ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

জুমা’র দিনের গুরুত্ব ও আমল

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

সপ্তাহের সেরা দিন শুক্রবার তথা জুম্মার দিন। এটি পৃথীবির অন্যতম তাৎপর্যবহ দিবস। জুম্মা নামে পবিত্র কোরআনে একটি সূরা আছে। এইদিনে মহান আল্লাহতায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন।

হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-কে এই দিনেই জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলে দিনটাকে ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন বলা হয়।

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমরা শেষে এসেছি কিন্তু কেয়ামতের দিন সকলের আগে থাকবো। যদিও অন্য সব জাতিকে (ইহুদি ও খ্রিস্টান) গ্রন্থ দেয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে, আমাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদের পরে। অতঃপর জেনে রাখো এ দিনটি আল্লাহ আমাদের দান করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে আমাদের সঠিক পথের দিশা দিয়েছেন। আর অন্য লোকেরা এ ব্যাপারে আমাদের পেছনে আছে। ইহুদিরা জুমার পরের দিন (শনিবার) উদযাপন করে আর খ্রিস্টানেরা তার পরের দিন (রোববার) উদযাপন করে।’ (সহিহ মুসলিম : ৮৫৬)

যেভাবে এলো জুমাবার
প্রথম হিজরি সন। নবী (সা.) মক্কা ছেড়ে মদিনা গেলেন। নবী (সা.) এর মদিনায় পৌঁছার দিনটি ছিল ইয়াওমুল আরুবা (শুক্রবার)। সেদিন তিনি বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় গেলে জোহর নামাজের সময় হয়। সেখানে তিনি জোহর নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করেন। এটাই ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ।

তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর মদিনায় যাওয়ার পর একবার মদিনার আনসার সাহাবিরা আলোচনায় বসেন। তারা বললেন, ইহুদিদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট রয়েছে, যে দিনে তারা সবাই একত্রিত হয়। নাসারারাও সপ্তাহে একদিন একত্রিত হয়। সুতরাং আমাদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যে দিনে আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব, নামাজ আদায় করব। অতঃপর তারা আলোচনায় বললেন, শনিবার ইহুদিদের আর রোববার নাসারাদের জন্য নির্ধারিত। অবশেষে তারা ইয়াওমুল আরুবা শুক্রবারকে গ্রহণ করলেন (সীরাতুল মুস্তাফা ও দারসে তিরমিজি)।

জুমা নামে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল হয়েছে। জুমার নামাজের কথা সরাসরি আল্লাহর বাণীতে উল্লেখ হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমুআ, আয়াত : ১০)

এদিন এবং এদিনের আমল সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে, এককভাবে অন্য কোনো দিন বা সেদিনের নামাজ নিয়ে এত বর্ণনা আর পাওয়া যায় না। যেমন : আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার ওপর সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাঁকে জান্নাতে স্থান দেওয়া হয়েছে এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম : ১৪১০)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে প্রথম দিকে মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কুরবানি করল, দ্বিতীয় সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন একটি গরু কুরবানি করল, তৃতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ছাগল কুরবানি করল। অতপর চতুর্থ যে ব্যক্তি মসজিদে গেল সে যেন একটি মুরগি সদকা করল। আর পঞ্চম যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ডিম সদকা করল। অতঃপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যায়।’ (সহিহ বুখারি : ৮৮১)

আরেক বর্ণনায় রয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জুমার দিন যে ব্যক্তি গোসল করায়, নিজেও ফরজ গোসল করে এবং প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোন কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব।’ (মুসনাদে আহমাদ : ৬৯৫৪)

আমলের দিক থেকে আল্লাহ তায়ালা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন এর অন্যতম হলো জুমার দিন। এ দিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক আহকাম ও ঐতিহাসিক নানা ঘটনা।

জুমার দিনে হাদিসে বর্ণিত গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো..

১. গোসল করা।
২. ফজরের ফরজ নামাজে সূরা সাজদা ও সূরা দাহর/ইনসান তিলাওয়াত করা।
৩. উত্তম পোশাক পরা।
৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৫. আগেভাগে মসজিদে যাওয়া।
৬. সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা।
৭. মসজিদে গিয়ে কমপক্ষে ৪ রাকাত সুন্নত আদায় করা।
৮. ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা।
৯. মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনা। খুৎবা চলাকালে কোনো কথা না বলা।
১০. দুই খুৎবার মাঝের সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা।
১১. অন্য সময়ে দোয়া করা। কারণ এদিন দোয়া কবুল হয়।
১৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সারাদিন যথাসম্ভব বেশি দরূদ পাঠ করা।
১৪. জুমার রাত (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত) ও জুমার দিনে নবী করিম (সা.) এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠের কথা বলা হয়েছে।

এমনিতেই যে কোনো সময়ে একবার দরুদ শরিফ পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা পাঠকারীকে দশটা রহমত দান করেন এবং ফেরেশতারা তার জন্য দশবার রহমতের দোয়া করেন।

আল্লাহ তায়া’লা যেনো আমাদের কে জুমার দিনের সঠিক আমল করার দান করেন, আমিন।

171 Views

আরও পড়ুন

এপেক্স ক্লাব অব চকরিয়া সিটির এজিএম সম্পন্ন, শারমিন জন্নাত ফেন্সি প্রেসিডেন্ট ও ডাঃ ওম প্রকাশ সেক্রেটারি নির্বাচিত

শান্তিগঞ্জে অর্থনৈতিক শুমারী উপলক্ষে স্থায়ী কমিটির সভা

চকরিয়ার নবাগত ইউএনও আতিকুর রহমানের যোগদান

মহেশখালীতে কলেজ শিক্ষক মাহবুবকে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা।

ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা

কক্সবাজার পৌরসভার সাব‌মে‌রিন ক‌্যাবলে অ‌গ্নিকা‌ন্ডে ক্ষ‌তিগ্রস্ত প‌রিবা‌রের মা‌ঝে জামায়া‌তের খাবার সামগ্রী‌ বিতরণ

নজরুল-সোহরাওয়ার্দীর ও মোল্লা কলেজের সংঘর্ষ, ন্যাশনাল মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে ৪০ শিক্ষার্থী

জামায়াতে ইসলামী মাধবপুর ইউনিয়ন শাখার কমিটি গঠন

ভ্রমণগল্প: “কক্সবাজারের ২ দিন ২ রাতের সফর–সাধ্যের মধ্যে সবটুকু সুখ”

সুনামগঞ্জে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংর্ঘষে শান্তিগঞ্জের এক মহিলা নিহত

শান্তিগঞ্জের জয়কলসে বিএনপির কর্মীসভা

শান্তিগঞ্জে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সংকেতহীন স্পিড ব্রেকার,দূর্ঘটনার আশঙ্কা