নির্মল এস পলাশ কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আগামীকাল ১২নভেম্বর মণিপুরী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব মহারাসলীলা অনুষ্ঠিত হবে।কার্তিকের পূর্ণিমা তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ উৎসব ঐতিহ্যবাহী জোড়া মন্ডপে মহাসমারোহে উদযাপিত হইবে ।এই মহারাসোৎসবে মণিপুরীদের সংস্কৃতির এক বিশাল মিলনমেলায় পরিণত হয়। রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে, রাস পূর্ব অনেক দিন আগেই উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুরের মণিপুরী পাড়া সমুহে চলছে প্রস্তুতি ও উৎসবের আমেজ। রাসমন্ডপ ও উৎসবস্থানকে সাজানো হয়ে থাকে ঐতিহ্যগত সাজে। এবারে মাধবপুর জোড় মন্ডপে পূর্ণ হচ্ছে ১৭৭ তম রাস উৎসব। আদমপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৩৪তম মহারাসলীলা। মাধবপুরে মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া সম্প্রদায় মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘ এবং আদমপুরে তৈতৈ সম্প্রদায় মহারাস উৎসব উদযাপন কমিটির আয়োজনে রাস উৎসব এর আয়োজন করা হয়েছে।
আদমপুরে এ বছর পাশাপাশি দুটি স্থানে আদমপুর সনাই ঠাকুরের মন্ডপ ও মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সে রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানেও থাকবে রাখাল নৃত্য ও রাসলীলা। তবে মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরী মৈতৈ পৃথক পৃথক স্থানে আয়োজন করলেও উৎসবের অন্ত:স্রোত, রসের কথা, আনন্দ-প্রার্থনাা সব একই। উৎসবের ভেতরের কথা হচ্ছে বিশ্বশান্তি, সম্প্রীতি ও সত্য সুন্দর মানবপ্রেম।
রাস উৎসব আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্র প্রথম মণিপুরে শ্রীশ্রীমহারাসলীলা বা রাসমেলা প্রবর্তন করেছিলেন। ‘রাস’ শব্দটা এসেছে জগৎপতি কৃষ্ণের ১২ ধরনের রস থেকে। এই রাসের সঙ্গে মেলা যুক্ত হয়ে ‘রাসমেলা’ হয়েছে। তবে ১২টি রসের মধ্যে রাসলীলায় মূলত সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর এই তিনটি রসের উপস্থাপনই হয়ে থাকে। উৎসবটা মণিপুরী সম্প্রদায়ের হলেও এটি এখন ধর্মীয় গন্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত মনিপুরী সংস্কৃতির বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। উৎসবকে সফল করতে প্রায় মাস খানেক সময় ধরে রাসনৃত্য এবং রাখালনৃত্যের প্রশিক্ষণ ও মহড়া পরিচালিত হয়।
মাধবপুর ও আদমপুরে রাসমেলার আয়োজকরা জানান, মহারাসলীলাল মূল উপস্থাপনা শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে ‘গোষ্ঠলীলা বা রাখালনৃত্যে’র মধ্য দিয়ে। গোধূলি পর্যন্ত চলবে রাখালনৃত্য। রাত ১১টা থেকে পরিবেশিত হবে মধুর রসের নৃত্য বা শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ। এই রাসনৃত্য ভোর (ব্রাহ্ম মুহূর্ত) পর্যন্ত চলবে। মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, আমাদের কাছে হেমন্তকাল মানেই রাসপূর্ণিমা, রাসউৎসব।‘আমাদের সকল আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।রাসলীলায় আগত ভক্তবৃন্দকে রাস দর্শন ও উৎসব সুন্দরভাবেই সম্পন্ন করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।