রংপুর ব্যুরো:
রংপুরে অভিযান চালিয়ে তিন হাজার ৪০ কেজি (৫২ বস্তা) পলিথিন জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যার বাজার মূল্য প্রায় সোয়া নয় লাখ টাকা। নিষিদ্ধ পলিথিন সরবরাহ ও গুদামে মজুত করায় চার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে মামলা হয়েছে।
সোমবার (২২ মার্চ) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান।
তিনি বলেন, রংপুরে পলিথিনের উৎপাদন, গুদামজাতকরণ ও বিক্রয় কার্যক্রম প্রতিরোধে রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নবাবগঞ্জ বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে চারটি দোকান ও গোডাউনে মজুত করে রাখায় তিন হাজার ৪০ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য নয় লাখ ১২ হাজার টাকা।
অভিযানে ব্যবসায়ী ওবায়দুল ইসলামের নয়ন স্টোর এবং আমান উল্ল্যাহ খানের গোডাউন থেকে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকার করে ২৪০০ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। একই বাজারের ফরিদের গোডাউন থেকে এক লাখ ৪৪ হাজার টাকার ৪৮০ কেজি এবং আবু তাহেরের গোডাউন ঘর থেকে ৪৮ হাজার টাকার ১৬০ কেজি পলিথিন জব্দ হয়।
সহকারী পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেন পরিদর্শক সালেহ আহমেদ পাঠান, এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ, এসআই গোলাম মোর্শেদ, এসআই তছলিম উদ্দিন আহমেদ, এসআই নাজমুল ইসলাম, এসআই আবু ছাইয়ুম তালুকদার, এসআই লাকু সরকার এবং পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিনিধি।
মুত্তাকী ইবনু মিনান বলেন, পলিথিনের মালিক ও অপরাধে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে মামলা করা হয়েছে। পরিবেশ দূষণরোধ ও সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এর আগে ১৮ মার্চ রংপুুুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধার নেতৃত্বে নবাবগঞ্জ বাজারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে আট দোকানের মালিককে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। সঙ্গে পাঁচ টন পলিথিন জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
২০০২ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকা এবং একই বছর ৮ এপ্রিল সারাদেশে এইচডিপিই (হাইয়ার ডেনসিটি পলি ইথালিন) পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধনী ২০১০) অনুযায়ী নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণের অপরাধে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে বিধান আছে।
আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় বর্তমানে পলিথিনের বিক্রি ও ব্যবহার কমছে না। ফলে নিত্যপণ্যের বাজারে পলিথিনের আধিপত্যে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। এমনকি পলিথিন ব্যাগে করে খাবার আনা-নেওয়া, হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে গরম খাবার বহন করা, ফ্রিজে পণ্য রাখতেও ব্যাপকভাবে পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে।