রফিকুল ইসলাম জসিম
জীবনের প্রথম পর্বে ঘটে যাওয়া ছোট একটি ঘটনা
আজও আমার মনে অসীম প্রভাব বিস্তার করে আছে। আমার জীবনের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে রইল হাজারো দিনের মাঝে একটি দিন তাহলো শেষ বোঝাপড়া।
সেদিনের পর বাড়ী থেকে বের হতে ইচ্ছা করতো না৷ জীবনের এমন পরিস্থিতিতে কাউকে ভালোবাসা করা উচিত? নিজেকে করা এমন প্রশ্নের উত্তর মেলে না। তার সঙ্গে মুখোমুখি হাওয়ার তীব্র ইচ্ছাটা দমন করে রেখেছিলাম৷ এতে নিজেকে খুব অপরাধী লাগতো। ভাবতাম, চুপচাপ স্বভাবের মেয়েটাকে কেন ভালোবাসা সাহসী করলাম৷
পাড়ার একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রথম দেখার পর লীজার প্রেমে পড়লাম। তখন লিজার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। ওই সময়ে লিজাকে দেখে কেন জানি আমা’র মনের ভায়োলিন বেজে উঠেছিল। ওর চেহারা ওর হাসি আমার ওর ওপর খবরদারি, সবকিছুতে আর্কষণ করত ।
শেষ বোঝাপড়া পর, সেই মানুষটার সাথে কয়েক মাস ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এখন যে পরিমান মনে কষ্টে দিন যায়, তা লিখে বুঝানো যাবে না৷ ওর ভালোবাসা পেতে কত কষ্ট করেছিলাম৷ কিন্তু ও ছিল খুব নিষ্ঠুর। আমি যেন এই সমাজের বঞ্চিত মানুষ। শত কর্মব্যস্ততায় সেদিনের কথা গুলো মনে পড়ে এখনো।
লীজার প্রেমে পড়ে প্রথম কছুদিন সুখী ছিল ৷ আবেগ আর রঙিন ঘোর কেটে যাওয়ার পর সুন্দর সম্পর্কটা আর থাকে না। অনেকটা পুকুরের স্রোতহীন পানির মতো। বর্ষাকালে পূর্ণ থাকে, গীষ্ম এলেই শুকিয়ে যায়৷ তবুও আমি কখনো তোমাকে অভিশাপ দেব না লীজা। মহান আল্লাহ তাআলা পাকের কাছে দোয়া করছি এবং মন থেকে বলছি, আল্লাহ তোমাকে যেন চিরস্থায়ী সুখে রাখেন৷ আর অতীতে সব গল্প ভুলে গিয়ে সে নিজে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলো৷
নিত্যদিনে কারণে অকারণে মাঝে মাঝে লীজার সঙ্গে প্রায় দেখা হয়। তবুও আগের মতো এখন আর হয় না৷ ওকে দেখলে পুরানো স্মৃতি গুলো আবার ফিরে আছে। কী চমৎকার আমাদের বোঝাপড়া, মনে হয় দুজনই অপরিচিত, নেই কোনো কথাবার্তা, দুচোখে আর ফিরে তাকায় না৷ এত মান, অভিমান। আজ মনে হয়, সে অনেক বদলে গেছে, তার পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে না করে পারিবারের সিদ্ধান্ত মতে মেনে নিবে৷
সত্যি কথা বলতে যেটা এর আগে কাউকে এমন করো ভালোবাসেনি । শেষ বোঝাপড়ার আগে ওই সময় আমি তার স’ঙ্গে যোগাযোগ করি। লিজা গৃহবন্দী হয়৷ ওই সময়টা আমি তাকে বলে ফেলি, লিজা আমি তোমাকে খুব মিস করছি। আমি মনে হয় তোমাকে ভালোবেসে ফে’লেছি, অ্যান্ড আই লাভ ইউ।
হঠাৎ কোন ঝটকা বাতাস এসে সেই দিন সাজানো স্বপ্নগুলো নিভিয়ে দিয়ে যায়৷ জীবন থেমে যেতে পারত সেখানেই। কিন্তু না, শেষ পযন্ত বেঁচে আছি আল্লাহর অসীম করুণাতে। আমার এই ভালোবাসা নামহীন সূত্রবিহীন ভালোবাসা৷ এ ভালোবাসায় চাওয়া পাওয়া বিনিময় ছিল না৷ কোনো প্রেমিক পারে তার প্রথম ভালোবাসার মানুষকে ভালো না বেসে থাকতে? প্রতি মূহুর্তে তাকে মনে পড়ে৷ সেদিন বোঝাপড়া পর থেকে আমি ঘরহারা এক ঝড়ের পাখি৷
লিজা একজন যোগ্য বাবা মায়ের সুকন্যা । আমার দেখায় সে একজন আদর্শ নারী। সে তার মা বাবাকে অত্যন্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে। আজকের এই স্বার্থপর পৃথিবীতে ক’জন আর মা বাবার কথা মনে রাখে? সে কখনো বাবা মায়ের অমতে, চোখের আড়ালেও কোন অমান্য কাজ করে না৷ আমি মনে করি, যে ব্যাক্তি তার মা বাবাকে সম্মান করে, ভালোবাসে, সে পৃথিবীর সবাইকে সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসতে জানে৷
বিদ্র: এই গল্পটি সম্পন্ন কাল্পনিক। কারো চরিত্র মিল খুঁজে পেলে এজন্য আন্তরিক দুঃখিত।