রংপুর ব্যুরো:
২০০৮ সালে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভিতে রিয়েলিটি শো ক্লোজআপ ওয়ান তারকা দ্বিতীয় রানার্সআপ নির্বাচিত হন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের মৃত আজগার আলী ও রানীজান বেগম দম্পতির ছেলে সাজু আহমেদ (৩৫)।
২০০৩ সালে মারা যান সাজুর বাবা। প্রায় ১৯ বছর ধরে সাজুকে কোলে করে আগলে রেখেছিলেন তার মা। ছোট ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে, তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সর্বস্ব ঢেলে দিয়েছেন মা। কিন্তু আজ মায়ের মুখেই সন্তানের বিরুদ্ধে বিচার দাবী। বারবার ছেলের হাতে অপমান অপদস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ সেই মায়ের।
গত শুক্রবার শিল্পী সাজু আহমেদ তার মায়ের কাছে জমির ভাগ ও টাকা না পাওয়ায় হামলা করে মাথা ফাটিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেছেন তার মা। তার বৃদ্ধা মাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন স্বজনরা। তিনি এখন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সাজুর মা রানীজান জানান, আমি অনেক সহ্য করেছি। বাচ্চা মানুষ, আমার কোলের সন্তান। সে আমাকে আর মা বলে পরিচয় দেয় না। ওর জন্য আমি ভিক্ষা করেছি। মানুষের দ্বাড়ে দ্বাড়ে ঘুরেছি। সে অপরাধ করেছে। আমি মা, অনেক সহ্য করেছি, অনেক ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু আর না” বলেই অঝর নয়নে কান্না শুরু করে কঠোর শাস্তি দাবী করছেন তিনি।
সাজুর মা আরও জানায়, সে চেয়ারম্যান পদে (ইউনিয়ন পরিষদের) নির্বাচন করবে বলে জমির ভাগ চাচ্ছে এবং এজন্য প্রায়ই সে আমাকে অপদস্ত করে আসছে। ২০০৮ সালে তার ক্লোজআপ ওয়ান তারকা হওয়ার জন্য এসএমএসের পেছনে জমি বন্ধক রেখে লাখ লাখ টাকা শেষ করছি। এখন তার নিজের জমানো অর্থ দিয়ে নির্বাচন করতে বলেছি এবং পরে জমির অংশ দিতে চেয়েছি। কিন্তু সে নির্বাচনের আগেই জমির অংশ নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এজন্য আমার ওপর হামলা করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সাজুর বড় বোন ও থানায় অভিযোগকারী আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, সে আমাকেও কয়েকবার মারতে উদ্যত হয়েছিল। পরে আমার মা প্রতিবাদ করায় সে মাকে চাকু দিয়ে আঘাত করে। আমার চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অনেকে বাড়িতে উপস্থিত ছিল।
এ ব্যাপারে শিল্পী সাজু আহমেদের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির জানান, অভিযোগ পেয়েছি। ভুক্তভোগীর বড় মেয়ে বাদি হয়ে অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাফিউল ইসলাম রাব্বি / নিউজ ভিশন