অনলাইন ডেস্ক :
মধুর কার্যকারিতা সম্পর্কে আমরা সবাই বেশ ভালোভাবেই অবগত। মধু আমাদের অনেক কঠিন রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতে সহায়তা করে। প্রাচীনকাল থেকেই মধুর গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা জেনে আসছি এবং এটি ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এখনকার আধুনিক বিজ্ঞান এই মধু নিয়ে দিল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং এর গুণাগুণ সম্পর্কে দিল যথেষ্ট ধারণা।
নতুন এক গবেষণায় পাওয়া গেছে, সর্দি-কাশির চিকিৎসায় প্রচলিত বিভিন্ন ওষুধ এবং অ্যান্টিবায়োটিকের তুলনায় মধু বেশি কার্যকরী।
মধু সস্তা ও সহজলভ্য এবং এটি অতিপরিচিত একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পাওয়া যায়। এর তেমন কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় বলেন, সর্দি-কাশির চিকিৎসায় রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে মধু খাওয়ার সুপারিশ করতে পারেন চিকিৎসকরা।
আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশন (ইউআরটিআই) নাক, গলা, কণ্ঠস্বর এবং শ্বাসনালীকে যথেষ্ট প্রভাবিত করে থাকে, যার ফলে ফুসফুস সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকতে পারে। এই লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- গলাব্যথা, নাক বন্ধ ও কাশি।
শিশুদের কাশি, গলাব্যথা এবং সাধারণ সর্দির জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে মধুর কার্যকারিতা প্রমাণের গবেষণাগুলো পদ্ধতিগতভাবে এখনো পর্যালোচনা হয়নি। তবে গবেষণাগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছেন অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা। এজন্য ১৪টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন বয়সের মোট ১,৭৬১ জন অংশগ্রহণ করেছিলো।
এই গবেষণাগুলোর ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সর্দি-কাশির ঘনত্ব এবং তীব্রতা কমানোর ক্ষেত্রে মধু অনেক বেশি কার্যকর ছিল।
দুটি গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, মধু খাওয়ার ফলে প্রচলিত ওষুধের তুলনায় ২ দিন আগে সর্দি-কাশি থেকে নিরাময় হয়েছে।
বিএমজে এভিডেন্স বেজড মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এই গবেষণায় বলা হয়, আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশনে (ইউআরটিআই) প্রায়ই অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেহেতু বেশিরভাগ ইউআরটিআই ভাইরাল, তাই অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন উভয়ই অকার্যকর এবং অনুপযুক্ত।
বিজ্ঞানীদের মতে, আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশনের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে মধু প্রেসক্রাইব করতে পারেন চিকিৎসকরা।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, নিউ ইয়র্ক পোস্ট, দ্য সান