ঢাকারবিবার , ১ জুনe ২০২৫
  1. সর্বশেষ

গাজায় নির্মম নিপীড়ন : মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

আকতার কামাল মহসিন

সমস্ত মানবতা আজ কলঙ্কিত, ন্যায়বিচারের সব সীমারেখা লঙ্ঘিত, আর নিষ্পাপ রক্তধারায় রঞ্জিত পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিন! ইসরাইলের নিষ্ঠুর বর্বরতা আর দখলদার নীতির নির্মম বলি হচ্ছে গাজার নিরপরাধ মানুষ। যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতিটি বিধান পদদলিত করে, ফিলিস্তিনিদের ওপর নেমে এসেছে দুঃসহ বিভীষিকা।

বিশ্ব যখন রমজানের পবিত্রতাকে ধারণ করে করুণা, দয়া ও শান্তির আহ্বান জানায়, তখন গাজার মাটিতে বোমার বিস্ফোরণ আর আগুনের লেলিহান শিখা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করছে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, মসজিদ ও মাদ্রাসা। নিষ্পাপ শিশুদের নিথর দেহ, বিধ্বস্ত মায়েদের আহাজারি, নিরপরাধ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের করুন আর্তনাদ বাতাসে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আকাশ-বাতাস আজ তাদের ন্যায্য অধিকার, স্বাধীনতা ও শান্তির আকুতিতে ভারী হয়ে উঠেছে।

এ এক সীমাহীন নিষ্ঠুরতা! এটি শুধু মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ নয়; বরং ইহসান, ইনসাফ ও ইনসানিয়াতের মূলে আঘাত। অথচ বিশ্ববাসী নির্বিকার! শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর নির্লজ্জ সমর্থন আর স্বার্থান্ধ নীরবতায় এই হত্যাযজ্ঞ চলছেই। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো শুধুই নিন্দা প্রকাশ করে দায় সারছে, কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। কিন্তু মুসলিম উম্মাহ কি চিরকাল এমন নীরব দর্শক হয়ে থাকবে?

মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব
ইসলাম শান্তি, ন্যায়বিচার ও সহমর্মিতার ধর্ম। একজন মুসলমান কখনোই নিরপরাধ মানুষের ওপর অত্যাচারকে সমর্থন করতে পারে না, বরং জালিমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া তার ঈমানি দায়িত্ব।
হে মুসলিম উম্মাহ! গাজার ভাই-বোনদের জন্য আমরা কী করছি? আমাদের কি দায়িত্ব নয় তাদের পাশে দাঁড়ানো? আমাদের কি কর্তব্য নয় তাদের জন্য প্রার্থনা করা, সাহায্যের হাত বাড়ানো এবং অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া?
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি সকালে এ চিন্তা না করে যে, তার মুসলিম ভাইয়ের কী অবস্থা, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (মুসলিম)

আজ ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মুসলিমদের ওপর যে অবর্ণনীয় নিপীড়ন চলছে, তা আমাদের হৃদয়কে কি স্পর্শ করছে না? আমরা কি কেবল দূর থেকে সংবাদ শুনেই নির্বিকার থাকব? না, মুসলিম উম্মাহ কখনোই এত গাফিলতিতে নিমজ্জিত থাকতে পারে না। আমাদের করণীয়—
১. দোয়া ও ইস্তিগফার: আমাদের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হলো দোয়া করা। কারণ দোয়া হলো ঈমানদারের শক্তিশালী হাতিয়ার। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন—
“তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” (সূরা গাফির: ৬০)
আমাদের প্রার্থনা করতে হবে, যেন আল্লাহ ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলিমদের মুক্তি দেন, তাদের ধৈর্য বাড়িয়ে দেন এবং জালিমদের শক্তি ধ্বংস করেন।

২. অর্থনৈতিক ও মানবিক সাহায্য: গাজার মানুষ আজ চরম সংকটে। তাদের খাদ্য, ওষুধ, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের প্রয়োজন। মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক সদস্যের উচিত যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করা, বিশ্বস্ত সংস্থার মাধ্যমে মানবিক সহায়তা পাঠানো।
জনমত তৈরি ও সচেতনতা বৃদ্ধি: বিশ্বের সামনে ইসরাইলের এই বর্বরতার চিত্র তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম ও ব্যক্তিগত প্রচারণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের পক্ষে জনমত গঠন করতে হবে। মুসলিম বিশ্বের সরকারগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যেন তারা কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।
৪. বৈষয়িকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা: জালিমদের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল করার জন্য তাদের পণ্য বর্জন করা উচিত। আমাদের উচিত ইসরাইল-সমর্থিত কোম্পানির পণ্য পরিহার করা এবং মুসলিম বিশ্বের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার দিকে মনোযোগী হওয়া।
৫. ঐক্যবদ্ধ হওয়া: মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ দূর করা, একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং সম্মিলিতভাবে ইসলামি চেতনায় উজ্জীবিত হওয়া জরুরি। কেননা বিভক্ত উম্মাহ দুর্বল উম্মাহ, আর শক্তিশালী উম্মাহই পারে জালিমদের মোকাবিলা করতে।

আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ
হে আল্লাহ! আপনি আপনার অসীম দয়ার ছায়ায় ফিলিস্তিনের নির্যাতিত ভাই-বোনদের রক্ষা করুন। তাদের হৃদয়ে শান্তি ও ধৈর্য দিন, তাদের শহীদদের মাগফিরাত করুন, আর তাদের শত্রুদের ধ্বংস করুন।
হে রব্বুল আলামিন! আমাদের অন্তরকে গাফলত থেকে মুক্ত করুন, আমাদের ঈমানকে মজবুত করুন, এবং আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের তাওফিক দান করুন। আমাদের কর্ম ও প্রচেষ্টাকে কবুল করুন, আমাদের মধ্যে সহানুভূতি ও ভালোবাসার বীজ বুনে দিন, যেন আমরা ফিলিস্তিনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকি। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামিন!

লেখক :- সংগঠক, প্রবন্ধকার ও সমাজকর্মী।
কর্মচারী, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম

205 Views

আরও পড়ুন

চকরিয়া ইউনিক হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন ও অপারেশন করেন ডাঃ মোঃ মাহমুদুল আমিন

গাজীপুরে নবীন প্রবীণ জনকল্যাণের সংস্থার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

কেন মণিপুরী মুসলমানরা হানাফী মাজহাব অনুসরণ করেন?

টানা ভারী বর্ষণে বেড়েছে চিরিংগায় চোরদের পুনর্বাসন

টেকনাফে যৌথ অভিযানে নেচার পার্কের পুকুরে মিললো বিপুল পরিমাণ তাজা গোলা ও হ্যান্ড গ্রেনেড

টানা ভারী বর্ষণে বেড়েছে চিরিংগায় চোরদের পুনর্বাসন

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জামায়াত প্যানেলের অভূতপূর্ব বিজয়

১২৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কবি কাজী নজরুল ইসলাম গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড-২০২৫অর্জন করেছেন টেকনাফ সদর বিএনপির সভাপতি আব্দুল গফুর

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার অভিষেক

৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন তানযীমুল উম্মাহ আলিম মাদ্রাসা

দেশ প্রেমিক প্রেসিডেন্ট জিয়ার বিদেশ নীতির ফলে সকল শরনার্থীকে ফেরত নিতে বাধ্য হয়েছে মিয়ানমার,টেকনাফ উপজেলা-পৌর বিএনপির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকীতে:শাহজাহান চৌধুরী

ঘূর্ণিঝড় শক্তি চরফ্যাশনের দক্ষিণ অংশে ভয়ংকর হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।