রংপুর ব্যুরো:
রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) সচিব পদটি দীর্ঘ ৫ মাস ধরে শূন্য থাকায় প্রশাসনিক কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল হক মেট্রোরেল প্রকল্পে সহকারী পরিচালক হিসেবে ঢাকায় যোগ দিয়েছেন। ফলে সচিব পদটি সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত শূন্য রয়েছে।
সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক শৃংখলা রক্ষায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাপ্তরিক দায়িত্ব বন্টন, দাপ্তরিক বদলী, বিভিন্ন কার্যক্রমে কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজের তদারকি, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের সমন্বয় সাধনসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয় সিটি করপোরেশনের সচিবকে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশাসনিক পদটি দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য থাকায় রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রচলিত প্রশাসনিক কাজে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
এদিকে, রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফিরোজুল ইসলাম গত ১২ জানুয়ারি পদোন্নতি পেয়ে বদলী হয়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগ দেন। তারপর থেকে দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস ধরে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ওই পদটিও শূন্য ছিল। তবে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মন্ত্রণালয়ে তদবির করে অবশেষে গত ১৭ মে মিঠাপুকুর উপজেলার এসিল্যান্ড মাহমুদ হাসান মৃধা রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সিটি এলাকার বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, জবরদখলের অভিযোগে সরেজমিন সমাধান, অবৈধ নির্মাণ কাজের আইনগত প্রতিকার এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিভিন্ন জরুরি প্রশাসনিক কাজে তাৎক্ষণিক গুরুত্বপ দায়িত্ব পালন করতে হয়। পদটি এতদিন শূন্য থাকায় এই কাজে ভয়ানক স্থবিরতা এবং জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল।
রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনার জটিলতা ছাড়াও প্রতি মাসে নানা ধরনের কয়েকশ অভিযোগ সিটি করপোরেশনে জমা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় এতদিন সেসবের সমাধান করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রংপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু এ বিষয়ে জানান, সচিবের পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। তবে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা ফাতেমাতুজ জোহরা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সমন্বয় করে ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। সচিব পদে মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দের বিষয়টি চেষ্টা চলছে।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে ১০ লাখ মানুষের বাস। জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ এ সিটি করপোরেশনের সচিব এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ার দায়িত্ব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে অনেকবার রিকুইজেশন দিয়েছি। নিজের পকেটের অর্থ খরচ করে ঢাকায় গিয়ে মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফা তাগাদা দিয়েছি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এখন আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার এসিল্যান্ড মাহমুদ হাসান মৃধাকে অনেক আগে রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগ দেওয়ার আদেশ প্রদান করলেও জেলা প্রশাসক দীর্ঘদিন পর তাকে ছাড়পত্র দেন। তিনি গত সপ্তাহে স্বপদে যোগ দিয়েছেন। তবে সচিব পদটি পূরণের ব্যাপারে আমি হতাশ। কখন এই সমস্যার সমাধান হবে জানি না। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি করবো।
রাফিউল ইসলাম রাব্বি /এনভি
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০