————–
খাদ্যে ভেজালের দৌরাত্মের কথা আমাদের কারোই অজানা নয়।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো!ভেজালের মধ্যে প্রতিনিয়তই নিত্য নতুন আইটেম যুক্ত হচ্ছে,যা আমাদের দিন দিন কঠিন থেকে কঠিনতর রোগ উপহার দিচ্ছে।
সিটি কর্পোরেশনের এক সূত্র থেকে জানা যায়,রাজধানীতে বিক্রিত খাদ্যের শতকরা ৭০ ভাগ ভেজাল যুক্ত।Institute of Health এর সূত্র মতে,এদেশের ৫০ শতাংশ খাদ্য দ্রব্যেই ভেজাল মিশ্রিত করে বিক্রি করা হয়।
পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলনের এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,আমাদের দেশে ভেজাল খাদ্য গ্রহনের ফলে প্রতি বছর ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে,২ লাখ লোক কিডনি রোগে,১.৫ লাখ লোক ডায়াবেটিসে মারা যায়।এছাড়া ও লিভার,ফুসফুস,হোপাটাইটিস,অ্যার্লাজি,অ্যাজমা,অরুচি,উচ্চরক্তচাপ সহ বিভিন্ন প্রকার জটিল রোগে আক্রান্ত হয়।
খাদ্য ভেজালের মূল কারণ হচ্ছে আমাদের অসচেতনতা।আমাদের অসচেতনতার কারণেই লোভী ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় প্রতিনিয়তই খাদ্যের নামে বিষ প্রদান করছে।
সকল প্রকার খাদ্যেই মিশানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাসয়নিক দ্রব্যসামগ্রী।আটায় মিশানো হচ্ছে চক পাউডার।মিষ্টি জাতীয় খাবারে মিশানো হচ্ছে রং,সোডা,স্যাকারিন।হলুদ ও মরিচের গুড়ায় মিশানো হয় বিভিন্ন রং,ইট ও কাঠের গুড়া।দূষিত পানি দ্বারা তৈরি হয় কেক ও বিস্কুট।দুধে মিশানো হয় অ্যান্টিবায়েটিক,অনুজীব,কীটনাশক ও সিসা। মাছ ও ফল পচন রোধে ব্যবহার করা হয় ফরমালিন।শাক-সবজীতে দেওয়া হয় বিষাক্ত স্প্রে।ফল পাকাতে প্রদান করা হয় কার্বাইড ও ইথোফেন।
খবরের কাগজ খুললেই দেখা যায় বিষাক্ত ফল ও বিষক্রিয়ার ওষুধ এবং ভেজাল খাদ্য ভক্ষনের ফলে প্রানহানি ঘটেছে সর্বাধিক শিশুর।
খাদ্যে ভেজালের ফলে হঠকারী ব্যবসায়ীরা “আঙুল ফুলে কলা গাছ”হয়ে যায়।অপরদিকে দরিদ্র শ্রেনীর মানুষদের ভেজাল খাদ্য গ্রহনের ফলে শরীরে বিভিন্ন প্রকার কঠিন রোগের সৃষ্টি হয়।কিন্তু তারা আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে মানসম্পন্ন চিকিৎসা প্রদান করতে পারেনা ফলে অচিরেই তাদের জীবনের সমাপ্তি ঘটে।তাই আমাদের রুক্ষে দাড়ানো উচিত এবং সকল শ্রেনীর মানুষের মাঝে সচেতনতাবোধ সৃষ্টি করা উচিত।
তানজিলা জামান
শিক্ষার্থী, বিএম কলেজ বরিশাল।