পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, পাকিস্তানের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা আগামী ৫ বছরের মধ্যে সুদমুক্ত ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় পরিণত হবে। এ লক্ষ্যে তিনি ব্যাঙ্কিং খাতকে ইসলামি ব্যাঙ্কিংয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচারের আহ্বান জানিয়েছেন। করাচিতে ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে এক সেমিনারে সুদ-মুক্ত ব্যাংকিং সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন ইসহাক দার।
গত এপ্রিল মাসে, পাকিস্তানের ফেডারেল শরিয়া আদালত (এফএসসি) প্রচলিত সুদভিত্তিক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে শরিয়া-বিরোধী বলে ঘোষণা করেছিল। একই সঙ্গে সরকারকে সুদমুক্ত ব্যবস্থার অধীনে সমস্ত ঋণ সুবিধা দেওয়ারও নির্দেশ দেন। সে সময় আদালত রায়ে বলেছিল, কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারগুলোকে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক আইন সংশোধন করতে হবে এবং নির্দেশ জারি করতে হবে, দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা ২০২৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সুদমুক্ত হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি পরবর্তী সময়ে শরিয়া আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিল। তবে নভেম্বরের শুরুতে ইসহাক দার এক ঘোষণায় বলেছিলেন, শরিয়া আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে করা আপিল প্রত্যাহার করা হবে। পাশাপাশি পাকিস্তানে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি ইসলামিক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে সরকার। সরকার বিদ্যমান ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে সুদমুক্ত করতে কাজ করছে উল্লেখ করে সেমিনারে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামিক ব্যাঙ্কিংয়ে আগ্রহ রয়েছে আমাদের সরকারের। তবে বলব না, আমরা এটি অর্জন করে ফেলেছি।
’ এ সময় তিনি জানান, ২০১৩-১৭ সালে মীজান ব্যাঙ্কের মাত্র ১০০টি ইসলামি ব্যাঙ্কিং শাখা ছিল, যা বর্তমানে এক হাজার ছাড়িয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইসলামি ব্যাঙ্কিংয়ের পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ড, মূলধন তহবিল ও বীমা ব্যবসাকেও ইসলামিক শরিয়ার আওতায় আনতে হবে। এ লক্ষ্যে তিনি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে এই বিষয়ে ইতিবাচক পদ্ধতিতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। পুরো পদ্ধতি পাঁচ বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা যাবে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, শরিয়া আদালতের রায়ের আগেই সরকারের এই পথে হাঁটা উচিত ছিল।