রংপুর ব্যুরো:
রংপুরের বদরগঞ্জের দামোদরপুর ইউনিয়নে এক পরিবারের সবাইকে অচেতন করে স্বামীর হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে (১৯) ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় স্বামীর বন্ধু মিলন হোসেনকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২০ মে) দিবাগত গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটলেও শনিবার (২১ মে) রাতে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়।
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান মামলা এবং প্রাথমিক তদন্তের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ঘটনার শিকার ওই পরিবারের চারজনকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের জ্ঞান ফিরলেও একজনের জ্ঞান এখনও ফেরেনি।
ওসি জানান, ভুক্তভোগীর স্বামী একজন দিনমজুর। শুক্রবার রাতের খাবার খেয়ে নয়টার দিকে স্বামী-সন্তানসহ ঘুমাতে যান ভুক্তভোগী। একই খাবার খেয়ে অন্য আরেকটি ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন তার শ্বশুর-শাশুড়ি। ভাত খাওয়ার পরে তাদের ৪ জনেরই তন্দ্রাভাব হচ্ছিলো। পৃথক ঘরে বিছানায় গেলে দ্রুতই ঘুমিয়ে পড়েন তারা। এরপর, গভীর রাতে জানালা দিয়ে ভুক্তভোগীর ঘরে তিনজন প্রবেশ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা ভুক্তভোগীর স্বামীর হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মুখে টেপ লাগিয়ে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। ঘরের ভেতরে গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী, তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান প্রতিবেশীরা।
ওসি আরও জানান, প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন- গোঙানির শব্দ শুনে তারা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন ভুক্তভোগী খাটের ওপরে আছেন, তার স্বামীর হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা। তারা তখনও তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন। ভুক্তভোগীর শ্বশুর-শাশুড়িও তাদের ঘরে অচেতন অবস্থায় ছিলেন।
বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হাবিবুর রহমান বলেন, ওই পরিবারের সদস্যরা বিষজাতীয় কিছু খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ওই গৃহবধূকে তার বাবা উন্নত চিকিৎসার কথা বলে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। ভুক্তভোগীর শাশুড়ি কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলেও তার শ্বশুরের জ্ঞান এখনও ফেরেনি।
ওসি আরও জানান, ঘটনাটি শনিবার রাতে আমরা জানতে পারি। সাথে সাথে হাসপাতালে যাই এবং সেখানে গিয়ে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাই। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিলন হোসেন নামের এক ষুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত যুবক ভুক্তভোগীর স্বামীর বন্ধু। ঘটনায় তিন জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে, বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই গৃহবধূ নিজেই পুলিশকে ধর্ষণ হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।