এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার রহমানের বিরুদ্ধে চলতি বছরের বরাদ্দকৃত স্লিপ, প্রাক, ম্যানটেনেজ ও ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র অবস্থিত বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার রহমান স্কুলে অনিয়মিত উপস্থিতি ও অবহেলার কারণে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের কোমলমতি ছেলে মেয়েরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়ে ঝরে পড়ছে।
অপরদিকে চলতি বছরের সরকারি বরাদ্দকৃত স্লিপ ৭০ হাজার, প্রাক ১০ হাজার ম্যানেটেনেজ ৪০ হাজার ও ক্ষুদ্র মেরামত ২ লাখ টাকার প্রকল্পের আওতায় মোট ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দকৃত কাজ বিদ্যালয়ের ভবনের দুই কক্ষের মেঝে অংশিক মেরামত, রং করণে মাত্র ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার কাজ করে কাগজে কলমে শতভাগ দেখিয়ে মনগড়াভাবে ভাউচার তৈরি করে শিক্ষা অফিসে জমা দিয়ে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (এটিও) হৃদয় কৃষ্ণ বর্মণের সাথে যোগসাজশ করে ফায়দা লুটিয়ে নিয়েছেন। ফলে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান ও সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।
বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক শাহানাজ পারভীন, শিল্পী রাণী সরকার, লুতফা খাতুন, হোসনেআরা বেগম এবং শিক্ষার্থী ২২৬ জন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেফালি বেগম।
প্রতিষ্ঠানে গতকাল বুুধবার দুপুর ২টা ২০মিনিটে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। সহকারী শিক্ষক শাহানাজ পারভীন, শিল্পী রাণী সরকার, লুতফা খাতুন, হোসনেআরা বেগমের সাথে কথা হয়। প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ফুলবাড়ী উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাত প্রশিক্ষণে আছি।
প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার রহমান স্লিপ, প্রাক, ম্যানটেনেজ ও ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পে বিষয়ে আরো তিনি বলেন, সরকারি প্রকল্পের কাজে কিছু অনিয়ম থাকতেই পারে। কারণ শিক্ষা অফিস ও ফুলবাড়ী এলজিইডি অফিসকে ম্যানেজ করে কাজ করতে হয়েছে।
বালারহাট এলাকার একাধিক স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা বলেন, বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার রহমান বাড়ী এলাকার স্কুলে যোগদান করার পর থেকে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল অসন্তোষজনক ও স্থানীয় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চাকরি করে আসছেন। এবারের সরকারি বরাদ্দকৃত স্লিপ, প্রাক, ম্যানটেনেজ ও ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুলের দুটি রুমের মেঝের ছোট ছোট ভাঙ্গা প্লাষ্টার ও রং করণ কাজ করছে মাত্র। এই কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, স্লিপ, প্রাক, ম্যানটেনেজ ও ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পে তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়ম পরিলিক্ষত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রংপুর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াহাব বলেন, বিদ্যালয়ের স্লিপ, প্রাক, ম্যানটেনেজ ও ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পে কোন অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে অনিয়মিত উপস্থিতি ও অবহেলায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিতসহ চলতি বছরের বরাদ্দকৃত স্লিপ, প্রাক ও ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করে অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয় রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উক্ত এলাকাবাসী।