তাওহিদুল ইসলাম শিশির, বুটেক্স প্রতিনিধি
সরকারি চাকরির বৈষম্যমূলক কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশীরা জমাকৃত জীবনবৃত্তান্ত প্রত্যাহার ও ছাত্ররাজনীতির সকল কর্মকান্ড থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশীদের অনেকে ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে বুটেক্স ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য জমা দেওয়া জীবনবৃত্তান্ত তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে সবসময় থাকবেন বলেও তারা জানান।
৪৬তম ব্যাচের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, আমি বুটেক্স ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। বিভিন্ন সময়ে মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সুদিনে দুর্দিনে পাশে থেকেছি। তবে কখনো নিজের নীতি-নৈতিকতা থেকে পিছপা হইনি। আজ দেশ ও জাতির এক সংকট লগ্নে, সারাদেশের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক সংগ্রামের পাশে থেকে ছাত্রলীগ থেকে সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালাম। যেই ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের হামলায় আমার ভাইয়ের প্রাণ দিতে হয়, আমি সেই ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের অংশ হিসেবে থাকতে চাই না। পাশাপাশি সেই সংগঠনের পদপ্রার্থী হিসেবে আমি আমার জীবনবৃত্তান্ত তুলে নিতে চাই।
৪৭তম ব্যাচের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সপ্তক বড়ুয়া নিজের ফেসবুক পোস্টে জানান, এতদিন নিজের এলাকার জন্য, নিজের এলাকার ছোট ভাইদের জন্য আমি বুটেক্স ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। গতকাল যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি আমার জন্য দু:স্বপ্নের মতো। নিজেকে কালকে সারাটা রাত ব্যক্তিত্বহীন, লাইফলেস মনে হচ্ছিলো। ঘুমাতে পারি নাই। তাই আজকে নিজেকে সাধারণ ছাত্র আন্দোলনে শামিল করলাম। আমি ছাত্রলীগ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। একই সাথে আমার ছাত্রলীগের পদের জন্য জমা দেওয়া সিভি আমি বাতিল করে নিচ্ছি। আমি সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলাম, আছি থাকবো। আমার একটাই পরিচয় আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী।
এরকম আরও অনেক শিক্ষার্থীকেই দেখা যাচ্ছে ফেসবুকে পোস্ট করে ছাত্রলীগ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের অস্তিত্ব চান না বলে একমত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিতে দেখা যায়।