জহুরুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা
সৌদি আরবে প্রবাসী এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতেনাতে আটক হয় মমিনুর ইসলাম(৪০) নামে এক কৃষকদল নেতা। বুধবার রাতে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার গোমনাতী ইউনিয়নের খালপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার কৃষকদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।মমিনুর গোমনাতী ইউনিয়নের মৌজা গোমনাতী এলাকার এসলাম উদ্দীনের এর ছেলে। তিন সন্তান রয়েছে তার। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের গোমনাতী ইউনিয়নের ০৭ নং ওয়ার্ডের সভাপতির দ্বায়ীত্বে রয়েছে বলে জানান মমিনুর রহমান। ওই ইউনিয়নের খাল পাড়ার এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে ঘটনাটি ঘটেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মমিনুর পেশায় একজন বন্ধু চুলার ব্যবসায়ী। চুলা বিক্রি করতে সে বিভিন্ন এলাকায় প্রোজেক্টরের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করে থাকে। সেই সুবাধে বুধবার সন্ধ্যার দিকে ওই মহিলার শশুর এলাকা গোমনাতীর খালপাড়ায় আসেন। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ক্যাম্পেইন করতে এলাকার পরুষ-মহিলাদের নিয়ে প্রোজেক্টর সেটিং করার জন্য মমিনুর সহ আরো দুইজন ওই প্রবাসীর বাড়িতে চেয়ার নেয়ার জন্য আসে। প্রজেক্টর সেটিং করা শেষ হলে মমিনুর উপস্থিত সকলের আড়াল হয়ে যায়। এর কিছুক্ষন পর প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলার পর আটক করতে গেলে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে তার মোটরবাইক নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীর কাছে হাতেনাতে ধরা খায় কৃষকদল নেতা মমিনুর। এলাকাবাসী জানান, মমিনুর দীর্ঘদিন ধরে এমন অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। এর আগেও কয়েক জনের সাথে এই ধরনের অপকর্ম করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়েছিলো। তার এসব কান্ডে এলাকায় এর আগে বিচার-শালিশ হয়েছিলো।
এ বিষয়ে প্রবাসীর মা জানান, মমিনুর প্রায় আমাদের বাসা আসে এবং আমার বউমার সাথে কথা বার্তা বলে। এটা নিয়ে আমি আমার বউমাকে বাইরের লোকের সাথে বেশী কথা বলতে নিষেধ করতাম। আমি বাড়ি অন্যকাজে থাকার কারনে মমিনুর আমার বউমার ঘরে ঢুকে পড়ে। বউমার এমন কান্ড সম্পর্কে আমার প্রবাসী ছেলেকে জানালে আমার বউমা আমার ছেলের কাছে উলটো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। এমন ঘটনা এলাকার অনেকেই জেনে গেছে, আমার পরিবার এলাকার লোকের কাছে ছোট হয়ে গেলো।
মহিলাটির সাথে আমি জোড় করে কোনো কিছু করিনি বলে দাবী করেন মমিনুর। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে তাদের একটা পারিবারিক সমস্যার সমাধান করতে আমরা কয়েকজন এসে মিমাংসা করে দিয়েছিলাম। পরে একদিন তাদের বাড়ি ভিত্তির দিনে বাসায় আমাদের দাওয়াত করেছিলেন। এরপর ঘটনার দিনে সন্ধ্যায় বন্ধু চুলার প্রোগ্রাম বায়োস্কোপে দেখাতে আমি ওই মহিলার ঘরে টুল নিতে ঢুকছিলাম, ঘর থেকে বের হবার সময়ে কয়েকজন মহিলা আমাকে দেখে চিল্লাচিল্লি করে।
তিনি এলাকার বিএনপির নেতা হওয়ায় আমার ভাসুরের সাথে ভালো সম্পর্ক বলে জানান প্রবাসীর স্ত্রী। বিগত এক মাস থেকে মমিনুরের সাথে আমার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। তিনি ফোন দিয়ে আমার সাথে কথা বলার পাশাপাশি পরিবারের সবার খোঁজখবর নিতেন, কোনোদিন আমাকে খারাপ কথা বলেনি। মাঝে মধ্যেই মমিনুর দেখা করার জন্য বাসায় আসতো বলে জানান প্রবাসীর স্ত্রী। ঘটনার দিনে আমি তাকে ঘরে ডাকিনি তিনি নিজেই ঘরে ঢুকে জোড় করে আমার শরীরে হাত দিয়েছেন। ডোমার উপজেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি আফজাল হোসেন চৌধুরী হিরু জানান, বিষয়টি শুনেছি। সে আমাদের কৃষক দলে আছে। তদন্তে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম জানান, মহিলাটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনী প্রকৃয়া চলমান রয়েছে।