রংপুর ব্যুরো:
উজানের পাহাড়ী ঢলে রংপুর বিভাগে দ্বিতীয় দফায় বন্যার শংঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যার ক্ষত না শুকাতেই আবার বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছেন নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের বাসিন্দারা। ভয়াবহ বন্যার শংঙ্কায় জরুরী প্রস্তুতি সভা করেছে রংপুর বিভাগীয় প্রশাসন।
উজানের পাহাড়ী ঢলে বুধবার সকাল থেকে বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, ঘাঘট, দুধকুমারসহ রংপুর বিভাগের প্রায় সব ছোট-বড় নদীর পানি। উজানের ভারী বৃষ্টি অব্যহত থাকলে যে কোন সময় বড় ধরনের বন্যার শংঙ্কা দেখা দিয়েছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১২টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৮ সে.মি, ঘাঘট নদী গাইবান্ধা পয়েন্টে বিপদসীমার ১১১ সে.মি, ঘাঘট নদীর পানি রংপুর নগরীর ইসলামপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭৮ সে.মি ও করতোয়া নদী গাইবান্ধার চক রহিমপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৯৮ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সে.মি নিচ দিয়ে, তালুক শিমুলবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ২৩ সে.মি উপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৪ সে.মি ও চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কুড়িগ্রামের দুধকুমার নদী পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, উজানে ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার অতিক্রম করেছে। পানি আরও বাড়তে পারে। রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার বন্যায় নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরে নদী অববাহিকায় বা চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্কমূলক বার্তা পাঠানোসহ স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় বন্যার শংঙ্কায় রংপুর বিভাগে জরুরী সভা করেছে বিভাগীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। বুধবার সকালে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরে বিভাগীয় কমিশনার সম্মেলন কক্ষে এ সভায় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাদের বন্যা মোকাবেলায় তাদের প্রস্তুতির কথা জানান। দ্বিতীয় দফা বন্যা মোকাবেলায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় ত্রাণ তৎপরতা, উদ্ধার কার্যক্রম, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বন্যা দূর্গতদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা, অসুস্থ্যদের চিকিৎসা দেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, বিজিবি’র কর্মকর্তা কর্ণেল মোঃ জাকারিয়া হোসেন, ৬৬ পদাতিক ডিভিশন সদর দপ্তরের মেজর মোনাব্বির মামুন, পাউবো’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ নিয়াজ মোহাম্মদ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাহার উদ্দিন মৃধা, রংপুর বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোঃ হারুন অর রশিদ, মৎস অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলাম, রংপুর মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাসিস সেন্টারের আইন কর্মকর্তা মোছাঃ শাহীনা বেগম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মাহবুবর রহমান, রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ আবু জাকিরুল ইসলাম ও রংপুর জেলা রোভারের সম্পাদক মহাদেব কুমার গুন।
রাফিউল ইসলাম রাব্বি / এনভি