রুবেল হোসাইন,উজিরপুর প্রতিনিধি।
উজিরপুরে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার সাতলা শিবপুর এলাকায় শ্বশুর বাড়ির পাশের আম থেকে গৃহবধু রিমা আক্তারের ঝুলন্ত মরদেহ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই গৃহবধূ আগৈলঝাড়া উপজেলার জয়রামপট্রি গ্রামের মো. বাবুল মিয়ার কন্যা ও সাতলা শিবপুর গ্রামের মান্নান বেপারীর ছেলে মো. মিজান বেপারীর (৩০) স্ত্রী। স্থানীয় লোকজন, নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানান, বিয়ের সময় রিমার বাবা স্বামী মিজানকে আসবাবপত্র, স্বর্নালংকার ও বিভিন্ন মালামালসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার যৌতুক দেন। বিয়ের এক বছর না যেতেই স্বামী মিজান রিমাকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে নগত টাকা আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে গত ২/৩ বছর যাবত স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াবিবাদ চলে আসছিল। গত জুন মাসে রিমাকে বাবার বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক আনতে বলে স্বামী মিজান। এতে রিমা অপরাগতা প্রকাশ করলে স্বামী মিজান বেপারী তাকে মারধর শুরু করে।
রিমার বড় ভাই মো. বুলবুল মিয়া জানান, গত বৃহস্পতিবার ছোট বোন রিমা তাকে ফোন দিয়ে বেদম নির্যাতনের কথা জানিয়েছে। ৩ দিনের মধ্যে ৩ লাখ টাকা যৌতুক না দিলে তাকে মেরে ফেলবে স্বামী মিজানের হুমকির বিষয়টিও অবহিত করে রিমা বলেন বুলবুল।
অভিযোগের ব্যপারে জানতে চাইলে স্বামী মিজান বেপারী যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, পারিবাররিক কলহের কারনে স্ত্রী রিমা অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে।
স্থানীয় রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিন আকন জানিয়েছেন ,তিনি একাধিকবার সালিশ বৈঠক করে মিজানের হাতে গৃহবধু রিমাকে তুলে দেয়া হয়েছে।
রিমার চাচা গোলাম মাওলা অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি ১ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য আবার রিমার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। এ নিয়ে সালিশ বৈঠকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিজানুরকে সাবধান করেন। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার দিনগত গভীর রাতে রিমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, মিজানুর ও তার পরিবারের সদস্যরা রিমাকে গলা টিপে হত্যা করেছে। হত্যার পর ভোরে লাশ বাড়ির পাশের একটি আম গাছে ঝুলিয়ে রাখে। তারা হত্যার দায় থেকে বাঁচতে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করছে। এদিকে এ ঘটনায় রিমার ভাই মাইনুল বাদী হয়ে উজিরপুর থানায় হত্য মামলা করেছেন।
উজিরপুর থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, গৃহবধূ রিমা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এটি হত্যা না আত্মহত্যা নিশ্চিত হওয়া যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।