রংপুর ব্যুরো:
উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা নদীর তীরবর্তী পাঁচ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের প্রায় ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব অঞ্চলে এরই মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকে উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। শুক্রবার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে করে আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে নদীর তীরবর্তী মানুষজন। ডুবে যায় ফসলের ক্ষেত, ঘর-বাড়ি। বন্যার কারণে অনেক পরিবারে দিনভর চুলো জ্বলেনি। অনেকে গবাদী পশু নিয়ে এলাকার উঁচু স্থানে, বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের মিনা বাজার, চর বাগডোহরা এলাকার ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনার চর, চর মটুকপুর, চিলাখাল, সাউথপাড়া, উত্তর কোলকোন্দ এলাকার ৩ হাজার পরিবার, আলমদিতির ইউনিয়নের ব্যাঙপাড়া, পাইকান এলাকার ২০০ পরিবার, লহ্মীটারী ইউনিয়নের চর শংকরদহ, জয়রামওঝা, ইচলী, দ্বীপচর চল্লিশসাল, বাগেরহাট এলাকার ২ হাজার পরিবার, মর্ণেয়া ইউনিয়ােনর চর মর্ণেয়া, নীলারপাড়, ভাঙ্গাগড়া এলাকার ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, আমার ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তিস্তার বামতীরে বাঁধের দাবি করেছি। কিন্তু কেউ আমাদের দাবি শোনেনি। তাই তিস্তার পানিবৃদ্ধি পেয়ে ইউনিয়নের এলাকাবাসীরা পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। আমার ইউনিয়নবাসী ত্রাণ চায় না, চায় তিস্তার বাম তীরে বাঁধ।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রাজু বলেন, কোলকোন্দ ইউনিয়নে বেশ কয়েকদিন ধরে ভাঙন চলছিল। অনেক পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছে। এখন পানিবন্দি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার পরিবার। বন্যা স্থায়ী হলে তাদের খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা বেগম বলেন, এটি এ বছরের বড় বন্যা। বন্যার্তদের জন্য চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। শনিবারের মধ্যে ১১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়ে আসার কথা রয়েছে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা বিতরণ করা হবে।
রাফিউল ইসলাম রাব্বি / এনভি
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০