ঢাকাবুধবার , ১২ মার্চ ২০২৫
  1. সর্বশেষ

আবাসিক মাদ্রাসায় বেড়েই চলছে শিক্ষার্থী নির্যাতন ও বলাৎকার! আতঙ্কে অভিভাবক

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
১৫ মার্চ ২০২১, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ

Link Copied!

আজিজুল হক নাজমুল, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পেটানো এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ বার বার উঠে এলেও এসব নির্যাতন বন্ধে কার্যত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি বলে মত বিশ্লেষকদের। সম্প্রতি দিনাজপুর সদর উপজেলায় ১৩ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্র বলাৎকার ও ৮ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পেটানোর ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি আবার নতুন করে সামনে আসে। মূলত মানুষের দানে পরিচালিত এই কওমি মাদ্রাসাগুলোয় সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকা এবং আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন না হওয়ায় এমন ঘটনা বারবার ঘটছে।

সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক গোলাম মোস্তফা মজুমদার জানান, মাদ্রাসায় যেসব নির্যাতনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা সমাজবিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। বরং এসব অনিয়ম, অনাচার সমাজে ভয়াবহ রকমভাবে বেড়েছে। মাদ্রাসার ঘটনাগুলো তার টুকরো প্রতিচ্ছবি। মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতন নিয়ে কথা বলা মানে এই শিক্ষাব্যবস্থার বিরোধিতা করা না। মাদ্রাসার বিভিন্ন অন্যায়-অনিয়ম নিয়ে কথা বলা মানে ধর্মের সমালোচনা করা না। বরং ইসলাম ধর্ম ও ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টির জন্যই এসব অপরাধ বন্ধ করতে হবে। ইসলাম ধর্মে শিশু ও যৌন নির্যাতন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বরং এসব কুপ্রবৃত্তিসম্পন্ন মাদ্রাসার কতিপয় শিক্ষকদের অপকর্মের সুযোগ নিয়ে অনেকেই ইসলাম সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক বাজে মন্তব্য করছেন। বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধের জন্য এসব অপকর্ম রোধ করা জরুরি।

এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান টিটোর সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান,মাদ্রাসা শিক্ষা বহাল থাক তবে আবাসিক বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ। নির্যাতন ও নির্যাতন পরবর্তী মৃত্যুর ঘটনা আবাসিক গুলোতেই হয়। হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতন ও বলৎকার বিষয়ে বাংলাদেশ সেচ্ছাসেবক ফাউন্ডেশনের অতিরিক্ত প্রধান সেচ্ছাসেবক এম. রশীদ আলী বলেন ‘হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় শিক্ষার্থী নির্যাতনে নির্দিষ্ট শাস্তির কথা উল্লেখ রাখা’ শিশু নির্যাতনকে উস্কে দিচ্ছে। শিশু সাহিত্যিক, গীতিকার ও শিক্ষক তৌহিদ-উল ইসলাম বলেন, ব্যক্তি স্বার্থে আমাদের গ্রাম গঞ্জে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে, মক্তব, হাফেজিয়া মাদ্রাসা সহ অসংখ্য কিন্ডারগার্টেন। যা আমাদের শিক্ষা দূষনের অন্যতম কারণ। এখানে তারা নিজেদের মতো করে শিক্ষা কারিকুলাম, শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষাদান পদ্ধতির প্রয়োগ করে আসছেন। বিশেষ করে শিশুদের পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের নূন্যতম অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ না থাকায় মানসম্মত শিক্ষা মোটেই অর্জিত হচ্ছে না।

এ ভাবে লাগামহীন ভাবে শিশু শিক্ষা চলতে থাকলে অচিরেই সরকারের বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হালিম ঢালী জানান, আমার নাতি কে কোরআনের হাফেজ এবং টাইটেল পাস মাওলানা বানানোর নিয়ত করেছিলাম, তাই নাতির নাম রেখেছিলাম ইসলামী চেতনায়। ৬ বছর বয়সেই আমার নাতিকে মাদ্রাসায় ভর্তি করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর কিছুদিন পরই ফেসবুকে মাদ্রাসার এক শিশু শিক্ষার্থীকে হুজুর নামের এক জানোয়ারের নির্যাতনে নির্মমভাবে নিহত হয়। এরপর মাসখানেক আমার নাতি কে মদ্রাসা যাওয়া বন্ধ করে দেই। এমন একটি নাজুক পরিস্থিতিতেও আবার নাতিকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেই। উদ্দেশ্য একটাই। নাতিকে মাওলানা বানাবো। এখন দেখছি কুলাঙ্গার ও ইসলামের দুষমন কিছু মাদ্রাসা শিক্ষকের কারণে আমার সেই আশা পুরণ হবেনা। বিশেষ করে মা-বাবা হারা এতিম শিশুরাই বেশি লেখাপড়া করে মাদ্রাসায়। সেই এতিম শিশুদের নির্যাতন করে মেরে ফেলে হুজুর নামের মাদ্রাসার শিক্ষারা! সমান্তরালে চলে বলাৎকার! এমন ভায়াবহ দৃশ্য দেখে সুশীল সমাজের বা ধনীর দুলালেরা মাদ্রাসায় লেখা পড়া করতে চায়না বা গার্জিয়ানরা তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় পড়াতে চায়না। এটার জন্য দায়ি একমাত্র মাদ্রাসারই পরিচালনা কমিটি। আরো দায়ি সরকার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

প্রতিটি মাদ্রাসার দেখভালোর জন্য দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। সরকার এ দায়িত্বটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেয়নি বলেই আজ মাদ্রাসার এই করুন অবস্থা। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো একদিন মাদ্রাসা শিক্ষায় ধস নামবে। শাহবাজার এ এইচ সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সহঃশিক্ষক মাওলানা এম আখতার বিন আতাউর রহমান বলেন, হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসায় এই রকম বিছিন্ন ঘটনার জন্য দায়ি শুধু মাত্র কুলষিত শিক্ষক। তবে আবাসিক গুলোতে মনিটরিং থাকতে হবে চৌকশ। প্রত্যেক হাফেজিয়া ও কওমি মাদ্রাসায় সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং দরকার। সিসি ক্যামেরা নাও সম্ভব হতে পারে, সে ক্ষেত্রে প্রতিটা পাড়া মহল্লায় আবাসিক মাদ্রাসার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেক উপজেলায় হাফেজিয়া, কওমি আবাসিক হতে পারে তার জন্য সরকারের অনুমতি অবশ্যক হওয়া দরকার। সর্বোপরি সরকারের তদারকি এবং নির্যাতনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে এমন অমানবিক ঘটনা রোধ হবে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

431 Views

আরও পড়ুন

চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের নবনিযুক্ত প্রশাসককে বরণ করলেন ইউনিয়ন জামায়াত

শান্তিগঞ্জে প্রবাসবন্ধু ফোরামের ত্রৈমাসিক সভা

বাংলাদেশ-কোরিয়ান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের সাথে মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং চুক্তি স্বাক্ষরিত

সুনামগঞ্জ সাহিত্য সংসদ গণপাঠাগার হতে শেখ একেএম জাকারিয়াকে অব্যাহতি

মাদারগঞ্জে চকলেটের লোভ দেখিয়ে ৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কলারোয়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে রমজান ও যাকাতের গুরুত্ব শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

জেলা কারাগার ডান্ডাবেরীর বাণিজ্য চরমে
জেলার আবু মুছার হাতে বন্দি কক্সবাজার জেলা কারাগার, বন্দিদের জীবন দুর্বিষহ!

কবিতা:- ছোবল

রংপুরে হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

পর্যটন নগরীর নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কঠোর নজরদারি, ফিরছে পর্যটকদের আস্থা

ছাতকে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মসজিদের ইমাম আটক

তা’মীরুল মিল্লাতে দাখিল ২৪ ও আলিম ২৬ ব্যাচের ‘ইনতিফাদা ইফতার মাহফিল’ অনুষ্ঠিত