————
বছরের পরিক্রমায় বিশ্ববাসীকে ইবাদত ও তাকওয়া অর্জনের সুযোগ দানে আমাদের মাঝে উপস্থিত হচ্ছেন রামাদান।পবিত্র রামাদান মাসে সিয়াম পালনের মাধ্যমে আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য এক অপূর্ব সুযোগ।
আল্লাহ যেমন সিয়াম পালনকারীদের রাইয়ান নামক বেহেস্তের দরজা দিয়ে প্রবেশ করাবেন তেমনি ইবাদত বন্দেগিতে সত্তর গুণ বেশি সওয়াব দান করবেন।সিয়াম মানুষের যাবতীয় অন্যায় কাজে বাঁধা প্রদান করে।সিয়াম পালনের মাধ্যমে মানুষ অভাবী মানুষের খুদার কষ্ট অনুধাবন করতে পারে।
সারাদিন সিয়াম রাখার মাধ্যম বুঝতে সক্ষম হয় অভাবী মানুষের অনাহারে থাকার কষ্টের কথা।
ধনীরা যাকাত প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের সম্পত্তির পবিত্রতা রক্ষা করতে পারেন ও তাদের উপর অর্পিত গরীবের হকও আদায় হয়ে যায়।
ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ ভুলে ভালো কাজের নিয়তে এক কাতারে দাঁড়ানোর অপূর্ব সময় এই রামাদান।
রামাদানের সালাত জামাতবদ্ধ হয়ে আদায় করার মাধ্যমে বিশ্বভ্রাতৃত্বের নির্দশন স্থাপিত হয়। ভালো কাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর অশেষ নেকি হাসিল করার সুযোগ পেয়ে থাকি।
রামাদানে আল্লাহ সকল কিছুতে বরকত দান করেন যার ফলে আমাদের হালাল রিজিক আরো ফজিলতপূর্ণ হয়ে উঠে।
রামাদানের পবিত্রতা রক্ষার জন্য আমাদের সকলকে আন্তরিকতার সহিত ইসলামের যাবতীয় বিধিবিধান মেনে চলতে হয়।
ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে কাটানো প্রতিটা তিন আল্লাহর দরবারে মর্যদাবান হয়ে উঠে।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো আল্লাহ তায়ালা রামাদানকে বরকতময় করে সাজালেও মানুষ অনেকটা বিবেকহীনতার পরিচয় দিতে কুণ্ঠিত করে না।
আল্লাহ নিজে রামাদানকে পবিত্রতার চাদরে আবেশিত করলেও মানুষরা নানা ভাবে তা নষ্ট করে ফেলে।
রামাদানে দিনেদুপুরে রেঁস্তোরায় বেচাকেনা করে একদল নৈতিকতাশূন্য মানুষ।
তারা আল্লাহর হুকুমকে অমান্যকারী মানুষকে খাবার বিক্রি করে নিজেও গুনাগার হয়ে যায়।
রামাদানে সবচেয়ে খারাপ কাজ করে ব্যবসায়ীরা তারা জিনিসপত্র গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেন।
আবার নিম্নমানের খাবার সামগ্রী ভালো মানের খাবারের সাথে মিশিয়ে বিক্রি করে থাকেন।
অনেকে আবার ইফতার তৈরিতে ভেজাল দ্রব্যাদি মিশ্রিত করে বিক্রয় করেন,ভাজাপোড়া খাবারে পোড়া তেল ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দেন।
রামাদান পবিত্রতার সুমহান বার্তা নিয়ে আসলেও আমরা বিবেকহীনদের মতো নানা ভাবে অপবিত্র করছি বরকতময় রামাদানকে।
আসুন আমরা নিজেদের পরিবর্তন করে নেই,
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমাদের সিয়াম পালন হউক।আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে রামাদানের পবিত্রতা রক্ষা করতে পারি।
নীতিবিগর্হিত কাজ পরিত্যাগের মাধ্যমে আমরা পারি আল্লাহর অশেষ নেকি হাসিল করতে।
রামাদানের বরকতময় দিনগুলোতে আমরা সর্বোচ্চ আমাদের নৈতিকতা চর্চার দিকে নজর দিতে হবে।
আমরা যথার্থ নিয়মে যাকাত পরিশোধ করবো,হালাল রিজিক অন্বেষণ করার মাধ্যমে হালাল খাদ্য গ্রহণ করবো,ভেজাল দ্রব্য বেচাকেনা থেকে বিরত থাকবো।
মানুষের সাথে মার্জিত বাক্য বিনিময়ে আলাপচারিতা করবো।
পরিশেষে বলবো আমরা রামাদানের ফজিলত লাভ করতে হলে আমাদের সংযমী ও নৈতিকতা চর্চা করতে হবে।তবেই আমরা আল্লাহর নেয়ামতে নিজেদের সামিল করতে পারবো।