কাইমুল ইসলাম ছোটন
‘অন্ধ ব্যক্তি সমাজের বোঝা নই, অাধুনিক যুগে তাদের চলাফেরা হবে অাধুনিকময়’ – এই অাশা নিয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের চলাফেরায় দিকনির্দেশনা প্রদানকারী যাবতীয় সুবিধা সম্পন্ন আধুনিক ‘ব্লাইন্ড স্টিক’ উদ্ভাবন করেছেন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) মেডিকেল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তন্ময় রায়।
বিভাগের শেষ বর্ষে সাত মাসের প্রচেষ্টায় বিভাগীয় বিষয়ের অংশ হিসেবে এই অসামান্য কাজটি করেন তন্ময় রায়।
এমন উদ্ভাবন দেশে প্রথম।
তন্ময় রায় উদ্ভাবনী ব্লাইন্ড স্টিক সম্পর্কে বলেন, এর মধ্যে থাকা আল্ট্রা সনোমিটার ফিচারের মাধ্যমে চলার পথে যেকোনো বাধা অন্ধ ব্যক্তি ১-২ ফুট দূর থেকে সহজেই বুঝতে পারবে। হারিয়ে গেলে অবস্থান নির্ণয়ের জন্য রয়েছে জিপিএস ফিচার।
তন্ময় রায় অারো বলেন, ব্লাইন্ড স্টিককে আরও আপডেট করতে যুক্ত করা হয়েছে ওয়াটার সেন্সর, পালস সেন্সর ও ইমারজেন্সী বাটন ফিচার। ওয়াটার সেন্সরের মাধ্যমে অন্ধ ব্যক্তির পথে পানি জমে থাকলে তা বুঝা যাবে, ব্লাইন্ড স্টিক তাকে সংকেত দিবে। পালস রেট মাপা ও যেকোনো বিপদে কল বা বার্তার মাধ্যমে সাহায্যের জন্য কাজ করবে বাকি দুটি ফিচার।
জানা যায়, প্রতিবন্ধীদের চলাফেরায় নির্দেশনা প্রদানকারী অাধুনিক সুবিধা সম্পন্ন এই ‘ব্লাইন্ড স্টিক’ তৈরীতে প্রায় সতেরো (১৭) হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
এই ব্যাপারে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে তন্ময় বলেন, একদিন এক অন্ধ লোককে রাস্তায় হাঁটতে দেখি। অন্য এক লোকের সাথে ধাক্কা লাগায় অন্ধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হয়।যা অামাকে খুব কষ্ট দিয়েছে।
তাই অন্ধ ব্যক্তির জন্য কিছু করতে পেরেছি বলে আমি অত্যন্ত খুশি। অামরা বুঝাতে চেষ্টা করব, অন্ধ ব্যক্তিরা সমাজের বোঝা না। তাদেরও ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। এই ডিভাইসটি সেক্ষেত্রে কিছুটা হলেও আলোর পথ দেখাবে।
কাজটি শেষ করতে সহায়তা করেছেন, বিভাগের সাবেক প্রধান ও প্রজেক্টের সুপারভাইজার ড. গোলাম আবু জাকারিয়া, বর্তমান বিভাগীয় প্রধান ড. হাসিন অনুপমা আজহারী, কো-সুপারভাইজার নাজমুল আলীম। তাছাড়া এ কাজ সফল করতে সাহায্য করেছেন তার সহপাঠী মাহবুব আল মামুন ও উজ্জ্বল সরকার নামক একজন পরামর্শক।
তন্ময় রায় সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং দেশবাসীর দোঁয়া চেয়েছেন ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।