এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের পর এলাকাবাসীর থানা ঘেরাওয়ের প্রেক্ষাপটে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় গ্রামবাসীকে যেন হয়রানি না করা হয়, তা নিশ্চিত করতে রংপুর মহানগর পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ সময়ের মধ্যে ভিসেরা রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
গত ৩ নভেম্বর রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া ময়নাতদন্তের রিপোর্টও দাখিল করতে বলা হয়। একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আদালতের আদেশে দাখিল করা হয়েছে।
তাজুলের মৃত্যুর ঘটনায় মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন আঘাতের চিহ্ন নেই উল্লেখ করা হয়েছে। তার কাছে পাঁচ গ্রাম হেরোইন পাওয়া গিয়েছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তাজুলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ২ নভেম্বর তা জানতে চান হাইকোর্ট। ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ বিষয়ক প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান তিনি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় পুলিশি নির্যাতনে তাজুল ইসলাম মৃত্যুর ঘটনা আদালতে নজরে এনে বলেন, এটি এতই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যে, দায়ীদের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিতে পারেন। কারণ, সংবিধানে প্রত্যেকটা নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তারপরও কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে? সর্বোচ্চ আদালতকে এ ধরনের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা হাইকোর্ট দিয়েছেন।
গত ১ নভেম্বর রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হারাগাছের নতুন বাজার বছি বানিয়ার তেপতি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাজুল ইসলাম উপজেলার হারাগাছ নয়াটারী দালালহাট গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশের দাবি, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নয়া বাজার বছি বানিয়ার তেপতি থেকে তাজুল ইসলামকে মাদকসহ আটক করা হয়। এ সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে পালানোর চেষ্টা করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ মারধর করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তাজুল ইসলাম। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা ইটপাটকেল ছোড়ার পাশাপাশি পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।