এক বৈঠকে সম্পূর্ণ কুরআন শোনালেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক ফিলিস্তিনি নারী। ওই নারীর নাম সানা তালাল আল রানতিসি। তিনি গাজা উপত্যাকার রাফাহ এলাকায় বসবাস করেন। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মুবাশির এ তথ্য নিশ্চিত করে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, সানা তালাল আল রানতিসির বয়স যখন ২৬, তখন শুনে শুনে পবিত্র কুরআন হিফজ করেন তিনি। মোবাইলে ব্রেইল পদ্ধতিতে কুরআন মুখস্থ করতে অনলাইন কোর্সও করেছেন রানতিসি। দৃষ্টিহীন হয়েও কুরআন মুখস্ত করতে পিছপা হননি অদম্য এই নারী।
এ প্রসঙ্গে সানা তালাল জানান, ‘সব প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তিনি আমাদেরকে পবিত্র কুরআনের পরিবারভুক্ত করেছেন। তারাই মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত। তিনি আমাদেরকে হাফেজদের সাড়িতে দাঁড়ানোর সহায়তা করেছেন। সূত্র : আলজাজিরা
বর্তমানে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসলাম বিষয়ে পাঠদান করছেন ৩৩ বছর বয়সী এ নারী। সম্প্রতি অন্যান্য হাফজদের সাথে তিনি পবিত্র ওমরাহ পালন করেছেন। তিনি বলেন, ‘সত্যিই দিনটি আমার জীবনে স্মরণীয় মুহূর্তগুলোর অন্যতম।
গত আগস্টে দারুল কুরআনুল কারিম নামে গাজার একটি সামাজিক সংস্থা পুরো কুরআন এক বৈঠকে শোনানোর একটি ইভেন্ট চালু করে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ ইভেন্টে শত শত হাফেজ অংশগ্রহণ করেন। এখন পর্যন্ত তাতে ৩৩২ ছেলে হাফেজ ও ২৪৯ নারী হাফেজাসহ মোট ৫৮১ জন অংশ নিয়েছেন বলে জানান সংস্থার পরিচালক বিলাল ইমাদ।
তিনি বলেন, ‘এতে অংশ নিয়ে এক বৈঠকে পুরো কুরআন শোনানো সর্বকনিষ্ঠ হাফেজের বয়স ছিল ৯ বছর এবং বয়োবৃদ্ধ হাফেজের বয়স ছিল ৬০ বছর। প্রতিদিন ফজরের পর থেকে পুরো কুরআন মুখস্ত শোনানোর কার্যক্রম শুরু হয়, যা সূর্যাস্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
মূলত পবিত্র কুরআন হিফজ করার ক্ষেত্রে ভিন্ন মাত্রা তৈরি করতে এ ধরনের আয়োজন ফিলিস্তিনে এবারই প্রথম বলে জানান বিলাল ইমাদ। এক বৈঠকে পুরো কুরআন শোনাতে একজন হাফেজকে ভালোভাবে হিফজের চর্চা করতে হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীর অদম্য ইচ্ছা, অধ্যবসায় ও পরিশ্রমও করতে হয় বলে জানান তিনি।