মো: আল আমিন হোসেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
অঙ্কুরিত স্বপ্নের বায়না নিয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। মেধা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পা’ রাখলেও অবশেষে স্বপ্নপূরণ করে বের হতে পারেনা অনেকে। অনেকের নিথর দেহ বের হয় স্বপ্নের ক্যাম্পাস থেকে আর অঙ্কুরিত স্বপ্নগুলো অঝোর কান্নার সুর তুলে ক্যাম্পাসের আনাচকানাচে।যে বয়সে একটি ছেলেকে লালিত স্বপ্নের উপযুক্ত পরিচর্যা করার কথা, সে বয়সে ছাত্ররাজনীতির করাল গ্রাসে নিথর দেহে ফিরতে।
সদ্য ক্যাম্পাসে ‘পা’ রাখা ছেলেটাও ছাত্ররাজনীতিতে প্রবেশ করে ক্ষমতার দাপট দেখায়। নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন দলের ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়ে। অঙ্কুরিত স্বপ্নগুলোকে চাপা দিয়ে ছাত্ররাজনীতির নামে ক্ষমতার অপব্যবহারে মেতে উঠে। শিক্ষাঙ্গনে একাধিক ছাত্ররাজনীতির সংগঠনগুলো নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বিভিন্ন দাঙ্গাহাঙ্গামার সৃষ্টি করে। অনেকে রাজনৈতিক পরিচয়ে মাদকের মতো মরণ নেশায় আসক্ত হয়ে যায়। বিভিন্ন ঘটনাকে ইস্যু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলে। এই দাঙ্গাহাঙ্গামার কবলে পড়ে অকালে প্রাণ হারায় অনেকে। শিক্ষাঙ্গনে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা, শিক্ষার স্বভাবিক কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি হয়। ফলে সেশনজটের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় শিক্ষার্থীদের। তাদের ক্ষমতার দাপটে শিক্ষকসহ সাধাররন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবসময় এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করে। সাধারন শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের কাছে অসহায় হয়ে পড়ে। সম্প্রতি আমরা দেখতে পাই, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ ছাত্ররাজনীতির কবলে পড়ে খুন হয়।দেখা যায় আবরার ফাহাদের খুনের সাথে জড়িত প্রায় সবাই ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত।ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস বিশ্লেষন করলে দেখা যায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলো তাদের ক্ষমতার দাপট দিয়ে শিক্ষাঙ্গনগুলোকে উত্তপ্ত করে রাখে। এভাবে যদি শিক্ষাঙ্গনগুলো চলতে থাকে তাহলে দেশ একদিন মেধাহীনতায় ভুগবে। তাই সরকার ও শিক্ষানীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি একটি জাতিকে সুশিক্ষিত করার প্রধানকেন্দ্র শিক্ষাঙ্গনকে ছাত্ররাজনীতির এই করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করুন। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে সুশিক্ষার কোন বিকল্প নেই। তাই সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করুন।