মাইটিভির সিও তৌহিদ আফ্রিদির বাবা কথিত মাইটিভির মালিক নাসির উদ্দিন সাথী হত্যা মামালায় কারাগারে। টেলিভিশনটির মালিক হিসেবে এই ব্যক্তিকে সবাই চিনলেও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনটির মালিক কিন্তু, তিনি নন। ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করা মাইটিভি ছিল মূলত বিলকিস জাহান নামের এক উদ্যোমী নারীর স্বপ্ন।
চ্যানেলের নিবন্ধন, কাগজপত্র, লাইসেন্স সব কিছুতেই তার ছিল সরাসরি সম্পৃক্ততা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নে রূপ নেয়। নাটক সিনেমার ভিডিও ঘুড়ে ঘুড়ে বিভিন্ন টেলিভিশনে বিক্রি করতেন ভিডিও এডিটর সাথী। সেই সুবিদে তার নিয়মিত পদচারণা ছিলো মাইটিভিতে। আর এক সময় বিলকিস জাহানকে বোন বলে ডাকা শুরু করেন এই প্রতারক।
কিন্তু, বিধিবাম বিলকিস জাহান স্বামীর অসুস্থতার কারণে কিছু দিনের জন্য আমেরিকা চলে গেলে। সেই সুযোগে অন্য নারীকে বিলকিস জাহান সাজিয়ে জ¦াল দলিলের মাধ্যমে নাসির উদ্দিন সাথী দখল করে নেন টেলিভিশনটি। এরপর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে মূল কর্ণধারকে আর টেলিভিশনের চৌকাঠও পেরোতে দেননি তিনি।
বিলকিস জাহান অনেকবারই অভিযোগ করেছেন, চ্যানেল চালু হওয়ার পরপরই নাসির উদ্দিন সাথী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কৌশলে দখল নেন মাইটিভির নিয়ন্ত্রণ। ভুয়া কাগজপত্র, রাজনৈতিক প্রভাব এবং প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তিনি হয়ে ওঠেন চ্যানেলের অঘোষিত কর্তা। এর সাপেক্ষে তিনি সকল প্রমাণও হাজির করেন গণমাধ্যমের সামনে।
তার এসব অভিযোগের পর এক সময় টেলিভিশনটির প্রচারিত বিশেষ অনুষ্ঠানে দেখা যেতো সাথীর স্ত্রী ও পুত্র ইউটিউবার আফ্রিদির লোক দেখানো সব মায়াকান্না আর নাটক। টেলিভিশনটির জন্য আফ্রিদিকে বিক্রি করে দেওয়ার মত জঘন্যতম মিথ্যাচার করতেও ছাড়েননি সাথীর স্ত্রী। আর পুত্র আফ্রিদিতো প্রতারক বাবার চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে বড় মাপের বাটপার। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পক্ষে গলা ফাটিয়ে হাসিনার গণহত্যাকে সমর্থন জানিয়ে বর্তমানে হত্যা মামলার আসামী তিনি।
এখানে শুধু একটি ব্যক্তি বা একটি প্রতিষ্ঠানের গল্প নয় এটি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নারীর অধিকার, এবং আইনের শাসন নিয়ে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন। নাসির উদ্দিন সাথী যেভাবে মাইটিভি দখল করে নেন সেই গল্প আজ দেশের মানুষের সামনে উন্মোচিত। এখন অপেক্ষা, আইন কী বলে এবং সত্য কীভাবে প্রকাশ পায়।