আলহাজ্ব বুলবুল চৌধুরী, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
হেমন্তের মৃদু বাতাসে উত্তরের খাদ্য ভান্ডার হিসাবে পরিচিত নওগাঁয় মাঠ গুলোতে সোনালী শীষে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন। মাঠে নতুন ফসলের ঘ্রান ছড়াচ্ছে আমনের পাকা ধান। চলতি মৌসুমের ধান ঘরে তুলতে কাটা মাড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাষিরা। ক’দিন পরেই নতুন ধান-চালে ভরে উঠবে কৃষকের গোলা।
এদিকে মাঠের ফসল দেখতে শনিবার দুপুরে নওগাঁর নিয়ামতপুরে যান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। মন্ত্রী ধানক্ষেতের মধ্যে কিচ্ছুক্ষন ঘুরে দেখেন এবং চাষিদের সাথে কথা বলেন। চলতি আমন ফসল ছাড়াও অন্যান্য চাষাবাদ ও গ্রামীন অর্থনীতির খোঁজ খবর নেন।
ফসল দেখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই পুরোদমে শুরু হবে আমন ধানের কাটা মাড়াই। এরমধ্যে যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করতে না হয়, তাহলে বাম্পার ফলন ঘরে উঠবে। বিঘা প্রতি ২২থেকে ২৫মন পর্যন্ত ফলন হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
এসময় চাষিদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত ফসলে লাভবান করতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে প্রথম বারের মত সরকারী ভাবে ৬লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২৬টাকা কেজি দরে ২০নভেম্বর থেকে সারাদেশে একযোগে সরাসরি প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হবে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় কৃষি বিভাগ থেকে চাষি তালিকা সংগ্রহের কাজ চলছে।
সারাদেশে এবার আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি মেট্রিক টন। বাম্পার ফলন হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিক খেয়াল রেখেই সরকারী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। ধানের পাশাপাশি সরকারী ভাবে সাড়ে ৩লক্ষ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ৫০লক্ষ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে। সরকারী গুদামে ধান-চাল সরবরাহে কোন ভাবেই মধ্যস্বত্ত্বভোগী, দালাল চক্র কিংবা দলীয় নেতা স্থান পাবে না এমন প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সরাসরি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এসময় তাঁর সাথে ছিলেন নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটোওয়ারী, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে খাদ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেন স্থানীয় চাষিরা। কৃষকরা বলেন- এবার ধানের ফলন ভাল হয়েছে। সরকারী ভাবে বেঁধে দেওয়া দরে তারা খুশি। তবে এই দর খোলা বাজরেও নিশ্চিত করার দাবি তুলে ধরেন। এজন্য নজরদারী বাড়ানোর কথা বলেন চাষিরা। গেল বোরো মৌসুমে বাজার দর কম পেয়ে অনেক চাষিকেই লোকসান গুনতে হয়েছে। সেই ক্ষতি এবার পুষিয়ে নিতে চান তারা।