মোস্তাকিম হোসেন,হিলি স্থলবন্দর সংবাদদাতা:
বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে পূর্বের কোন ঘোষণা ছাড়াই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেন ভারত সরকার। ওপার হিলি সীমান্তে আটকা পড়েছে হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের দেড় শতাধিক পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক।
গত রবিবার পর্যন্ত টেন্ডার করা এসব ট্রাক ভারতে আটকে থাকায় এখন পেঁয়াজে পঁচন শুরু করছে। কবে নাগাদ এসব পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করবে তা সঠিক উত্তর কেউও বলতে পারছেন না। ৫ দিন ওপার বন্দরের পাকিংএ আটকে থাকা পেঁয়াজ নিয়ে দুশ্চিন্তাই রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ওপারের রপ্তানিকারকরা বলছেন, শনিবার দুপুর থেকে তারা পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারবেন।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক হারুন উর রশিদ হারুন জানান, গত সোমবার ভারত হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। ভারত সরকারের ঘোষণার আগেই দেড় শতাধিক ট্রাক পেঁয়াজ ভারত থেকে এলসি করা ছিল বন্দরের ব্যবসায়ীদের। রবিবারের আগের এলসি করা পেঁয়াজের ট্রাকগুলো তারা ছেড়ে দেবে বলে বলছেন ওপারের রপ্তানিকারকরা।
আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম শহিদ বলেন, গত সোমবার থেকে হিলি বন্দরের বিপরীতে ভারতের হিলি সীমান্তে পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাকগুলো আটকে থাকায় পেঁয়াজ ইতিমধ্যেই নষ্ট হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে অর্ধেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া শনিবার বা রোববার ট্রাকগুলো দেশে ঢুকলেও অর্ধেকের বেশি পেঁয়াজ আর খাওয়ার উপযুক্ত থাকবে না। এতে প্রতি ট্রাকে ব্যবসায়ীদের ৫-৬ লাখ টাকার লোকসান হবে। তিনি বলেন ৪ শ ডলারে ক্রয় করা পেঁয়াজে প্রতি কেজিতে ৪২ টাকা খরচ পড়েছে।
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে বাবু বলেন, ‘বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। সে দেশের কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে পেঁয়াজের দাম পড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে পেঁয়াজ নিয়ে দেশটির অভ্যন্তরে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টিও শুরু হয়েছে।’ভারতের ব্যাঙ্গালোর, নাসিক, ইন্দোর অঞ্চলের কৃষকরা ইতো মধ্যেই বলেছেন যে, পেঁয়াজ রফতানি শুরু করেন, তা না হলে তারা ভারতের বাজারেই পেঁয়াজ বিক্রি করবেন না।
এই বন্দরের ব্যবসায়িক নুরুজ্জামান হোসেন জানান, হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের ১৫০ ট্রাক পেঁয়াজ দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় লোডিং অবস্থায় ভারতের বিভিন্ন সড়কে দাঁড়িয়ে রয়েছে। লোডিং থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৯-১০ দিন পার হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত গরম ও বৃষ্টির কারণে এসব পেঁয়াজে পঁচন ধরেছে। দুই এক দিনের মধ্যে এসব পেঁয়াজ আমদানি না হলে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট ও দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। এতে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। এছাড়া ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় ভারতের কৃষকরা পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বলেও ভারতীয় রফতানিকারকরা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জানিয়েছেন।