশের অর্থনীতি কে ফেলে সংকটের মুখে। ফলে, সরকার কে অনেকটাই বাধ্য হয়ে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত বছর পহেলা জুন সীমিত পরিসরে সকল প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হয়।এবং দীর্ঘ ১০ মাস স্বাস্থ্যবিধির উপর রাখা হয় নজরদারি। এবং করোনা ভ্যাকসিন এর আওতায় আনা হয় ১ কোটি ৫৪ লাখ মানুষ কে। কিন্তু করোনা ভয়াবহতার বিষয় টি কে অনেকেই আমলে নেন নি।যার ফলস্বরূপ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে আবার ও বাড়তে থাকে করোন সংক্রমন।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ।এবং বলেন কঠোর স্বাস্থ্যবিধি না মানলে প্রথম ঢেউ এর থেকে আরও জটিল হতে পারে ভাইরাস টির ভয়াবহতা। অনেক সময় প্রথম ঢেউ এর থেকে দ্বিতীয় ঢেউ এ ভাইরাস বেশি শক্তিশালী হয়।ফলে সরকার আবার ও ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেন।

গবেষণায় দেখা যায়, দ্বিতীয় ঢেউ এ কোনো উপসর্গ ছাড়াও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। এবং আক্রান্তের বেশির ভাগ তরুণ। বাহ্যিক দিক থেকে সুস্থ মনে হলেও সিটি স্কেন বা এক্স রে করে বোঝা যাচ্ছে ফুসফুসের ৭০-৮০ ভাগ ই করোনার দখলে।আক্রমনের ২-৩ দিনের মধ্যেই রোগীর অবস্থা জটিল হয়ে যাচ্ছে । করোনা ইউনিট গুলো তে দেখা দিচ্ছি আইসিইউ সংকট। সিলিন্ডার অক্সিজেনের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ গুন।মৃতের সংখ্যাও শতকের ঘর পেরিয়ে। বর্তমানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬লাখ ৪২ হাজার। এবং মোট মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৮৪১ জন।এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের করোনার সার্বিক পরিস্থিতি যথেষ্ট সংকটাপন্ন অবস্থানে রয়েছে। তাই চিকিৎসক, গবেষক সকলের পরামর্শ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।

প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ উওম।তাই নোভেল করোনা ভাইরাস রুখতে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। যেহেতু হাতের মাধ্যমেই ভাইরাস টি মুখে প্রবেশ তাই ঘন ঘন হাত ধোঁয়ার অভ্যাস করতে হবে। এবং ২০ সেকেন্ড ঘষে হাত পরিষ্কার করতে হবে। কথায় কথায় মুখে হাত দেওয়া, থুথু দিয়ে টাকা গোনা,ধুমপানের মতো অভ্যাস গুলো ত্যাগ করতে হবে ঠান্ডা এসির ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। শরীরে ইমিউনিটি অর্থ্যাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। নিয়ম মাফিক ঘুমাতে হবে। কেননা, অতিরিক্ত রাত জাগা ইমিউনিটি সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটায়।দৈনিক ১৫-৩০ মিনিট শারীরিক ব্যয়াম করতে হবে। মাঝে মধ্যেই রোদ পোহাতে হবে। এতে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বাড়বে।প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। এন্টি অক্সিডেন্ট (যেমন গ্রীন টি)যুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। শাক সবজি ভালো করে সেদ্ধ করে খেতে হবে। এছাড়াও ফলমূল খেতে হবে। ঋতুভিওিক ফল এবং কমলা, লেবু এক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে। ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলতে হবে। দিনে দুইবার লেবু চা পান করতে হবে। বিভিন্ন মসলা যেমন, কালোজিরা, লবঙ্গ খেতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি মানুষিক ভাবে সুস্থ থাকতে হবে। ধর্মীয় বিধান মেনে চলতে হবে।
গণজমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে।সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। সঠিক নিয়মে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। ভাইরাস নিয়ে ভীত না থেকো নিয়ম মেনে চলতে হবে। সরকারের দেওয়া নির্দেশ মেনে চলতে হবে। অন্যথায় করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশ কে আরও কঠিন সময়ের সামনে দাঁড় করাতে পারে। তাই ব্যক্তি জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। নিজে বাঁচতে হবে, এবং অন্যের বাঁচার পথ কে মসৃণ করতে হবে। সেই সাথে সরকার কে আরও কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে। এবং করোনার এই দুঃসময়ে সকল কে সকলের পাশে দাঁড়াতে হবে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে সমাজের নিম্ন শ্রেণীর কেটে খাওয়া মানুষের উপর। কেননা,লকডাউন আর বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের অবস্থা সব থেকে করুন। করোনা কে ঘিরে আর কোনো ব্যক্তিগত জনকল্যাণ বিরোধী হীন কাজ না হউক। নিজে সুস্থ থাকুন, পরিরার, সমাজ, রাষ্ট্র কে সুস্থ রাখুন। পৃথিবী দ্রুত সুস্থ হউক,বন্ধ হউক মৃত্যুর মিছিল, সচল হউক আয়ু।

লেখক
মোছাঃবন্যা আক্তার
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

302 Views

আরও পড়ুন

পাঠকের অনূভুতিতে ❝কলিজার আধখান❞

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে বিএনপি সন্দেহ করছে–ড. হুমায়ুন কবির

বিশ্বরূপ চন্দ্র বিশ্বাসের কবিতা:- হাসি

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণসংবর্ধনা ও কাউন্সিল শুক্রবার

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণ সমাবেশ সফল করার লক্ষে সংবাদ সম্মেলন

আইডিইবির ৫৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আধুনগর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের র‌্যালি ও আলোচনা সভা

দোয়ারাবাজারে এফআইভিডিবি’র স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ

বোয়ালখালীর নব যোগদানকৃত শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশীদকে বরণ

জামালপুরে মৃত আইনজীবী হলেন অতিরিক্ত জিপি

তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসা, সাইনবোর্ড শাখার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

সাইফুল ইসলামের কবিতা : শীতের আমেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ইসলামি বক্তা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ