ঢাকাবুধবার , ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  1. সর্বশেষ

মিরসরাইয়ে গৃহবধূ সুমি হত্যা মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

মিরসরাই প্রতিনিধি:

মিরসরাইয়ের আলোচিত নাহিদা আক্তার সুমি হত্যাকান্ড নিয়ে মূল ঘটনাকে আড়াল করে পুলিশের বিরুদ্ধে তড়িগড়ি করে মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় হতাশ সুমির পরিবার। মেয়ে হারানোর শোকে মা পারভীন আক্তার পপি পাগলপ্রায়, মেয়ের শোকে প্রবাস থেকে ছুটে এসেছেন বাবা নুরুল আফসার। সুমির লাশ দাফনের পর পরিবার জানতে পারে এঘটনায় জোরারগঞ্জ থানায় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে। যেখানে ঘটনার সাথে মামলার বিবরণের কোন মিল নেই। প্রকৃত ঘটনাকে ভীন্নখাতে প্রবাহিত করে জড়িত অন্য আসামীদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারী উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া গ্রামের সুনুু মিয়া সওদাগর বাড়ীর প্রবাসী নুরুল আফসারের কন্যা নাহিদা আক্তার সুমিকে হত্যা করে স্বামী মীর হোসেন প্রকাশ ফারুকসহ তার পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় জোরারগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলায় (নং-৪) হত্যাকান্ডে জড়িত ৭ জনের বিরুদ্ধে সুমির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ আনা হলেও থানা পুলিশ তাদের মনগড়া এজাহার লিখে তাতে শুধুমাত্র স্বামী মীর হোসেন ফারুককে আসামী করে।

এসময় থানা পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বাকি ৬ জনকে বাদ দিয়ে সুমির ময়না তদন্তের কথা বলে মামলায় সুমির মা পারভীন আক্তার পপিকে বাদী করে স্বাক্ষর নিয়ে নেন। এই ঘটনায় পুলিশের প্রতি ক্ষুদ্ধ সুমির পরিবার। সুমির পরিবারের দাবী এজাহারে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তার শশুর আক্তার মিয়া, জেঠা শশুর সামছুদ্দিন মেম্বার, শাশুড়ী নুর খাতুন, গাড়ী চালক মুক্তার হোসেন, বাসার মালিক নিজাম উদ্দিন ও তার স্ত্রী কাজল জড়িত থাকলেও তাদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র স্বামী মীর হোসেন ফারুককে আসামী করে এবং সুমির বিরুদ্ধে গাড়ী চালক মুক্তার হোসেনের সাথে পরকিয়ার অভিযোগ এনে পুলিশ একটি এজাহার লিখে তাতে পারভীন আক্তারের স্বাক্ষর নিয়ে মামলা দায়ের করেন।

এতে দীর্ঘদিন ধরে স্বামী মীর হোসেন ফারুকের হাতে সুমি নির্যাতনের ঘটনাকে আড়াল করে হত্যাকান্ডাকে ধামাচাপা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) মিরসরাই প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নাহিদা আক্তার সুমির মা পারভীন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের চিনকীরহাট এলাকার আক্তার মিয়ার ছেলে মীর হোসেন প্রকাশ ফারুক কোম্পানীর সাথে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে ৫ পদের ফার্নিচার দিই। বিয়ের পর কিছু দিন তাদের সংসার সুখে কাটলেও বিগত চার বছর যাবৎ আরো যৌতুকের দাবীতে স্বামী মীর হোসেন ফারুক ও তার বাবা মা আমার মেয়েকে শারিরীক অত্যাচার নির্যাতন করতো।

মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় তার স্বামীকে আমি প্রায় ৬ লাখ টাকা দিয়েছি। টাকা দেওয়ার পর কিছুদিন ভালো থাকলেও পরে আবার তারা নির্যাতন করতো। নির্যাতনের জন্য একাধিকবার গ্রাম্য শালিষও হয়। ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল জোরারগঞ্জ থানায় আমার মেয়ে বাদী হয়ে স্বামী মীর হোসেন ফারুক, শশুর মোঃ আক্তার মিয়া, শাশুড়ি নুর খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে থানায় বৈঠক হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভবিষ্যতে আর নির্যাতন করবেন না এ মর্মে পুলিশ বিবাদীদের থেকে মুছলেখা নিয়ে সুখের সংসার করবে মর্মে আমার মেয়েকে নিয়ে যায়। কিন্তু কিছুতেই ফারুকে নির্যাতনের মাত্রা কমেনি। বরং দিনদিন তার নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়তে থাকে।

সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারী পুনরায় ১ লাখ টাকা আনার জন্য আমার মেয়েকে মারধর করে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়। এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৪টায় সুমিকে আর মারধর করবেনা এবং টাকা দাবী করবেনা বলে আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে।

পরেরদিন ৯ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ১১টার সময় স্বামী মীর হোসেন ফারুক আমাকে ফোন দিয়ে বলে; তোমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে তার লাশ নিয়ে যাও। এটি শোনার পর আমি দ্রুত সময়ে তাদের ভাড়া বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে দেখি সুমিকে মেরে বাসার সামনে ফারুকের প্রাইভেট কারের পেছনের সীটে সুমির লাশকে সোজা করে বসিয়ে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে গ্রামবাসীর সহায়তা তার লাশ আমরা বাড়ীতে নিয়ে যাই। খবর পেয়ে দুপুর ২টায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ময়নাতদনেন্তর জন্য লাশ নিয়ে যায়। একই দিন রাত ৮টার সময় লাশের ময়নাতদন্ত ও জিডি করার কথা বলে ওসি (তদন্ত) মোঃ মাকসুদ আলম আমার থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। মেয়ের শোকে ওই সময় আমার কোন স্বজ্ঞান ছিলো না।

পরবর্তীতে পত্রিকায় জানতে পারি আমার মেয়েকে খুনের ঘটনায় আমাকে বাদী করে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সন্তানহারা সুমির মা পারভীন আক্তার অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রশাসনের কাছে মেয়ে হত্যার উপযুক্ত বিচার চেয়ে প্রকৃত ঘটনা উল্লেখ করে পুনারায় মামলা নিয়ে আসামীদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। যেনো যৌতুকের জন্য নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আর কোন মায়ের বুক খালি না হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নাদিয়া আক্তার সুমির বাবা মোঃ নুরুল আফসার, ফুফা মোঃ মুসা মিয়া, খালা আছমা পারভীন আক্তার, খালু আবুল হাশেম মেম্বার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ রায়হান উদ্দিন বলেন, মামলার এজাহারের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে শুধু মামলাটি তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছি। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ফেলে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে।

জোরারগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মাকসুদ আলম বলেন, মামলার বাদীকে সহায়তা করার জন্য থানায় এজাহার লেখা হয়েছিলো। তাতে বাদীর বক্তব্যের বাইরে কোন কিছু লেখা হয় নাই। তাছাড়া এজাহারটি অফিসার ইনচার্জ পর্যালোচনা করে মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বাদীর দেওয়া এজাহারের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। এজাহারে পুলিশের নিজস্ব বক্তব্য সংযোজনের কোন সুযোগ নেই। পুলিশের তদন্ত শেষে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন হবে।

আরও পড়ুন

মাদারীপুর বাবু চৌধুরী ক্লিনিকের ওয়াশরুমে নবজাতক মেয়ে শিশুর জন্ম দিয়ে পালিয়ে গেলেন অজ্ঞাত মা

হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখার পর কি বললেন জামায়াত আমীর?

বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কাপাসিয়া প্রেসক্লাবে বিশেষ দোয়া মাহফিল

কাপাসিয়ায় গাছ কেটে অবৈধভাবে কয়লা তৈরি করার দু’টি চুল্লী ধ্বংস করেছে উপজেলা প্রশাসন

রাউজানের ডাবুয়ায় খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্যে খতমে কুরআন ও দো’য়া মাহ’ফিল

বাঁচতে চায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কুবি শিক্ষার্থী অনন্যা

২০২৪-২৫ সেশনের ক্লাস শুরু এবং ৫ দফা দাবি ইডেন শিক্ষার্থীদের

কুবি’র বিজয়-২৪ হলে কালচারাল এন্ড স্পোর্টস উইকের উদ্বোধন

চকরিয়ায় স্বামীর নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

দোয়ারাবাজারে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি

বেগম জিয়া দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের প্রজ্ঞাপন

বেগম জিয়া দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের প্রজ্ঞাপন

১১ পেজ ও আইডির বিরুদ্ধে ডিবি কার্যালয়ে মামলা করলেন সাদিক কায়েম