ঢাকাবুধবার , ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  1. সর্বশেষ

বেকারত্ব বনাম লকডাউন : জীবন আর জীবিকা যখন একই সূত্রে গাঁথা

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
৮ এপ্রিল ২০২১, ৮:১৪ অপরাহ্ণ

Link Copied!

বেকারত্ব কথাটির সাথে বর্তমান সময়ে পরিচিত নয় এমন কেউ আছে কিনা তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ বা অনান্য দেশ গুলোর দিকে তাকালে আমার বেকারত্বের হার যে উর্দ্ধগামী তা দেখতে পাই । বেকারত্বের সাথে নতুনমাত্রায় যুক্ত হয়েছে লকডাউন। যা কিনা বেকারত্বের হার কে আরও চরমমাত্রায় নিয়ে গেছে।
বেকারত্ব একটি সামাজিক ব্যাধি বা সংকট।বেকারত্ব হলো এমন এক পরিস্থিতি যা কোনো দেশের বহুসংখ্যক সুস্থ ও কর্মক্ষম ব্যক্তি যাদের কাজ করার বয়স হয়েছে এবং কাজ করার আগ্রহ রয়েছে অথচ প্রচলিত মজুরিহারে কোন কাজে সক্ষম হয় না। বর্তমান সময়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রকট যে সমস্যা গুলো রয়েছে তার মধ্যে বেকারত্ব হলো অন্যতম। একটি দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সে দেশের কর্মজীবী মানুষের শ্রম ও প্রচেষ্টার উপর নির্ভর করে। কিন্তুু যখন কোনো দেশের এই কর্মজীবীদের জন্য কর্মসংস্থান থাকে না বা থাকলেও তা জনসংখ্যা ও বেকারত্বের হারের চেয়ে অনেকাংশে কম হয়, তবে সে দেশ যে অর্থনৈতিকভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে সেটাই স্বাভাবিক। বেকারত্বের করাল গ্রাস যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ রুপে বাধাগ্রস্ত করে এবং দূর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে । বর্তমান বাংলাদেশও বেকারত্বের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বর্তমান বাংলাদেশের বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৭৭ হাজার জন বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান যে ২৬ লাখ ৭৭ হাজার জন এর মধ্যে ১০ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষিত তরুণ-তরুণী, যারা উচ্চমাধ্যমিক,স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস। আর ৪০ শতাংশ হলো অর্ধশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। বাংলাদেশের বেকারত্বের হারের দিকে তাকালে আমারা উচ্চশিক্ষিতদের বেশি দেখতে পায়। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ( আইএলও) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের বেকারের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। প্রতিষ্টানটি আরও আভাস দিয়েছে যে কয়েক বছরে তা দ্বিগুণ হয়ে ৬ কোটিতে দাঁড়াবে, যা মোট জনসংখ্যার ৩৯.৪০ শতাংশ হবে। ( আইএলও) র হিসেবটিকে পর্যবেক্ষকেরা বাংলাদেশের প্রকৃত বেকারের সংখ্যা মনে করে।

বাংলাদেশে একে তো বেকারত্বের সমস্যা তারমধ্যে নতুনমাত্রায় যুক্ত হয়েছে লকডাউন। কোভিড-১৯ ভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন শব্দটি বার বার উচ্চারিত হচ্ছে। ” কোনো জরুরী পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষকে কোনো জায়গা থেকে বের হতে না দেয়া কিংবা ওই জায়গায় প্রবেশ করতে বাধা দেয়াই হলো লকডাউন”৷ ২০১৯ সালের ৩১ এ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে কোভিড-১৯ সংত্রুমনের খবর পাওয়া যায়। এই ভাইরাস অতিদ্রুত ছড়ায়। আর দ্রুত ছড়ায় বলেই প্রতিটি দেশিই লকডাউনের পথে হাটে। বাংলাদেশও তার ব্যতিত্রুম নয়। আমাদের দেশেও ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ থেকে লকডাউনে যায় সরকার। লাকডাউনে অর্থনীতীতে নেমে এসেছে ধস। এই লকডাউনে সব থেকে বেশি সমস্যায় বেকাররা, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ, দিনমজুর ও সাধারণ মানুষ। এই সমস্যা গুলো আগে থেকেই ছিলো আমাদের দেশে তবে লকডাউনে সে গুলো মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। করোনা সংকট মোকাবিলায় অনেক প্রতিষ্ঠান, অফিস, গার্মেস, শিল্প-কারখানা গুলো কর্মী ছাঁটাইয়ের সিন্ধান্ত নেয় যা বেকারত্বের হারকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এই প্রতিষ্টান গুলোতেই কাজ করে আমাদের দেশের ৮০% মানুষ। আর একজন কর্মী ছাঁটাই এর মধ্য দিয়ে তার পরিবার সমস্যায় পড়ে, একজন বেকার এর সংখ্যা বাড়ে, এবং রাষ্ট্র একজন দক্ষকর্মী হারায়। যা কোনো দেশের জন্য কল্যানকর নয়। ( আইএমএফ) এর হিসেব মতে, চাকরি হারানো মানুষের সংখ্যা কম হবে না। সারা বিশ্বে যখন এই সমস্যা দেখা দিবে তার মধ্যে বাদ যাবে না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, চীন, ফ্রান্স, ব্রাজিল এর মতো বড় বড় দেশ। সেই দিকে তাকালে বেকারত্বের হারটা হবে অজানা।

বর্তমান কোভিড-১৯ ভাইরাস এর দিকে তাকিয়ে বেকারত্ব ও লকডাউন এর হিসেব মিলাতে গেলে জীবন ও জীবীকা হয়ে উঠে একে অপরের পরিপূরক। আমাদের বেকারত্ব থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া দরকার তেমনি লকডাউন ও স্বাস্থবিধি মেনে ঘরে থাকাটাও প্রয়োজন । সরকার বেকারত্বের সমস্যার সমাধান করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে এবং বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিল্প- কারখানা, গার্মেস শিল্প মালিকদের ও এগিয়ে আসতে হবে। শুধু যে চাকরি বা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে সমস্যার সমাধান করা যাবে তা না, নিজেদের ও উদ্দ্যেগ নিতে হবে। বর্তমান সময়ে তরুণ-তরুণীরা উদ্যেক্তা হওয়ার দিকে এগিয়ে আছে এবং তা দেখে বয়স্করাও অনুপ্রানিত হচ্ছে উদ্যেক্তা হওয়ার। উদ্যেক্তাদের দেখে অনুপ্রানিত হয়ে আরও ১০ জন যখন কাজে যুক্ত হচ্ছে তা থেকে কিন্তুু ওই ১০ জনিই বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাচ্ছে। আর তা থেকে সরকার ও অথনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। বর্তমান সময়ে অনলাইন ভিত্তিক সব কাজিই করা যায়, যে টা কিনা পেশা হিসেবেও নেয়া যায়। যা কিনা আমরা ঘরে বসেই করতে পারছি, তাতে আমাদের স্বাস্থবিধি মেনে ঘরে থাকাও হচ্ছে। মোটকথা বলা যায়, সরকারের প্রচেষ্টা ও আমাদের সহযোগিতাই পারে এই সমস্যার সমাধান করতে। কোভিড-১৯ভাইরাস এর জন্য বেকারত্বের হার অনেকাংশে বেড়ে গেছে ঠিকিই, তবে এই সমস্যা অনেক আগে থেকেই ছিলো। যার সমাধান একেবারে করা সম্ভব না। আমাদের সবার সহযোগিতাই পারে সমস্যার সমাধান করতে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করি, বাইরে যাই এবং নিজে সচেতন থাকি ও অন্য কে সচেতন করি কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
“দারিদ্র্য বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যের পর্যায়ে থাকবে এমন একটি বিশ্বের কথা কল্পনা করো। দেখবে একসময় তা সত্যিই হয়ে যাবে” ড.মুহাম্মাদ ইউনূস

মাহমুদা আক্তার
আনন্দ মোহন কলেজ অর্থনীতী বিভাগ

169 Views

আরও পড়ুন

নাগরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন আলো এর দাফন সম্পন্ন

দোয়ারাবাজারে বালিউড়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন

যৌথ-বাহিনীর কেএনএফ বিরোধী অভিযান বন্ধের দাবীতে রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ’র অবরোধের ডাক

রাজশাহীতে আদালতে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দুই বোন

রামুতে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের বাৎসরিক অগ্রগতি অবহিতকরন ও শিখন সভা সম্পন্ন।

হকনগর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি আনোয়ার ভুইয়া, কোষাধ্যক্ষ আলম মিয়া

টঙ্গী’তে সালাতুল ইসতিস্কা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ আদায়

হিটস্ট্রোকে এবার মৃত্যুবরণ করলেন পুলিশ সদস্য

সাংসদ আবদুচ ছালামের সাথে বোয়ালখালী প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের মতবিনিময়

জবি গ্রীন ভয়েসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

গরম নিয়ে চিফ হিট অফিসারের পরামর্শ

জানা গেলো ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ