রফিকুল ইসলাম জসিম :
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিলকপুর গ্রামের মণিপুরি মুসলিম (পাঙাল) সম্প্রদায়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মাহফুজা আক্তার জেরিন এবার এসএসসি পরীক্ষায় গৌরবজনক সাফল্য অর্জন করেছে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়ে সে জিপিএ-৫ পেয়ে পরিবারের পাশাপাশি গোটা এলাকার মুখ উজ্জ্বল করেছে।
তেতই গাঁও রসিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজা আক্তার জেরিন প্রাথমিক শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই অসাধারণ মেধা ও অধ্যবসায়ের পরিচয় দিয়ে এসেছে। সে নিয়মিত ভালো ফলাফলের পাশাপাশি পাঠ্য-বহির্ভূত কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ছিল। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি অর্জন ছিল তার শিক্ষাজীবনের প্রথম বড় অর্জন, যা তাকে ভবিষ্যতের জন্য আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
মাহফুজার মা রোকসানা বেগম মেয়ের সাফল্যে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, “আমার মেয়ে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এই সাফল্যে আমি অত্যন্ত খুশি ও আনন্দিত। তার এই কৃতিত্বে স্কুলের শিক্ষকদের অবদানকেও আন্তরিকভাবে সম্মান জানাই। আমি চাই, আমার মেয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করুক। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।”
নিজের অনুভূতিতে মাহফুজা বলেন,“আমার এই সাফল্যের পেছনে বাবা-মা, পরিবার ও শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। আল্লাহর রহমত, সবার দোয়া এবং নিজের পরিশ্রমে এই ফলাফল অর্জন করেছি। আমি ভবিষ্যতে একজন চিকিৎসক হতে চাই, যেন মানুষের সেবা করতে পারি।”
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. কামাল উদ্দিন বলেন,“মাহফুজা আক্তার জেরিন আমাদের বিদ্যালয়ের একজন অত্যন্ত মেধাবী, পরিশ্রমী ও অনুগত ছাত্রী। সে সবসময় শ্রেণিকক্ষে মনোযোগী থাকত এবং পাঠদানে গভীর আগ্রহ দেখাত। তার এই অসাধারণ সাফল্যে আমরা গর্বিত। এই অর্জন শুধুমাত্র তার পরিবারের নয়, বরং আমাদের বিদ্যালয় এবং পুরো এলাকার জন্যও গর্বের বিষয়।”
অদম্য মেধা, অধ্যবসায় এবং পারিবারিক অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত মাহফুজা আক্তার জেরিন। ছোটবেলা থেকেই তার প্রতিটি সাফল্যের পেছনে ছিল একাগ্রতা, কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের নিখুঁত সমন্বয়। পড়াশোনার প্রতি তার ভালোবাসা ও নিরলস প্রচেষ্টা আজ তাকে এসএসসি পরীক্ষায় গৌরবজনক ফলাফল অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়েছে। বিশেষ করে তার মা-বাবার ত্যাগ ও সাহসিকতা, শিক্ষকদের নিরলস সহযোগিতা এবং নিজের আত্মপ্রত্যয়—সবকিছু মিলিয়েই মাহফুজার এই পথচলা এত সফল ও অনন্য হয়ে উঠেছে। তার এই অগ্রযাত্রা যেন আগামী দিনে আরও বড় সাফল্যের দুয়ার খুলে দেয়—এমনটাই প্রত্যাশা পরিবারের, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এবং সমাজের সকল সচেতন মানুষের।