আমি তো স্বাধীন নই
শেখ শাহরিয়ার নাফিস
রক্ত জমাট দেহ তার
ছিদ্রময় বুক!
ঝাঁঝালো হয়ে আছে শরীরটা!
পাশেই স্বজনেরা কাঁদছে,
শোনা যায় সহপাঠীদের আর্তনাদ!
শোনা যাচ্ছে লাখো জনতার আর্তনাদ!
এসব কিছু ঝাঁপিয়ে শুনতে পাচ্ছেন কি আমার খোকার আর্তনাদ??
ঐ যে দেখুন,
কেমন ছিদ্রময় প্রসারিত বুকটা নিয়ে শুয়ে আছে।
ভালো করে কান পেতে শুনেছেন কি
ঐ বুকটা থেকেও ভেসে আসছে আর্তনাদ!
বলছে “ওঠো, উঠে দাঁড়াও,হাল ছেড়ো না, তোমাদের লড়তে হবে, জিততে হবে, ওঠো”।
কি দোষ ছিলো বলুন তো ঐ দেহটার??
নিজের ন্যায্য দাবি, অধিকার চাওয়াটাই কি তার কাল হলো??
অজস্র গুলি দিয়ে তার দেহটাকে ক্ষতবিক্ষত করে ছাত্রজনতাকে দাবাতে চেয়েছিলেন?
ভেবেছিলেন তারা দমে যাবে?
যে জাতি লড়াই করে বাঁচতে জানে তাদের দমানো যায় না।
দেখেছেন তারা এ লড়াইয়ে ঠিকই জিতেছে।
ছিনিয়ে এনেছে বিজয়।
আর এই বিজয় উল্লাসের সাক্ষী আমার সাঈদের নিথর দেহটা।
তারা লড়াই করে রচনা করেছে এক নতুন ইতিহাস।
সে ইতিহাসের নাম স্বাধীনতা।
হ্যাঁ, আজ সকলে ঐ জালিম গোষ্ঠীর হাত থেকে স্বাধীন।
আজ স্বাধীন পুরো দেশ, গোটা জাতি।
চারপাশে এতো স্বাধীনতা।
তবুও
আমি তো স্বাধীন নই!
আমার হৃদয় খানি যে এখনো আমার খোকার
সেই বুক পাতা দৃশ্যের দখলে!
আমার হৃদয় খানি যে আজো
আমার খোকার আর্তনাদের দখলে!
তবুও ভালো লাগে
যখন শুনি,
আমার খোকা যে আর আমার একার খোকা নয়।
আজ বাংলার প্রতিটা স্বাধীনতা প্রিয় মায়ের খোকা আবু সাঈদ।
আজ সবার মাঝে আবু সাঈদ।
আমার সাহসী আবু সাঈদ।