রংপুর ব্যুরো:
রংপুরের হারাগাছে আটকে রেখে সংঘবদ্ধভাবে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় ডিবির বরখাস্ত এএসআই রাহেনুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এতে এএসআই রাহেনুল ইসলাম ও দুই নারীর বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও দুই আসামির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুরে রংপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৬৭ পৃষ্ঠার পৃথক দুটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এ সময় রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলামসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ডিবি পুলিশের এএসআই সন্তানের জনক রাহেনুল ইসলাম ওরফে রাজু হারাগাছ থানায় কর্মরত অবস্থায় অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে ময়নাকুঠি কচুটারী এলাকার ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ১৮ অক্টোবর তাকে আসামি সুমাইয়া পারভীন মেঘলার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে এসে ধর্ষণ করেন। পরের দিন সুমাইয়া পারভীন মেঘলা ও সুরভি আক্তার সমাপ্তির সহযোগিতায় অপর আসামি আবুল কালাম আজাদ এবং বাবুল হোসেন সংঘবদ্ধভাবে তাকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় ২৬ অক্টোবর মামলা করা হলে ওই ছাত্রীকে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া এএসআই রাহেনুলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এএসআই রাহেনুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন।
পিবিআই পুলিশ সুপার আরও জানান, রিমান্ডে থাকাকালে এএসআই রাহেনুল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন। তা ছাড়া ভিকটিম নিজেও আদালতে তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার চার মাসে তাদের দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও বস্তুগত তথ্য-প্রমাণ এবং ডিএনএ পরীক্ষা শেষে গণধর্ষণের ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এ বিষয়ে নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যসহ আসামিদের বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে পিবিআই। অপরাধীদের বিরুদ্ধে ৪৪ ও ৩২৩ পৃষ্ঠার পৃথক দুটি অভিযোগপত্র প্রদান করেছে তারা। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত ন্যায় বিচার হবে।