ঢাবি প্রতিবেদক: ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস। “তরুণরাই এই পেশার ভবিষ্যৎ”- এ মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের একশতটি দেশের মতো বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এবারও এ দিবসটি পালন করছে। সরকারিভাবে এই দিবসটি পালন ও শিক্ষকদের পেশাগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) বিএনপি সমর্থিত সাদা দল সমর্থক শিক্ষকবৃন্দ। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক দিবসে বাংলাদেশের সকল শিক্ষককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বল হয়,‘শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদন্ড। আর জাতির এ মেরুদন্ড তৈরির মূল কারিগর হলেন শিক্ষক সমাজ। জাতি-দেশ-সমাজ সঠিক দিক-নির্দেশনা পেতে পারে শিক্ষকের দ্বারা। তাই যুগে যুগে জ্ঞানী-গুণীজন শিক্ষকদের সম্মানের কথা বলে গেছেন। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল শিক্ষাদানে ব্রতী শিক্ষকদের অবিভাবকদের থেকেও অধিক সম্মানীয় মনে করতেন। পিতামাতা সন্তানদের জন্ম দেন। আর শিক্ষকরা সেই সন্তানদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। পাঠদান, গবেষণা ছাড়াও সকল স্তরের শিক্ষকরা বিভিন্ন জাতীয় ও সামজিক দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। কাজেই প্রতিটি সভ্য সমাজে শিক্ষকদের বিশেষ সম্মান প্রদান করা হয়। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে শিক্ষক সমাজ সবচেয়ে অবহেলিত ও উপেক্ষিত। অন্যান্য পেশার তুলনায় শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অনেক কম। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এমনকি শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মতো কাজেও শিক্ষকদের অংশগ্রহণ ও মতামত প্রদানের সুযোগ দেয়া হয় না। এ কথা প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে সমানভাবে সত্য। শুধু বেতন বৈষম্য বা আর্থিক সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে নয়, আজ শিক্ষক সমাজ নানাভাবে হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন খর্ব করে শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এর সাম্প্রতিক নজির হচ্ছে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রবর্তনের চেষ্টা।’
‘রাষ্ট্র ও সমাজে শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ ও তাদের সম্মান জানানোর জন্য বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে সরকারিভাবে নানা দিবস পালন করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, এখন পর্যন্ত এদেশে বিশ্ব শিক্ষক দিবস সরকারিভাবে পালন করা হয় না। এটি আমাদের একটি মৌলিক অধিকার পূরণে সরাসরি ভূমিকা পালনকারী শিক্ষকদের অসম্মান এবং রাষ্ট্রীয় উপেক্ষারই নামান্তর বলে আমরা মনে করি। এ অবস্থায় শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে একটি আলোকিত দেশ ও সমাজ বিনির্মাণের জন্য শিক্ষকের জীবন মানের উন্নয়নে তাদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ সরকারিভাবে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপনের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান জানানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।’