নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সরকারি জায়গার মালিকানা নিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ওইসময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনজীবীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক কেমএম নাছির উদ্দিন ও উপজেলা পরিষদের নিরাপত্তা প্রহরীসহ দুইজন। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চকরিয়া সিনিয়র সহকারি জজ আদালত সংলগ্নে এঘটনা ঘটে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া আদালত ভবনের নামে আলাদা কোন জমি নেই। উপজেলা পরিষদের নামে ১৯৬৫ সালে অধিগ্রহণ করা ১২একর জমি রয়েছে। ওইসব জমির মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভবন রয়েছে। আদালত ভবনের জমিও উপজেলা পরিষদের নামে অধিগ্রহণকৃত জমি। বিএস জরিপের সময় বিআরডিবি’র নামে ৮২শতক জমি রেকর্ড হয়। সম্প্রতি মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য বেশকিছু জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছে। পরিষদের সামনে রাস্তার পাশে ৭ থেকে ৮ শতক জমি রয়েছে। বর্তমানে ওই জায়গাতে টিনের ঘেরাবেড়া রয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একদল আইনজীবী আদালতের জায়গা দাবী করে সেখানে ব্যানার টাঙ্গিয়ে দেন। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ব্যানার টাঙ্গানো অবস্থায় আইনজীবীরা অবস্থান করেন। পরে চকরিয়া উপজেলা সহকারি জজ আদালত ও উপজেলা জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের দুই বিচারকও উপস্থিত হন। ওইসময় উভয়পক্ষের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের অনুরোধ করি। আইনজীবীরা আদালতের নিজস্ব জায়গা বলে দাবী করেন। একপর্যায়ে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে আমার দিকে তেড়ে আসেন। তারা আমাকে হেনাস্তা করার চেষ্ঠা করেন। ওইসময় আইনজীবীরা উপজেলা পরিষদের নিরাপত্তা প্রহরী রাইসুল ইসলামকে মারধরে করেন। তাৎক্ষনিক আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। পরে সরকারি অফিসে অবস্থান করার জানান তিনি। ঘটনার সময় সাংবাদিক কেএম নাছির উদ্দিন ছবি তোলার চেষ্ঠা করলে মারধরে শিকার হন। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার পরপরই চকরিয়া আদালতের আইনজীবীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শাস্তি দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে মিছিলটি উপজেলা পরিষদের সামনে প্রদক্ষিণ করে আদালতের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
অপরদিকে চকরিয়া সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের সেরেস্তাদার পরেশ কান্তি দে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, কতিপয় ব্যক্তি আদালত সংলগ্ন আদালতের জমি দখল করতে ইট বালি জড়ো করে আদালত ঘেঁষে খুঁটি পোতা শুরু করলে আদালতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারী ও আইনজীবী সমিতির সদস্যগণ আদালতের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের কাজে বাঁধা প্রদান করেন। পরবর্তীতে অরক্ষিত জায়গা সুরক্ষিত করার জন্য আদালত ও আইনজীবী সমিতির সদস্যগণ টিনের বেড়া দিয়ে আদালতের জমি বেদখল হতে রক্ষা করেন।
এব্যাপারে চকরিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জায়গাটি চকরিয়া আদালতের। সেখানে ভবন নির্মাণ করা হবে। ওই জায়গা উপজেলা পরিষদের দাবী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজে ইট, বালি ও অন্যান্য মালামাল জড়ো করেছেন। আইনজীবীরা আদালতের ভবন ছাড়া অন্যকিছু হতে দেবে না বলে জানান তিনি। ##