রংপুর ব্যুরো :
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সপ্তম ধাপে ভোট গ্রহণ শান্তিপুর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতীহীন ভাবে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত ১৭২টি কেন্দ্রে এক হাজার ২০৭ টি বুথ এ অনুষ্ঠিত হয়। আটজন রিটার্নিং কর্মকর্তার অধীনে ভোট গ্রহণের জন্য তিন হাজার ৭৯৩ জন কর্মকর্তা এ উপজেলায় চার লাখ ১৮ হাজার ৯৪১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ-৩, বিদ্রোহী-৫, বিএনপি-২ ও জামায়াতের ৭ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে।
নির্বাচিতরা হলেন,১ নং খোড়াগাছ ইউনিয়নে আসাদুজ্জামান (মোটর সাইকেল) আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী,২ নং রাণীপুকুর ইউনিয়নে আবু ফরহাদ পটু (স্বতন্ত্র- ঢোল আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী),৩নং পায়রাবন্দ ইউনিয়নে মাহবুবার রহমান মাহবুব (মোটর সাইকেল-জামায়াত),৪ নং ভাংনী ইউনিয়নে আব্দুল্যাহ আল মামুন (মোটর সাইকেল-জামায়াত),৫নং বালারহাট ইউনিয়নে মাওলানা আবুল হাসনাত রতন (মোটর সাইকেল-জামায়াত), ৬ নং কাফ্রিখাল ইউনিয়নে জয়নাল আবেদী মাস্টার (মোটর সাইকেল-জামায়াত), ৭ নং লতিবপুর ইউনিয়নে ইদ্রিস আলী ( আনারস- আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), ৮ নং চেংমারী ইউনিয়নে রেজাউল কবির টুটুল ( আনারস- আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), ৯নং ময়েনপুর ইউনিয়নে মোকছেদুল আলম সরকার মুকুল (চশমা- আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), ১০ বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নে মো: শাহজাহান মিয়া ( মোটর সাইকেল- জামায়াত), ১১ নং বড়বালা ইউনিয়নে তরিকুল ইসলাম সরকার স্বপন ( ঘোড়া- বিএনপি), ১২ নং মিলনপুর ইউনিয়নে আতিয়ার রহমান ( নৌকা- আ.লীগ), ১৩ নং শাল্টি গোপালপুর ইউনিয়নে হারুন অর রশিদ তালুকদার ( ঘোড়া-বিএনপি), ১৪ নং দুর্গাপুর ইউনিয়নে সাইদুর রহমান তালুকদার ( নৌকা- আ.লীগ), ১৫ নং বড় হয়রতপুর ইউনিয়নে আব্দুল মতিন ( নৌকা- আ.লীগ), ১৬ নং ইউনিয়নে মাওলানা শফিকুল ইসলাম ( মোটর সাইকেল-জামায়াত) ও ১৭ নং ইমাদপুর ইউনিয়নে শফিকুল ইসলাম ( মোটর সাইকেল-জামায়াত)।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শোয়েব সিদ্দিকী।
এদিকে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, ইউপি নির্বাচনে এই উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়নের ২২১টি পদে মোট ১ হাজার ১৯২ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন । তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৩১ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৭৭৩ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৯০ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদে খোড়াগাছে ৯ জন, পায়রাবন্দে ৬ জন, কাফ্রিখালে ৬ জন, দুর্গাপুরে ১০ জন, ময়েনপুরে ৮ জন,বালারহাটে ৬ জন, বালুয়ামাসিমপুরে ১৩ জন,মিলনপুরে ৬ জন, বড় হযরতপুরে ৯ জন, লতিবপুরে ৬ জন, ইমাদপুরে ৬ জন, রাণীপুকুরে ৭ জন, ভাংনীতে ৯ জন, চেংমারীতে ৯ জন, বড়বালায় ৭ জন, গোপালপুরে ৬ জন ও মির্জাপুরে ৮ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন।
১৭২টি কেন্দ্র ও ১ হাজার ২০৭ টি বুথ (কক্ষ) ভোট গ্রহণের জন্য ৮ জন রিটার্নিং কর্মকর্তার অধীনে ১৭২ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ২০৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ২ হাজার ৪১৪ জন পোলিং অফিসার দায়িক্ত পালন করেন । আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ও আনসার ভিডিপির সদস্য নিয়োজিত ছিল ৩ হাজার ৭৭০ জন।
এদিকে চার নং ভাংনী ইউনিয়নে হুলাশুগঞ্জ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার সমর্থন কারি শাওন ওরফে হামিদুর(২৮) ও রাকিব (৩০)কে জাল ভোট দেয়ায় আটক করেছে পুলিশ। এবারে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে কেন্দ্র গুলোতে।
রংপুরের সহকারি পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) মোঃ কামরুজ্জামান জানান, ১৭২টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১২টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ৫ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ৬০টিতে ৬ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি মোবাইল ও একটি করে স্ট্রাইকিং টিম নিয়োজিত নিয়োজিত ছিল ।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, অবাধ,সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। তিনি ভোটের পরের দিন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সব প্রার্থী, গণমাধ্যম কর্মী, রাজনৈতিক নেতাসহ সব শ্রেণির ও পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।