রাফিউল ইসলাম (রাব্বি) রংপুর ব্যুরো:
হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে বিভাগীয় শহর রংপুরে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্কাবস্থানে রয়েছেন। জেলার প্রবেশদ্বারসহ নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। স্বাভাবিক রয়েছে সড়ক, মহাসড়কে যানবাহন চলাচল। রোববার (২৮ মার্চ) ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত রংপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হরতালের সমর্থনে বা হরতাল বিরোধী কাউকে দেখা যায়নি। অনেকটাই প্রভাবহীন এ হরতালে এখন পর্যন্ত (সকাল ১০টা) স্বাভাবিক রয়েছে জীবনযাত্রা। শহরের সব সড়কেই সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতের কার্যক্রমও স্বাভাবিক।
বিপণিবিতান খোলা রয়েছে। রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে আন্তজেলা রুটে বাস চলাচল করছে। সেই সঙ্গে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে দূরপাল্লার বাসও চলছে। ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক।
সকাল দশটায় নগরের শাপলা চত্বর এলাকায় দেখা গেছে, দূরপাল্লার কয়েকটি বাস ছেড়ে গেছে। এছাড়া আন্তঃজেলা রুটে বাস, ট্রাক, মাইক্রো, অটোবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনো পিকেটিং দেখা যায়নি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রংপুর মহানগর ছাড়াও উপজেলা শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের নিরাপত্তা চৌকি। এছাড়া সাদা পোশাকে রয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাবের টহল।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, হরতালে যাতে কেউ কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে সেজন্য পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক রাখা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি র্যাব ও পুলিশের টহল অব্যাহত আছে।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ বলেন, আন্তঃজেলাসহ সব রুটেই গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সকালে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড থেকে বেশ কয়েকটি পরিবহনের গাড়ি যাত্রীসহ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, হরতালে মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। এর পরও শহর ও মহাসড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে হেফাজত আন্দোলন করে । পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে রোবার (২৮ মার্চ) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে হেফাজত ইসলাম। একই ঘটনায় শনিবার (২৭ মার্চ) সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।