রফিকুল ইসলাম জসিম: শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.এসসি.ইন এগ্রিকালচার (অনার্স) এ ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মণিপুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়া জান্নাত৷
আজ শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে এ তালিকা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে দেশের আটটি কৃষি ও কৃষিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়েছে। মেধা তালিকায় ( উপজাতি/আদিবাসী কোটা) মেধাক্রম ৮ এ’তে সুমাইয়া জান্নাত নাম উল্লেখ রয়েছে।
জানা গেছে, সুমাইয়া’র বাবা মোঃ মোহিরুজ্জামান
সরকারি চাকুরিজীবী ও মা বশিরা বেগম কিশলয় শিশু কিশোর শিক্ষালয় কেজি স্কুলের শিক্ষিকা। ইসলামপুর পি.এম.পি উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি ৪.৬৭ ও মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। মণিপুরি মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়ে ভর্তি চান্স পাওয়ায় অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সুমাইয়া বলেন, ছোট বেলায় একজন কৃষিবিদ হাওয়ার ইচ্ছা আমার ছিল। বড় হয়েছি কৃষি অঞ্চলের গ্রামের প্রকৃতি পরিবেশে৷ এখানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি এটাই সবচেয়ে ভালো লাগার জায়গা। এছাড়া বাবা-মার দোয়ার সঙ্গে লেখাপড়ার বিষয়ে দিক নির্দেশনাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুরু থেকেই আমার বোন আনিকা ইয়াসমিন গাইড করেছে।
তিনি আরো ও বলেন, প্রাথমিক থেকে কলেজ পর্যন্ত আমার অন্যান্য শিক্ষকদের স্নেহ, ফ্যামেলি বন্ধুবান্ধব এবং আমার কোচিং সেন্টারের ভাইয়াদের দোয়া আমাকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আমার ভার্সিটি লাইফটা সুন্দর হয়, ভালো রেজাল্ট করতে পারি এবং দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারি।
সুমাইয়া মা বলেন, আমার জীবনে একটাই চাওয়া ছিল আমার মেয়েদের বড় করে উচ্চশিক্ষা অর্জন করা। সেই চাওয়া এখন পূরণ হতে চলেছে। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবন যেন আরও সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত হয় সেজন্য সবাই দোয়া করবেন ।
সুমাইয়া জান্নাতের বাবা মনিরুজ্জামান বলেন, গ্রাম থেকে লেখাপড়া করে এতো ভালো করবে এটা ভাবতেই পারিনি। অনেক আনন্দ লাগছে, আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া। তিনি আরও বলেন, সুমাইয়ার মা সারাদিন চাকরি করে প্রায় সারা রাত ওর পাশে জেগে বসে থাকতো। এতদিনের কষ্টের শেষে ওদের আনন্দেই আমার বুক ভরে যাচ্ছে।
জানা যায়, কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলেন ৭৯ হাজার ১৯৫ জন। ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন ৬৫ হাজার ৩৫৪ জন। আর পরীক্ষার জন্য আবেদন করেও হলে যাননি ১৩ হাজার ৮৪১ জন। পরীক্ষায় ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। সে হিসেবে পাসকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৯৮৫ জন।
পরে গত ১০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট সাতটি কৃষি ও একটি কৃষিপ্রাধান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা হয়। এবারের গুচ্ছভর্তি পরীক্ষার নেতৃত্ব দিয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।