রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ট্রলিতে করে রোগী আনা নেয়ায় ঈদ উপলক্ষে দ্বিগুন টাকা আদায় করছে কর্মচারীরা। রোগীর স্বজনরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন তাদের কাছে। এমনকি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রোগীদের ট্রলিতে করে নীচে নামিয়ে আনতে নেয়া হচ্ছে ২শ টাকা। টাকা না দিলে ঘন্টার পর ঘন্টা লাশ ওয়ার্ডেই পড়ে থাকছে। এসব যেন দেখার কেউ নেই। হাসপাতালের পরিচালক থেকে শুরু করে সকলেই কর্মচারীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১১ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে এ প্রতিনিধি সরেজমিনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে প্রথমেই দেখতে পান হাসপাতালের পোষাক পড়া এক মহিলা ট্রলিতে করে রোগীকে নামিয়ে আনা এবং এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেবার জন্য চারশ টাকা গুনে নিচ্ছেন। টাকা নেবার পরেই রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিলেন দুই নারী কর্মচারী। তাদের নাম জানতে চাইলে উল্টো এ প্রতিনিধিকে দেখে নেবার হুমকি দিয়ে তাদের সহযোগীদের নাম ধরে উচ্চ স্বরে চিৎকার শুরু করেন।
জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলা থেকে আসা বৃদ্ধ এখলাসুর রহমান ষ্ট্রকে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন । চিকিৎসক বলেছেন তার সিটি স্ক্যান করাতে হবে। কিন্তু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিনটি প্রায় আড়াই মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীর সিটি স্ক্যান করাতে প্রাইভেট হাসপাতাল অথবা ক্লিনিকে নিয়ে যেতে হয়। সে কারনে বৃদ্ধ এখলাসুর রহমানকে একটি এ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া করে আনা হয়েছে। তার আগে হাসপাতালের দোতলায় মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ট্রলিতে করে দুই নারী কর্মচারীকে লিফটের মাধ্যমে নীচে নামিয়ে আনেন।
এরপর এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেবার আগে টাকা দাবি করছিলেন। ফলে বাধ্য হয়ে স্বজনরা ৩শ টাকা দিলে তারা ৪শ টাকার কম নেবেননা সাফ জানিয়ে দেন। তারা বলেন পুরো ৪শ টাকা দিলেই তারা ট্রলি থেকে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেবেন বলে জানান। পরে বাধ্য হয়ে ৪শ টাকা দেবার পর সেই টাকা গুনে নেবার পরেই এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিলেন।
এ ব্যাপারে ট্রলি বহনকারী দুই নারী কর্মচারী বললেন তারা অনিয়মিত কর্মচারী মাসে ৬ হাজার টাকা বেতন পান। এমনি সময় হাসপাতাল থেকে নীচে নামাতে ১শ টাকা করে নেন ঈদ উপলক্ষে ১শ টাকা বাড়িয়ে দুশ টাকা করে নিচ্ছেন বলে জানালেন তারা। একই দৃশ্য দেখা গেল মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুরেও ট্রলিতে রোগীদের বহন করা বাবদ ২শ টাকা করে আদায় করতে।
অন্যদিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে দেখা গেল একই দৃশ্য তিনদিন ধরে চলছে ট্রলি ব্যবসা সেখানে এ্যাম্বুলেন্সে রোগী ভর্তি হতে আসার সাথে সাথে ট্রলি নিয়ে এগিয়ে যান দুই কর্মচারী তারা ২শ টাকা নিয়ে রোগীকে নিয়ে ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা, আরশাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০