আব্দুল্লাহ আল নাঈম,(চবি)
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পরিবেশবান্ধব যাতায়াতকে উৎসাহিত করতে আজ ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইসাইকেল র্যালির আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিস্ট সংগঠন এবং সহযোগী হিসেবে ছিলো ব্ল্যাড এইডার্স চবি।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে সচেতনতামূলক এ সমাবেশ হয়। এরপর একদল সাইক্লিস্টদের নিয়ে র্যালি বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবন, জীববিজ্ঞান অনুষদ হয়ে দক্ষিণ ক্যাম্পাস, জিরো পয়েন্ট থেকে এএফ রহমান হলসহ সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ ভবন পেরিয়ে ফরহাদ হল ঘুরে আবারও বুদ্ধিজীবী চত্বরে এসে র্যালিটি শেষ হয়।
সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) শামীম হোসেন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাখন চন্দ্র রায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. কে এম আতাউল গনি (পারভেজ)। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ক্রীড়া সম্পাদক মো. শাওন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আফনান হাসান ইমরান, প্রীতিলতা হল সংসদের ভিপি নুসরাত জাহান, সোহরাওয়ার্দী হল সংসদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান মারুফ, শাহজালাল হল সংসদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. রিয়াদসহ অন্যান্যরা। এ সময় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার ইতিবাচক পরিবর্তনে সাইক্লিংয়ের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন অতিথিরা।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সংগঠনটির উপদেষ্টা ড. মাখন চন্দ্র রায় বলেন, ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক রোগ। এটি নীরবেই মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। তাই মানসিক ও শারীরিকভাবে ফিট থাকার জন্য আমাদের গতিশীল থাকতে হবে। লাইফ স্টাইলে পরিবর্তন আনতে হবে, তাহলেই শরীর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে পারব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিজে সুস্থ থাকার জন্য যন্ত্রচালিত যান পরিহার করে বেশি বেশি হাঁটাহাঁটি ও সাইক্লিংয়ে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিস্টস সবসময় একটি সুস্থ, সচেতন ও পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জিরো কার্বন এমিশন ও কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাসে আমরা নিয়মিত কর্মসূচি নিয়ে থাকি।
এ সময় ডা. কে এম আতাউল গনি (পারভেজ) বলেন, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা বা সাইকেল চালানো ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, এই ডায়াবেটিসসহ সব রোগের নিরাময়ে সাইক্লিং ইজ দ্য বেস্ট এক্সারসাইজ। তিনি আরো যোগ করেন, ডায়াবেটিস হওয়ার জন্য এখন আর কোনো বয়স লাগে না, যে-কোনো বয়সি মানুষের যে-কোনো সময় এই রোগ হতে হবে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) শামিম হোসাইন বলেন, শিক্ষার জন্য স্বাস্থ্যের যে প্রয়োজনীয়তা, এটা অনস্বীকার্য। কেননা আমি যদি শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকি তাহলে পড়াশোনায় মনোযোগ আসবে না। তিনি আরো বলেন, চীনসহ বিশ্বের আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরকে দেখেছি তারা সাইকেল চালিয়ে ক্লাসে আসেন। আমরা যদি এ বিষয়টাকে (সাইক্লিং) জনপ্রিয় করতে পারি, তাহলে আমাদের দেশের সুস্থ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিবর্তনটাও লক্ষ্য করতে পারব।
তিনি আরো বলেন, কোম্পানির সাথে কথা হয়েছে, আগামী জানুয়ারি থেকেই ক্যাম্পাসে ‘জোবাইক’ চালু হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াত নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থীদের শুধু রিকশা বা ই-কারের ওপর নির্ভর না থেকে নিয়মিত হাঁটা ও সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।
এছাড়া বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিস্ট-এর সভাপতি মো. মশিউর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিস্ট সব সময় শিক্ষার্থীদের সাইকেল চালানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করে। পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা নানা র্যালি ও সচেতনতামূলক প্রোগ্রামের আয়োজন করে থাকি। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সালেহ যায়েদ বলেন, সাইক্লিংয়ের মাধ্যমে আমরা একটি হেলদি লাইফস্টাইল গড়ে তুলতে চাই এবং ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি।