শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি(বান্দরবান)থেকে::
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের রোপা আমন ক্ষেতে হঠাৎ ‘কারেন্ট পোকার’ আক্রমণে চাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলায় চলতি বছর রোপা আমন রোপণের নির্দিষ্ট লক্ষমাত্রা ছড়িয়ে গেলেও কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধান উৎপাদন বিপর্যয়ে আশঙ্কা করছেন কৃষক।ধান পাকা মাত্র কয়েক দিন বাকী-এমন সময় কারেন্ট পোকার আক্রমণে গাছ শুকিয়ে ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। গত রবিবার (২৭ অক্টোবার)উপজেলার বাইশারীসহ কয়েকটি ইউনিয়নের এলাকা ঘুরে মাঠ পরিদর্শন করে সরজমিনে দেখা যায়, ধান ক্ষেতের করুণ অবস্থা।অনেকে নষ্ট অংশ কেটে ফেলেছেন।
চাষীরা জানান, খুব ছোট ছোট কালো ধরনের পোকা ধানের বাইল ও গাছে ছেয়ে গেছে।স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তারা সময়মতো মাঠে লোক পাঠান না বলে অভিযোগ চাষিদের।
স্থানীয়রা জানান- এবছরের মত ধানের রোগ বালাই আর দেখি নাই। তবে দায়িত্বরত উপ-সহকারীরা (ব্লক সুপার-ভাইজাররা) নাইক্ষ্যংছড়ি সদর,রামু ও কক্সবাজার পরিবার নিয়ে থাকার ফলে বিষয় গুলো মোবাইল ফোনে জানাতে হয়। তারা সময়মতো ব্লকে আসতে কালক্ষেপন করলে কৃষকের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে।
বাইশারী ইউনিয়নের কৃষক আবদুর রশিদ জানান, জানান, তিনি ২ একর জমিতে চাষাবাদ করেছে ফলন ও ভাল হওয়ার পথে। কিন্তু বর্তমানে পোকার আক্রমনে তিনি সর্বশান্ত হয়ে গেছে। দির্ঘ দিনের কৃষি কাজের মান তিনি ধরে রাখতে পারে নাই। সোনালি ফসল ঘরে তোলা হবেনা বলে কান্নায় ভেংগে পড়েন। ছেলে মেয়ে সংসারে কি হবে আগামীতে তিনি চিন্তায় চিন্তায় দিন যাপন করছেন।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমি সাপ্তাহ ধরে ট্রেনিং এ আছি তবে বিভিন্ন মাঠে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা চাষীদের সঙ্গে কাজ করছেন।পোকা দমনে বিভিন্ন ওষধ স্প্রে করা হচ্ছে।সাপ্তাহর মধ্যেই এর প্রতিকার হবে বলে তিনি আশা করছেন।
সদর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম রাজীব জানান, এটাকে মূলত বাদামী গাছ ফড়িং বলা হয়।কিন্তু চাষীরা কারেন্ট পোকা হিসেবেই জানেন।মূলত বর্তমান আবহাওয়া পোকার অনুকূলে। যে কারনে তারা দ্রুত আক্রমণ করতে সক্ষম হচ্ছে। তবে সব কৃষককে এক সঙ্গে পরার্মশ দেওয়া হচ্ছে এবং ওষধ স্প্রে করলে ৫-৬ দিনের মধ্যে পোকা দমন সম্ভব।
বাইশারী ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষিম
অফিসার রফিকুল আলম জানান- উপজেলার প্রত্যক ইউনিয়নে ধান ভাল হয়েছিল। তবে পোকার আক্রমনে কিছু কিছু ধান নষ্ট হয়েছে। তবে বিষয়টি শুনার সাথে সাথে তিনি ধান ক্ষেতে গিয়ে কৃষকদের পোকা দমনে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আর বাকী ধান যেন পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় সে দিকে কৃষি কর্ম কর্তারা সজাগ দৃষ্টি রেখেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩ শত ৩৪ হেক্টর জমি। সে অনুযায়ী উক্ত লক্ষ্যমাত্রায় রোপা আমন আবাদ করা হয়েছে।
—————–