মুহা. ইকবাল আজাদ
করোনা সংক্রমিত হওয়ায় মায়ের মৃত্যুতেও ঢাকা থেকে গ্রামে আসা হয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর৷ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৩-১৪ সেশনের ছাত্র। নাম সিদ্দিকী মহসীন পাটওয়ারী। বর্তমানে ‘হিউমান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্বে অধ্যয়ন করছেন। পাশাপাশি তিনি কবি জসীমউদ্দিন হলের বাসিন্দা।
করোনা কালে বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ত্রাণ বিতরণে কাজ করছিলেন মহসীন। রমজানের শেষ দিকে এসে তিনি কয়েকদিন করোনা উপসর্গে ভুগছিলেন। লক্ষণ দৃশ্যমান হওয়ায় ঢাকাতে নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন। গত ৩ তারিখ (সোমবার) পজিটিভ রিপোর্ট আসে, অর্থাৎ তিনি করোনায় আক্রান্ত। তারপর থেকে ঢাকায় আইসোলেশন ইউনিটে অবস্থান করছেন। ঈদেও আসেননি বাড়িতে। করোনা শনাক্ত হওয়ায় এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে আসা হয়নি মায়ের শেষ বিদায়েও।
গত কয়েক মাস যাবত হৃদরোগে ভুগছিলেন মহসীনের মা। ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ঔষধ সেবন করছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ করে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাকি সন্তানদের প্রচেষ্টায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই ইহলোক ত্যাগ করেন তিনি। আজ ভোর ৬টা ১৫তে তাঁর জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিষাদময় করোনার হিংস্র থাবায় মায়ের মৃত্যুতে উপস্থিত হতে পারেননি ছোট ছেলে মহসীন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা তার কথাগুলো যেন পাঠকদের অন্তর ছিঁড়ে খায়। ভার্চ্যুয়াল সামাজিক পরিবেশকে আরও কাঁদিয়ে তুলে।
প্রসঙ্গত, সিদ্দিকী মহসীন পাটওয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত চাঁদপুর জেলা শিক্ষার্থী সংগঠন ‘ডাকাতিয়া‘ এর প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি ছাত্র কল্যান সমিতি ‘অঙ্গীকার‘ এর আহবায়ক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মানবিক বন্ধুসভা’ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘ইউসিসি’ কোচিং সেন্টারে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।